মরিয়ম চম্পা : উত্তমের আকাশেই ডানা মেললেন সুপ্রিয়া দেবী। আনন্দ বাজার পত্রিকার বরাত দিয়ে বলা হয়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কলকাতার বালিগঞ্জের সার্কুলার রোডে নিজ বাড়িতে হৃদরোগে মারা গেছেন ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন ৮৩ বছরের এই অভিনেত্রী।
সুপ্রিয়া দেবী অভিনিত প্রথম ছবি ‘বসু পরিবার’। এছাড়া ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’ (১৯৬৪), ‘লাল পাথর’, ‘চৌরঙ্গী’ (১৯৬৮) তার সাড়া জাগানো ছবিগুলোর অন্যতম। ১৯৩৫ সালের ৮ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করা সুপ্রিয়া মাত্র ৭ বছর বয়সে অভিনয় শুরু করেন। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
ভারতের 'সোফিয়া লরেন' সুপ্রিয়া চৌধুরী ছিলেন পাঁচ দশক ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে নামকরা তারকারদের একজন। উত্তম-সুচিত্রা জুটির মতোই উত্তম-সুপ্রিয়া জুটিও সেই সাদাকালো যুগের বাংলা ছবির দর্শকদের মধ্যে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল।
রূপালি পর্দার বাইরে এই দুই তারকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও অনেক আলোচনা থাকলেও সুপ্রিয়া চৌধুরি তাদের সম্পর্ককে অবশ্য 'বন্ধুত্ব' বলেই বর্ণনা করেছেন।
বলিউডে তার প্রথম কাজ করার সুযোগ হয় ধর্মেন্দ্রর বিপরীতে 'বেগানা' ছবিতে। তবে তাঁর জীবনের একটি খেদ ছিল বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের কোন ছবিতে তিনি কখনো অভিনয়ের সুযোগ পাননি।
সুপ্রিয়ার চৌধুরির জন্ম মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশের মিয়িতকিনায়। তাঁর বাবা গোপাল চন্দ্র বন্দোপাধ্যায় ছিলেন একজন আইনজীবী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক ভারতীয়র সঙ্গে বার্মা ছেড়ে তাদের পরিবারও কোলকাতায় চলে আসেন।
১৯৫২ সালে 'বসু পরিবার' দিয়ে তার ফিল্ম ক্যারিয়ারের শুরু। এই ছবিতে বাংলা ছবির আরেক বড় তারকা উত্তমকুমারও অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তীকালে উত্তম-সুপ্রিয়া জুটির 'সোনার হরিণ' ছবিটি ছিল সেই যুগের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যবসা সফল ছবিগুলোর একটি।
১৯৬০ সালে মুক্তি পায় উত্তম-সুপ্রিয়া জুটির ব্যবসাসফল ছবি ‘শুন বরনারী’। উত্তম কুমার থেকে শুরু করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়সহ বাংলার বিশিষ্ট অভিনেতাদের সঙ্গে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি। ফিল্মফেয়ার, পদ্মশ্রী, বঙ্গ বিভূষণ সহ একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। এনডিটিভি