ফরিদপুর প্রতিনিধি: [২] ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস ও পিকআপভ্যানের সংঘর্ষে ১৫ জন নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাস চালক খোকন মিয়াকে র্যাব-১০ গ্রেপ্তারের পর তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে নানা তথ্য।
[৩] বাস চালক খোকন মিয়া র্যাবের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন যে, 'সে গত ১৩ বছর ধরে ভারি যানবাহন চালিয়ে আসছেন। তবে তার কোনো পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। সে হালকা যানবাহন চালানোর লাইসেন্স দিয়ে ভারি যানবাহন চালিয়ে আসছেন। তবে, তাকে কেউ আঁটকালে সেখানে তিনি টাকা দিয়ে ও নানা উপায়ে পার হয়ে যেতেন। তবে, এ তের বছরে তিনি কখনো এক্সিডেন্ট করে না থাকলে ফরিদপুরের দিগনগরেই প্রথম দুর্ঘটনা ঘটে। যে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ১৫ জন পিকআপ যাত্রী।'
[৪] মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে র্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার ওই বাসচালকের উদ্বৃত্ত দিয়ে এসব তথ্য জানান।
[৫] এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর এলাকা থেকে ঘাতক বাস চালক খোকন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। সোমবার (২২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই বাস চালকে গ্রেপ্তার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজনও করা হয়।
[৬] লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার আলাপকালে আরও বলেন, 'সড়ক দুর্ঘটনার দিন একনাগাড়ে বাস চালাচ্ছিলেন বাস চালক খোকন মিয়া। মাঝে মাত্র একঘণ্টা বিশ্রাম নিতে পেরেছিলেন। দুর্ঘটনার আগের দিন ১৫ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে বাস নিয়ে রাত ৩টায় ঢাকার গাবতলী পৌঁছায়। সেখানে মাত্র একঘণ্টা বিশ্রাম নিয়ে ফের ভোর ৪টায় গাবতলী থেকে জীবননগরের উদ্যেশ্যে বাস ছাড়ে। পথিমধ্যে ফরিদপুরের কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় পিকআপের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়। এভাবে একনাগাড়ে চালকদের দিয়ে বাস চালাতে বাধ্য করা কতটা যোক্তিক ছিল; এটা নিয়ে বাস মালিকপক্ষের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে। '
[৭] শাইখ আকতার ওই বাসচালকের উদ্বৃত্ত দিয়ে আরও জানান, 'ইউনিক পরিবহনের যে বাসটি চালাতেন চালক খোকন, সে বাসের মালিকানা তিনবার বিক্রি করা হলেও তার রেজিষ্ট্রেশন ছিল প্রথম বিক্রেতার নামেই। পরবর্তীতে যারা বাসের মালিকানা কিনে নেন তারা আর পুনরায় রেজিষ্ট্রেশন করেনি!'
[৮] প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুর-খুলনা মহাসগড়কের কানাইপুরের দিগনগরে বাস ও পিকআপের সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত হন। এসময় ঘাতক বাস চালক পালিয়ে যান। পরে এই ঘটনায় একইদিন রাতে অজ্ঞাত বাস চালককে একমাত্র আসামি করে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে র্যাব-১০ অভিযান চালিয়ে রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুর এলাকা থেকে ঘাতক বাস চালক খোকন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :