টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু। স্থানীয়দের অভিযোগ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে ৬০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ জন্য বাসাইল প্রকল্প কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন তারা।
সেতুটি উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ি সড়কে অবস্থিত। সেটি নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে বাসাইল উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সাতটি সেতু রয়েছে। সাতটি সেতুর মধ্যে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কাজ প্রায় তিন মাস আগে শেষ হয়। সেতুটি নির্মাণের সময়েই রড, সিমেন্ট ও বালুসহ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানায় বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের কাছে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেননি।
বাবুল মিয়া নামের স্থানীয় একজন অভিযোগ করেন, সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে দেখা যায়নি। সে সময় ধান কাটা শ্রমিকদের দিয়ে সেতুর কাজ করতে দেখা যায়। এসব অনিয়মের ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তাকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
একই অভিযোগ স্থানীয় অনেকের। তাদের অভিযোগ, প্রকল্প কর্মকর্তার উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণেই সেতুটির এই অবস্থা। ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ চলে আসছে। সেতুটি হেলে গিয়ে ধসে পড়ার আশংকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের এখন প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতের কারণে সেতুটি হেলে পড়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উদ্বোধনের আগেই সেতুটি হেলে পড়ার বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই প্রকল্প অফিসের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিদর্শন করে গেছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক জাহিদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার সম্পা তদন্তপূর্বক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।