হামজা চৌধুরী-সমিত সোমদের নিয়ে বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে ৪৫ বছর পর ফের এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে জায়গা করে নেওয়ার। অ্যাওয়ে ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে স্বস্তির ড্রয়ে শুরু হলেও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হারায় সে পথে কিছুটা হোঁচট খেয়েছে লাল সবুজরা। তবে গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট হারালেও এখনো সুযোগ আছে জামালদের।
২০২৭ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এএফসি এশিয়ান কাপে অংশ নেবে মোট ২৪ দল। এর মধ্যে আয়োজকসহ ১৮ দল জায়গা নিশ্চিত করেছে। বাকি ৬ দলের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডে।
যেখানে ৬টি গ্রুপে ৪টি করে দল একের অপরের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে। গ্রুপ সেরা দল জায়গা করে নেবে মূলপর্বে।
‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর, হংকং ও ভারত। মূলপর্বে জায়গা করে নিতে হলে ৪ দলের মধ্যে সবার উপরে থাকতে হবে লাল সবুজদের। সেখানে বেশ পিছিয়েই রয়েছে জামালরা। ২ ম্যাচ শেষে ১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে সিঙ্গাপুর আর দুইয়ে হংকং। ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে ভারত।
বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে গত ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতে গোলশূন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। আর গতকাল (১১ জুন) ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হেরেছে ২-১ ব্যবধানে।
বাংলাদেশের হাতে এখনো আছে ৪ ম্যাচ। এর মধ্যে ২টি ঘরের মাটিতে আর বাকিগুলো প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে হবে। আগামী ৯ ও ১৪ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এরপর ১৮ নভেম্বর ঘরের মাটিতে ভারতকে দেবে আতিথেয়তা। আর সবশেষ ম্যাচে আগামী বছরের ২৬ মার্চ সিঙ্গাপুরে খেলতে যাবে হামজারা।
র্যাঙ্কিং বিবেচনায় কিংবা সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে গ্রুপের তিন দলই বাংলাদেশের তুলনায় শক্তিশালী। তবে ইংল্যান্ডের লিগে খেলা হামজা চৌধুরী, কানাডায় খেলা সমিত সোম আর ইতালিতে খেলা ফাহমেদুল ইসলামদের নিয়ে স্বপ্ন দেখছে লাল সবুজরা। ১৯৮০ সালের পর আরও একবার এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন।
পথটা কঠিন। পরবর্তী দুই ম্যাচে বাংলাদেশকে লড়তে হবে র্যাঙ্কিংয়ে ৩০ ধাপ এগিয়ে থাকা হংকংয়ের বিরুদ্ধে। দলটির বিপক্ষে লাল সবুজদের আছে ভুলে যাওয়ার মতো স্মৃতি। ১৯৭৫ সালে মারদেকা কাপে দুই দেশের প্রথম দেখা হয়েছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে। বাংলাদেশের জালে গুনেগুনে ৯ গোল দিয়েছিল হংকং। একটি গোল পরিশোধ করতে পেরেছিল। অফিসিয়ালি ম্যাচে হংকংকে কখনো হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। যদিও দীর্ঘ ৫০ বছরে মাত্র ৪টি ম্যাচ হয়েছে বাংলাদেশ-হংকংয়ের। এর মধ্যে বাংলাদেশ ২টিতে হেরেছে, ২টি ড্র করেছে।
গতকাল বাংলাদেশ যখন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হেরেছে, তখন এই হংকং হারিয়েছে তাদের তুলনায় ২৬ ধাপ এগিয়ে থাকা হংকংকে।
তবে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যেতে হলে আগের দুঃস্মৃতি ভুলে হামজাদের নিয়ে নতুন ফুটবলের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশকে লড়াই করতে হবে। দুই ম্যাচের কোনোটিতে হারা যাবে না। পয়েন্ট আদায় করে নিতে হবে সিঙ্গাপুর ও ভারত ম্যাচেও। বিশেষ করে ঘরের মাটিতে হংকং ও ভারতকে হারাতে পারলে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পয়েন্ট তুলে নেবে বাংলাদেশ। তবে হারলে বা ড্র করলে লড়াই থেকে ছিটকে যাবে লাল সবুজরা। আর অ্যাওয়ে ম্যাচ ২টিতে মনোযোগ দিতে হবে হার এড়িয়ে অন্তত ১ পয়েন্ট করে হলেও যেন সংগ্রহ করা যায়।