শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী ◈ ড. ইউনূসের পুরস্কার নিয়ে ভুলভ্রান্তি হতে পারে: আইনজীবী  ◈ ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসহ অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:২৪ সকাল
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৭:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বনাম ছাত্র-মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে : রাজনীতি ও ভূগোল পারস্পরিকভাবে যুক্ত অর্থাৎ ‘ইন্টার-টোয়াইন্ড’। সে কারণে ভৌগোলিক দৃশ্যপট এবং সেগুলোর সম্পর্ক রাজনৈতিক ভাষায় উদ্ভূত। তাতে একটি রাষ্ট্রের ভৌগোলিক পরিসীমা যেমন দৃষ্টিভঙ্গীর আচরণে পরিস্ফূট, তেমনি বিশ্বের পানে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গীটিও রূপায়নযোগ্য। তাই রাজনীতিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অবিস্যম্ভাবীভাবে জনগণ বা জনসাধারণ বিচ্যুত নয় এবং প্রযুক্তি ও প্রাকৃতিক সম্পদও তাতে অঙ্গীভূত। ফলশ্রুতিতে বৃহত্তর স্বার্থে ভূগোল ও রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে হয়। বিশ্বায়নের যুগে সংকুচিত বিশ্বে ‘স্থান বা জায়গা’ সম্পর্কিত বিষয়ে ‘টোপোফোবিয়া’ ও ‘টোপোফিলিয়া’ শব্দ দুটি বিশেষভাবে বিবেচ্য। কেননা ‘টোপোফোবিয়া’ শব্দটি গ্রিক ‘টোপো’ বা ‘স্থান বা জায়গা’ ও ‘ফোবিয়া’ বা ‘ভয় বা শঙ্কা’ থেকে উদ্ভূত। তাতে ‘প্লেসনেস’ বা ‘মরবিড ড্রেড অব সার্টেন প্লেস’ বা রোগজ নিরানন্দ স্থানের ধারণাটি জড়িত। পক্ষান্তরে ‘টোপোফিলিয়া’ শব্দটি গ্রিক ‘টোপো’ বা ‘স্থান’ এবং ‘ফিলিয়া’ বা ‘ভালবাসাসিক্ত’ অবস্থান থেকে উদ্ভূত, যা সচরাচর জনগণের ভালবাসাসিক্ত ‘কালচারাল আইডেনটিটি’ বা সাংস্কৃতিক পরিচিতিটি বহন করে। এ সব ব্যাখ্যার কারণটি হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিক্ষক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. এমাজউদ্দীন আহমদের দেয়া জবাবটি বাংলাদেশে চলমান বিভেদ ও নিষ্পেষণের রাজনীতিতে পারস্পরিকভাবে প্রগল্ভ স্বমত্যভিমান।

প্রেক্ষাপট বিবেচনায় গত রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউিশনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির প্রথম সভায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘রাস্তা দখল করে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে ঘরে বসে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করুন’। সেটি ছিল তার বিএনপি চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দলটি দফায় দফায় কর্মসূচি পুলিশি বাধার মুখে পড়ার প্রতিক্রিয়া। পরদিন সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন নামের একটি সংগঠনের আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘ঘরের মধ্যে থেকে বা অফিসে বসে রাজনীতি হয় না তা তাকে (ওবায়দুল কাদের) কীভাবে শেখাব। তাকে শেখাতে না পারার ব্যর্থতা আমারই (এমাজউদ্দীন আহমদ)’। বাস্তবে ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন এবং সেসময় ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ওই বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে সরাসরি তার শিক্ষক।

যতটুকু জানি, একুশে পদকপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমদ কানাডার অন্টারিও প্রদেশের স্বনামধন্য কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পেয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডক্টরেট করেছেন। তার সেই পান্ডিত্যের অভিজ্ঞানপূর্ণ আলোকচ্ছটা ২০১৬ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের উপাচার্য হিসেবে প্রায় ১৪ বছর অর্থাৎ তার ৮৩ বয়সকাল অবধি সরাসরি নিবিষ্ট ছিল। একইসঙ্গে তার অধ্যবসায় ও ধীমান সুলভ বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির উপর গবেষণালব্ধ গ্রন্থপ্রকাশনা যেমন ছিল অব্যাহত, তেমনি এখনও তিনি মহান ¯্রষ্টার কৃপায় অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ও সচল। ফলে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ‘রাজনীতি শেখাতে না পারার’ দায়টি একজন অকৃত্রিম শিক্ষক হিসেবে নিজ কাঁধে নিয়েই অবিচলভাবে জনসমক্ষে স্বীকার করেছেন।

তাই এই লেখার সূচনায় রাজনীতি ও ভূগোল সংশ্লিষ্ট দৃষ্টিপান এবং জনগণের রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পরিচিতির প্রেক্ষাপটে ‘স্থান বা জায়গা’ সম্পর্কিত বিষয়ে ‘টোপোফোবিয়া’ ও ‘টোপোফিলিয়া’র ধারণাটি কখনোই কোনো বিভেদ ও নিষ্পেষণের উপজীব্য না হয়ে বরং রাজনীতি হওয়া চাই জনগণের পদযুগল মাঁড়ানো রাজপথে, আর সে রাজপথেই তাদের দাবিটি হবে উচ্চকিত। ভুললে চলবে না, ক্ষমতার উৎস নির্ধারণে ‘টোপোফোবিয়া’র ‘প্লেসনেস’ হিসেবে সাময়িক ভোটের পোলিং বুথ করা হলেও সেই পোলিং বুথের ফলাফল ‘টোপোফিলিয়া’র মতো কার্যত বিস্তৃত হয় সুদীর্ঘ সময়ে রাষ্ট্রের প্রতিটি পরিসীমায়। ফলে রাজনীতি ঘরে নয়, বরং রাজপথেই হয় এবং সেক্ষেত্রে স্পন্দিত রাজনীতি ঘর বা অফিসের ‘ফুটলুজ কসমোপলিটন ড্রিম’ নয়। ই-মেইল : নঁশযধৎর.ঃড়ৎড়হঃড়@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়