সর্তকতায় সমাধান দেখছেন পরিবহণ শ্রমিকরা
রুহুল অামিন : সম্পতি সময়ে ঢাকায় গণপরিবহণ কেন্দ্রীক অস্থিরতা অন্য যেকোন সময়ের রের্কড ছাড়িয়ে গেছে।
চলতি মাসের ৩ তারিখে কারওয়ান বাজারে দুই বাসের প্রতিযোগীতায় হাত হারান কলেজ ছাত্র রাজিব তার মতোই একই রকম ঘটনায় ৫ তারিখে গৃহবধূ অায়েশা খাতুন তিনি চালচলের শক্তি হারান। ১৬ এপ্রিল ট্রাফিক পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন তিনি কাজে ফিরতে পারবেন কিনা সন্দেহ অাছে। ১৭ এপ্রিল ট্রাকের ধাক্কায় পরিবহণশ্রমিক খালিদ হোসেন হৃদয় তিনি এখনও চিকিৎসাধীন । ২০ এপ্রিল বনানীতে পথচারী রোজিনাকে চাপাদেয় বিঅারটিসি বাস তাতে দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার।
যাত্রী পথচারীর বাস চাপাশ ও চাকায় পিসে পা-বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অাবস্থায় মারাগেছে রাজিব ও রোজিনা। চিকিৎসাধীন অাছেন অারও তিন জন এবার যোগ হয়েছেন কার চালক রাসেল সরকার(২৪)। এছাড়াও গণপরিবহণে যৌন হয়রানি বা নিগ্রহ ও গণধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও ছাত্রীর চলতি গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে নিজেকে রক্ষা করার ঘটনা। গণপরিবহণ কেন্দ্রীক অপরাধের ধরণ রাজধানী ঢাকার বাইরেও প্রায় একই রকম।
রাজধানীর বেশকিছু গণপরিবহণ চালক ও শ্রমিক এসব ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছেন তারা বলেন, পরিবহণ চালক ও শ্রমিকরা চান যাত্রী ও পরিবহণ চালক সবাইকে দুর্ঘটনা এড়াতে সর্তক হতে হবে তাহলে এধরণে ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে। যান-মালের ক্ষতিও কমে অাসবে।
মৈত্রী পরিবহণ চালক সুমন (২৩) শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস গাড়ী চালাচ্ছেন গততিন বছর ধরে এর অাগে এজেন্সির গাড়ি চালাতেন। এখন তিনি ঢাকায় গণপরিবহণ চালাচ্ছেন। মালিকের পক্ষ থেকে এমন কোন দির্কনির্দশনা নেই। যে উগ্রভাবে গাড়ি চালাতে হবে বা তারাহুরা করতে হবে। সুমন মনে করেন যাত্রী - পরিবহণ শ্রমিক দুই পক্ষকে সর্তক হওয়া উচিৎ।
মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২) পড়াশুনা চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত করেছেন, গাড়ি চালাতে পারেন কিন্তু গাড়ি চালান না, ইউসুফ মনে করেন বর্তমান সময়ে রাস্তা অস্থিরতা অনেক বেশি কারো কোন নিয়ম নীতি মেনে চলে না। ট্রাফিক নিয়ম সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে যার ফলে কোন নিয়মনীতি মানছে না মানুষ। যে যে ভাবে পারছে সে ভাবে গাড়ি চালিয়ে নিচ্ছে একারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। পা হারানো বা দেহ থেকে হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটছে। যাত্রীদের অারও সর্তক হওয়া উচিৎ। রাস্তায় চলার সময় মোবাইলে কথা বলা অাবস্থা গাড়ি সিগনাল দিয়ে গাড়িতে ওঠা নামা করা জানালা দিয়ে হাত ও মাথা বাইরে রাখে কিছু যাত্রী। যার ফলে হতাহতের ঘটানা ঘটছে। কোন চালক ইচ্ছে করে একটি পিঁপড়াও মারতে চায় না। অাপনি বাইক চালান অার বাস চালান। এছাড়াও রাস্তার মাঝখানে যাত্রী নামার কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে।
ফয়সাল (২৬) চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা দেশের বাড়ী বরিশাল। পরিবহণ অাছেন একযুগ হলো। হেলপারি করে এরপর ভাড়া তুলতেন এখন চালাক হয়েছেন, নিতে এসএসসি পাস দেখিয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, যাত্রীরা পরিবহণ শ্রমিকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন, তারা কোন কথা শুনতে চায় না। অনেক সময় কথা না শুনার ফলে দুর্ঘনার শিকার হচ্ছেন যাত্রী।
অানোয়ার হোসেন ( ৪২) কোন শিক্ষা নাই। তিনি বিশ বছর গাড়ি চালাচ্ছেন প্রথম দিকে লাইসেন্স থাকলেও গতকয়েক বছর লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছেন। ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিয়ে মেনেজ করছে তা না হলে মাঝে মাঝে চালকের সিট পরিবর্তন করে চলছে।
অানোয়ার দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মানুষের অসাবধানতাকে দায় করছেন। তিনি বলেন, সরকার একটা দেশের মানুষকে অাইন মানতে বাধ্য করতে পারেনা , এটা সরকারের ব্যর্থতা । মানুষ ফুটওভারবীজ রেখে চলতি গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পার হতে চায়। রাস্তার মাঝখানে থামতে সিগনাল দেয়। মোটরবাইক গুলো দুই গাড়ি চিপার মধ্যদিয়েও চলতে চায়। এসব সরকারকে দেখতে হবে। অামরা কোন চালকই চাইনা যে কোন মানুষ গাড়ি চাপাপড়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে মৃত্যু বরণ করুন তবও দুর্ঘটনা ঘটে যায়। পথচারী যাত্রী চালক সবাইকে সর্তক হতে হবে। সরকারকে অারও কঠোর হতে হবে। মানুষকে অাইন মানতে বাধ্য করতে হবে। মনে করেন অানোয়ার।
গণপরিবহণে গণধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ ও নির্যাতনের মত ঘটনা ঘটছে এবং তা দিন দিন বাড়ছে । এব্যাপারে গণপরিবহণ চালক ও শ্রমিকরা অপরাধীদের কঠিন শাস্তি দাবি করে তারা বলেন, অামাদের মা-বোনরাও গাড়িতে চলাচল করে অামরা চাই না এধরণে ঘটনা অার ঘটুক যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে নজির সৃষ্টি করতে হবে। পরেক্ষণে এমন অপরাধ করতে কেউ যেন সাহস না করে।