শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:৩০ দুপুর
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:৩০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রতিপক্ষ জামায়াত

শুভ : আসন্ন খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী! গাজীপুরে জামায়াতের নগর আমীর অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এছাড়া ৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। খুলনায় জামায়াত মেয়র প্রার্থী না দিলেও ৫ টি ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। জামায়াত তাদের প্রার্থীদের পক্ষে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যা এখন বিএনপির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জোটের শরিকরাও।

জানা গেছে, গত ৫ এপ্রিল ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল- সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোট একক প্রার্থী মনোনয়ন দিবে এবং তাদের পক্ষে জামায়াতসহ সকল দল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। কিন্তু সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন প্রস্তুতি ও পরিচালনার জন্য গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে জোটের ১৯ টি দলের নেতারা থাকলেও জামায়াতের কোন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও জামায়াতের কেউ আসেননি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার সমন্বয়ে দুটি কমিটি করে ২০-দলীয় জোট। এ কমিটিতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি নেই। জানা গেছে, নিবন্ধন না থাকায় জোটের বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে জামায়াত প্রার্থীরা। গত ১৫ এপ্রিল স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ সানাউল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল।

জোটের শরিকদলের একাধিক নেতা ইত্তেফাককে জানান, জামায়াতের প্রার্থীকে বসিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ থাকলে বিএনপির ভোট ব্যাংকে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি বলেন, জামায়াত প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে দুই সিটিতে এককভাবে প্রার্থী দেওয়া হবে। সেই প্রার্থীর পক্ষে জোটবদ্ধভাবে সকলেই প্রচারণায় অংশ নিবেন। কিন্তু গাজীপুরে প্রার্থী রেখে তারা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।

জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ দাবি করেছেন, দলের স্বার্থে ও দলকে আরো সুসংগঠিত করতে কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ তাকে সমর্থন দিয়েছেন। তিনি জানান, ২০ দলীয় জোট শুধুমাত্র জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে। বিগত দিনে দেশের সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় দলীয় প্রতীক ও পরিচয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু গাজীপুর সিটির মানুষ পরিবর্তন চায়। বিশ দলীয় জোটও পরিবর্তন চায়। তাকে বিশ দলীয় জোটের মেয়র প্রার্থী হিসেবে সমর্থনের জন্য জোটের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আলোচনা করবেন। তিনি প্রত্যাশা করছেন ২০ দলীয় জোট তাকে সমর্থন দেবে। অধ্যক্ষ সানাউল্লাহর দাবি: গত কয়েক বছরে গাজীপুর মহানগর জামায়াত আরো সুসংগঠিত হয়েছে। মহানগরে রোকন বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মী-সমর্থক বেড়েছে। জামায়াতে অভ্যন্তরীণ কোন কোন্দল নেই। জামায়াতের ভোটারও বেড়েছে।

গাজীপুর প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান জানান, গাজীপুরে মেয়র ছাড়াও ৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দিয়েছে জামায়াত। ওয়ার্ডগুলো হলো-২৮, ৩৩, ৩৭, ৪৯, ৫১ এবং ৫৪। এই ওয়ার্ডগুলোতে বিএনপির প্রার্থীও রয়েছে। গাজীপুর জেলা ও মহানগর জামায়াতের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, বর্তমান মেয়র আবদুল মান্নান ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বিভাজন দীর্ঘদিনের। এই দু’জন নেতার আলাদা দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। তাদের ঐক্যবদ্ধ করে এক কাতারে দাঁড় করানো কঠিন ব্যাপার। তার মধ্যে জামায়াত মেয়র প্রার্থী দেওয়ায় বিএনপি নির্বাচনের মাঠে বেকায়দায় পড়েছে।

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক করা হয়েছে। আর ২০ দলীয় জোটের পক্ষে সমন্বয়ক করা হয়েছে জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দারকে। ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানান, জামায়াতের প্রার্থীকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে। জোটের একক প্রার্থীর বিজয়ের জন্য নিশ্চয়ই তিনি ছাড় দিবেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন এ প্রসঙ্গে বলেন, এসব সাময়িক। এনিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। ২০ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে শিগগিরই আলোচনা হবে। অতীতের মতোই গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাবে।

এদিকে আমাদের খুলনা অফিস প্রধান এনামুল হক জানান, খুলনায় জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় তারা মেয়র প্রার্থী দেয়নি। তবে ৫টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জামায়াত প্রার্থী দিয়েছে। এগুলো হলো-খুলনা ৩১ নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন হেলাল, ১৯ নং ওয়ার্ডে এডভোকেট মনিরুল ইসলাম পান্না, ১২ নং ওয়ার্ডে মাস্টার শফিকুল আলম, ৩ নং ওয়ার্ডে ডা. গোলাম কিবরিয়া ও ১ নং ওয়ার্ডে আজিজুর রহমান স্বপন। এই ৫টি ওয়ার্ডে জামায়াত প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।

খুলনা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ জানান, জামায়াত যেসব ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে সেসব ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থীরা রয়েছেন। বিএনপির সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে, যাতে করে এই ৫ টি ওয়ার্ডে বিএনপি কোন প্রার্থী না রাখে। কারণ এই ওয়ার্ডগুলোতে জামায়াতের অবস্থান শক্তিশালী এবং পাশ করার সম্ভাবনা বেশি। সূত্র : ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়