শিরোনাম
◈ উগ্রপন্থা, সীমান্ত অচলাবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা—বাংলাদেশসহ পাঁচ প্রতিবেশীকে ‘হুমকি’ মনে করছে ভারত ◈ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ ◈ আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান  ◈ অবশেষে কমল সোনার দাম ◈ মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে চার সংগঠনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ঘোষণা করল যুক্তরাষ্ট্র! ◈ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের চিঠি ◈ ডাকসুতে ভোট কারচুপির অভিযোগে সিসিটিভি যাচাই, উঠে এলো যে তথ্য ◈ সিলেট ইবনে সিনা হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর ◈ আমি যে কাজ করেছি তা দেশের ইতিহাসে কোনোদিন হয়নি : আসিফ নজরুল ◈ চট্টগ্রামে মার্কিন বিমান ও সেনা উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা, আসলে কী ঘটছে

প্রকাশিত : ২৪ জুন, ২০১৮, ০৩:০৬ রাত
আপডেট : ২৪ জুন, ২০১৮, ০৩:০৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিবেক বিক্রেতাদের কাছে জাতি অসহায়

অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার: যখন পৃথিবীতে সভ্যতা প্রকাশ পায়নি, প্রকাশিত হয়নি মানুষের জন্মগত অধিকার, প্রতিষ্ঠিত হয়নি মানবিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার তখন শাসকের বিরাগভাজন হওয়ার অর্থই ছিল নির্জন কারাবাস বা দীপান্তর বা ফাঁসি বা শিরোচ্ছেদ। ‘আইন’ যাই হোক না কেন, শাসক বা শাসক যন্ত্রের চক্ষুশুল হলেই ‘আইন’ প্রয়োগ হতো উল্টোপথে এবং এখনো যা হচ্ছে। ঐতিহাসিকদের মতে, সে যুগ ছিল বর্বরতার। অর্থাৎ রাজা যা মনে করতেন তাই আদেশ এবং আইন।

এমনও দেখা গেছে যে, কোনো সাধারণ মানুষ বা উজির-নাজির যেই হোক, যে অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড হতো, কিন্তু রাজপরিবারের সদস্যের একই অপরাধের জন্য কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। এভাবেই একটি জনগোষ্ঠী ইতিহাসের পাতায় বøু-বøাড নামে পরিচিতি লাভ করে। এখন রাজপরিবার তারাই যারা ক্ষমতাসীন ও তাদের আশীর্বাদপুষ্টরা। বহু আন্দোলন-সংগ্রামের পর গণমানুষ দাস প্রথা থেকে আনুষ্ঠানিক মুক্তি লাভ করলেও দাসত্বের মুক্তি হয়নি। দাস প্রথাটি বাতিল প্রসঙ্গে নানা বিদ্রোহ ও রক্তক্ষয়ী ইতিহাস রয়েছে। তৎকালীন আন্দোলনের ফলে ১৮৪৩ সালে অ্যাক্ট ফাইভ আইনে দাস দাসী আমদানি রপ্তানি নিষিদ্ধ করলেও মনস্তাত্বিকভাবে দাস প্রথাটি বিলুপ্ত হয়নি বরং রং পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ যখন মানুষকে ক্রয় করে তখন ক্রেতা হয় মালিক, যে মানুষটি বিক্রয় হয় সে হয় কৃতদাস। সালভেরি বা থালডম (ঝধষাবৎু বা ঞযধষষফড়স) মধ্যযুগীয় বর্বরতার সময় দাসপ্রথা হিসাবে অনুমোদিত আইনানুগ সমাজিক প্রথা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সভ্য সমাজেও মানুষ ক্রয়-বিক্রয় হয়, কোথাও সে দেহ বিক্রি করে, কোথাও বুদ্ধি বিক্রি করে, কোথাও শ্রম বিক্রি করে এবং কোথাও বিবেক বিক্রি করে। যে নারী তার দেহ বিক্রি করে, সে অর্থের বিনিময়ে তার দেহকে অন্য পুরুষের নিকট উজার করে দেয়। আর যে বিবেক বিক্রি করে তার দেহে কোনো চিহ্ন থাকে না, কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ হয় মানুষ, দেশ ও জাতি। এখন চলছে প্রমোশন, সুবিধামতো পোস্টিং বা সুখ শান্তি ও অর্থের বিনিময়ে বিবেক বিক্রি করার যুগ। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তাদের বিবেক বিক্রি হওয়ার প্রবণতায় ভিকটিম হচ্ছে দেশের নিরীহ শান্তিপ্রিয় মানুষ।

যারা বিবেক বিক্রি করে তাদের সম্পর্কে সভ্য সমাজ কি ধারণা পোষণ করতে পারে। বুদ্ধি আর বিবেক বিক্রি করা এক জিনিস নয়। যে ব্যক্তি সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতে পারে না সে ব্যক্তিই বিবেক বিক্রেতা। এ বিবেক বিক্রেতাদের কাছে জাতি আজ অসহায়। বিবেক বিক্রেতাদের প্রধান অস্ত্র লোভ বা প্রলোভনের কারণে বিবেককে বির্সজন দিয়ে মিথ্যাকে গ্রহণ। মিথ্যাকে সত্যো পরিণত করাই বিবেকহীনদের প্রধান কাজ। অথচ ভিন্ন পন্থায় অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে নিজেকে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া অথবা ঘুষ খাওয়ার আর্থিক সুবিধা পাওয়ার জন্য সুবিধামতো পোস্টিং ও প্রমোশনের লোভে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এখন মিথ্যাকে সত্যে এবং সত্যকে মিথ্যায় রূপান্তরিত করছে যা উত্তরাধিকার সূত্রে বৃটিশ থেকে এদেশের আমলারা প্রাপ্ত হয়েছে। জেনেশোনে মিথ্যাকে বড় বড় আমলারা সত্যে রূপান্তর করে নিজেরা আত্মতৃপ্তি লাভ করেন, এ জন্য যে তাতে তাদের উপরওয়ালারা খুশি থাকবেন, কিন্তু নিগৃত হচ্ছে জনগণ। সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ মোতাবেক শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব গ্রহণের পরও স্বার্থের জন্য অহরহ বিবেক বিক্রি করে যাচ্ছেন, এ অবস্থা এখন অনেকটাই দৃশ্যমান।
লেখক : কলামিস্ট, রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী
ঃধরসঁৎধষধসশযধহফধশবৎ@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়