নূরুল আনোয়ার : সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, আমরা যদি মাদক সেবন না করি, তাহলে সব সমাধান হয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, যারা মাদকাসক্ত তারাতো আর এটি বোঝে না। তারা যদি বুঝত মাদক তাদের কতটা ক্ষতি করছে, তাহলে মাদক সেবন করত না। প্রথমে যারা মাদকাসক্ত তাদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হবে। তারা মাদক না নিলে আমদানী কমে যাবে। তাছাড়া আমাদের পরিবার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবাই মিলে এটির প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে তার সন্তান কখন কি করছে? কার সাথে চলা ফেরা করছে? স্কুলে গিয়ে রীতিমতো ক্লাস করছে কিনা? এই সবগুলো দিক খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের প্রশাসনের উচিত যখন কোনো লোক সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে, তাকে ভালোভাবে চেক করতে হবে।
তার সাথে অবৈধ কিছু আছে কি-না দেখা দরকার। এটি তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব। একটি কথা সত্য, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অগোচরে কোনো কিছু দেশে প্রবেশ করতে পারে না। যারা মাদকসহ অবৈধ মালামাল দেশে নিয়ে আসে, তারা সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সাথে মিলেমিশে নিয়ে আসে। তাদের সাথে আপোস না করে কিছু আনতে গেলে ধরা পরে। যেটি আমরা মাঝে মাঝে দেখতে পাই, সীমান্তে চোরাচালান ধরা পরেছে। এটির কারণ, পাচারকারীরা সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর সাথে আপোস করেনি। সীমান্ত রক্ষীবাহিনী এসব চোরাচালানের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে। এরপর যখন দেশে আসে।
সমাজের অনেক মানুষ এটির সাথে জড়িত হয়। সবাই যে খারাপ বা এটির সাথে জড়িত আমি এটি বলি না। সবাই খারাপ হলে দেশ এতো দিনে ধ্বংস হয়ে যেত। এটি যখন দেশের বিভন্ন স্থানে বিক্রি হয়, তা দেখার দায়িত্ব সমাজের জনপ্রতিনিধিদের। তারা চাইলে এটি রোধ করতে পারে। কিন্তু কোথাও কোথাও সমাজের প্রতিনিধিরাও এটির সাথে জড়িত। পত্রিকায় আমরা কক্সবাজারের এমপি বদির কথা শোনেছি। ইয়াবা আমদানীতে তিনি জড়িত আছেন। এসব নেতাদেরও আগে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। সব কথা মিলিয়ে আগে আমাদের দেশের মাদকাসক্ত লোকদের সুস্থ করতে হবে। যেন এটির চাহিদা কমে যায়। তারপর সীমান্তে ভালোভাবে চেক করতে হবে, যেন দেশের ভিতরে কোন মাদক দ্রব্য না ঢুকতে পারে।
পরিচিতি : সাবেক আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ
মতামত গ্রহণ : গাজী খায়রুল আলম
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ