খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল: নগরীর একটি মেসে গণধর্ষিত কলেজ ছাত্রীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে শেবাচিম হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস ইউনিট থেকে সার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, শনিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত তিন ধর্ষক বরিশাল মেট্রোপলিটন আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
সূত্রমতে, গণধর্ষনের মূলহোতা ছাত্রদল নেতা রায়হান উল ইসলাম রাব্বি, ২০নং ওয়ার্ডের চিহ্নিত ইয়াবা বিক্রেতা মানিক শেখ ও সাইফুল ইসলাম সজিবকে পৃথকভাবে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আনিছুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদ করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন।
ধর্ষনকারীরা নিজ নিজভাবে ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত আদালতে ম্যাজিষ্ট্রেটের খাস কামরায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরপূর্বে আসামিদের কোতোয়ালী মডেল থানার একদল পুলিশ আদালতে হাজির করে।
অপরদিকে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ শুক্রবার রাতে এ ঘটনার সাথে জড়িত নিজাম উদ্দিন নামের আরও এক ধর্ষণকারীকে আটক করেছে। পুলিশ গণধর্ষণের মামলায় এ পর্যন্ত প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষিতার মা ময়না বেগম শুক্রবার রাতে বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন (যার নং-৭৫)। শনিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত চার ধর্ষককে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে নগরীর কাশিপুর গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওই শিক্ষার্থী বিএম কলেজ এলাকায় তার বয়ফ্রেন্ড ইমতিয়াজের কাছে নোট নিতে আসে। এসময় ওই কলেজ ছাত্রী ও ইমতিয়াজকে বিএম কলেজের সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয় বখাটে রায়হান উল ইসলাম রাব্বী ও মানিক শেখ জিম্মি করে মথুরানাথ পাবলিক স্কুল সড়কের হানিফ সিকদারের মালিকানাধীন সিকদার ভিলা নামের ছাত্রাবাসের সাইফুল ইসলাম সজিবের কক্ষে নিয়ে যায়।
সেখানে বসে বখাটেরা ইমতিয়াজের কাছ থেকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে জোরপূর্বক তাকে (ইমতিয়াজ) ওই ছাত্রাবাস থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক চেতনানাশক খাইয়ে বখাটেরা পালাক্রমে ধর্ষন করে। ইমতিয়াজ কোতোয়ালী মডেল থানায় এসে বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই রুম থেকে অচেতন অবস্থায় ধর্ষিতা ছাত্রীকে উদ্ধার ও সাইফুল ইসলাম সজিবকে আটক করে। সজিব বিএম কলেজের মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ গণধর্ষণের শিকার কলেজ ছাত্রীকে (১৮) অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে। সেখানে গণধর্ষিত কলেজ ছাত্রীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে শেবাচিম হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।