আজকের যুগে ফেসবুকের নীল ব্যাজ বা ভেরিফায়েড আইডি মানেই আলাদা পরিচয়, বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্মানের প্রতীক। সাংবাদিক, রাজনীতিক, উদ্যোক্তা, প্রতিষ্ঠান বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর—যে কেউই এখন চান নিজের প্রোফাইল বা পেজের পাশে সেই নীল টিক চিহ্নটি দেখতে। তবে অনেকেই জানেন না, ফেসবুকের নীল ব্যাজ টাকা খরচ না করেও ফ্রি পেতে কিছুটা সুযোগ এখনো আছে।
এক্স (আগে টুইটার) ২০০৯ সালে প্রথমবারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট যাচাই বা ভেরিফিকেশনের ধারণা চালু করে। ২০১৩ সালে ফেসবুক নিজস্ব নীল ব্যাজের ব্যবস্থা চালু করে, যাতে প্রকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।
বর্তমানে ফেসবুকে দুটি ধরনের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া রয়েছে:
• ট্র্যাডিশনাল (ফ্রি) ভেরিফিকেশন
• মেটা ভেরিফায়েড (পেইড সাবস্ক্রিপশন)
২০২৩ সালে মেটা ভেরিফায়েড প্রোগ্রাম চালু হওয়ায় প্রায় যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মাসিক ফি দিয়ে ব্যাজ পেতে পারেন। তবে ফ্রি ভেরিফিকেশনও এখনো চালু আছে, যদিও অনুমোদন পাওয়া কঠিন।
ফ্রি ভেরিফিকেশনের যোগ্যতা
ফেসবুকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ফ্রি ভেরিফিকেশন পেতে হলে:
• অ্যাকাউন্ট আসল ও সক্রিয় হতে হবে।
• একই নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারবে না (ভাষাভিত্তিক ব্যতিক্রম ছাড়া)।
• প্রোফাইল বা পেজে থাকতে হবে ‘About’ সেকশন, প্রোফাইল ছবি ও অন্তত একটি সাম্প্রতিক পোস্ট।
• ফেসবুকে অনেকেই আপনাকে সার্চ করে।
• ফেসবুক ও মেটার নীতিমালা এবং কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করতে হবে।
প্রমাণপত্র
• ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট: জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স
• প্রতিষ্ঠানের জন্য: রেজিস্ট্রেশন সনদ, ট্যাক্স বা ব্যবসায়িক নথি
• প্রয়োজনে ফোন বা বিদ্যুৎ বিলও ব্যবহার করা যায়।
ফ্রি ভেরিফিকেশন করবেন যেভাবে
• Facebook Verification Request Form এ যান।
• যেই প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাই করতে চান তা সিলেক্ট করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
• ‘Notability’ বা জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিন, যেমন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত লিংক, অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ইত্যাদি।
• ফর্ম পূরণ শেষে ‘Send’ ক্লিক করুন।
এরপর ফেসবুক আবেদন পর্যালোচনা করবে। ব্যর্থ হলে ৩০ দিন পর পুনরায় আবেদন করা যাবে।
কেন ভেরিফিকেশন জরুরি
• প্রোফাইল বা পেজের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়
• ভুয়া অ্যাকাউন্টের প্রভাব কমে
• সার্চ রেজাল্টে পেজ উপরের দিকে আসে
• মানুষ সহজে খুঁজে পায় এবং আসল অ্যাকাউন্টে আস্থা রাখে
ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে করণীয়
• অ্যাকাউন্টে ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন না (নাম, প্রোফাইল ছবি বা ইউজারনেম)
• সম্পূর্ণ প্রোফাইল রাখুন (প্রোফাইল ছবি, কভার ফটো, বিভাগ, ‘About’ সেকশন)
• পেজের নাম সঠিক রাখুন (অশালীন শব্দ, অপ্রয়োজনীয় চিহ্ন, সব বড় অক্ষর ব্যবহার করবেন না)
• কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলুন (অবৈধ বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট এড়িয়ে চলুন)
ফেসবুক ভেরিফিকেশন এখন কেবল জনপ্রিয়দের জন্য নয়। সাধারণ ব্যবহারকারীও শর্ত মেনে, প্রোফাইল পরিপূর্ণ রেখে, সঠিকভাবে আবেদন করলে ফ্রি নীল ব্যাজ পেতে পারেন। ভাগ্য ভালো হলে খুব অল্প সময়ে আপনার প্রোফাইল বা পেজের পাশে জ্বলে উঠবে কাঙ্ক্ষিত নীল টিকচিহ্ন।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ