স্পোর্টস ডেস্ক : একটা সময় টেস্ট ক্রিকেটকে বলা হতো ক্রিকেটের প্রাণ, মর্যাদা প্রতীক। যেখানে সাদা পোশাক আর লাল বলের লড়াই শুধু মাত্র খেলার গল্পই নয়, আরও অনেক কিছু। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ফরম্যাট নিয়ে উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। বিশেষ করে প্রতিযোগিতার মান, দর্শক আকর্ষণ ও আর্থিক দিক।
সেই প্রশ্নের জবাবে এক সময় আলোচনায় আসে একটি প্রস্তাব। টেস্ট ক্রিকেট হওয়া উচিত ‘টু টায়ার সিস্টেম’ বা দ্বি-স্তরকরণ। অর্থাৎ প্রস্তাবিত এই কাঠামো অনুযায়ী টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোকে পারফরম্যান্স ও র্যাংকিং এর ভিত্তিতে দুই ভাগে ভাগ করা হবে। থাকবে প্রমোশন ও রেলিগেশন ব্যবস্থা। -- যমুনানিউজ
এই বিষয় নিয়ে মত-দ্বিমত পোষণ করে এসেছে বেশ কয়েকটি দেশ। সম্প্রতি টেস্ট ফরম্যাটে দ্বি-স্তর শুরু করার বিষয়ে আলোচনা করতে ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যেখানে নতুন কাঠামো প্রবর্তনের পক্ষে নিজের মত প্রকাশ করেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি টড গ্রিনবার্গ। বলেছেন কিছু দেশকে জোড় টেস্ট খেলিয়ে দেউলিয়া করে দেয়া হচ্ছে।
টড গ্রিনবার্গ বলেন, টেস্ট ক্রিকেটে ম্যাচের সংখ্যা কম থাকা আমাদের জন্য আশীর্বাদ, অভিশাপ নয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশকে টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখতে হবে বলে আমি মনে করি না। আমরা জোর করে টেস্ট খেলতে বাধ্য করে আসলে কিছু দেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছি।
ক’দিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের সবকটিতেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। আবার নিউজিল্যান্ডের কাছে ইনিংসের পাশাপাশি বড় ব্যবধানে হেরেছে জিম্বাবুয়ে।
বড় দলের সঙ্গে এমন সিরিজ আয়োজন করার কারণেই দেউলিয়া পরিস্থিতির সাথে তুলনা করেছেন এই অজি সিইও। বিপরীতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মর্যাদাপূর্ণ অ্যাশেজ সিরিজের মতো প্রতিযোগিতায় বেশি বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান গ্রিনবার্গ, যা শুরু হবে চলতি বছরের নভেম্বরে।
গ্রিনবার্গ আরও বলেন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে টেস্ট ক্রিকেট এমন জায়গায় খেলানো, যেখানে এর মূল্য, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও অনিশ্চয়তা আছে। এজন্যই অ্যাশেজ এত বড় আয়োজনে হয় এবং এটি লাভজনকও বটে।
এদিকে দ্বি-স্তরকরণ একদিকে যেমন প্রতিযোগিতে বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়, অন্যদিকে টেস্ট ক্রিকেটের ঐতিহ্য ও সমতা নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সাদা পোশাকের এই রাজসিক লরাই কি বিভক্ত পথে যাবে, নাকি পুরোনো গৌরবে ফিরবে— সেটাই এখন বড় প্রশ্ন ক্রিকেট বিশ্বের।