শিরোনাম
◈ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ৩ নারীকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১ ◈ জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে জোরালো দৌড়: বিএনপিতে ফিরতে চান বহিষ্কৃত সাক্কু ও কায়সার ◈ আবারো মামুন লায়লার দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো ঐশী-মামুনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ! ভিডিও ◈ পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে কি আটক ? যা জানা গেলো (ভিডিও) ◈ এবার মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ◈ ভুয়া ভিডিও শেয়ার করে দুঃখ প্রকাশ ভারতীয় সাংবাদিকের ◈ যুদ্ধবিরতির পর প্রথম সেনা বৈঠকে ভারত-পাকিস্তানের গুলি না চালানোর অঙ্গীকার, সীমান্ত থেকে সেনা কমানোর সিদ্ধান্ত ◈ যে কৌশলে ভারত-পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধ থামিয়েছেন, জানালেন ট্রাম্প ◈ হামজা চৌধুরীর দুর্দান্ত পারফর‌মেন্স, ফাইনালে শেফিল্ড ইউনাইটেড ◈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৈদ্যুতিক শাটল গাড়ি চালু

প্রকাশিত : ৩০ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:০৭ দুপুর
আপডেট : ০৪ মে, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিবির-ছাত্রদল মুখোমুখি?

এল আর বাদল: বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতির চেহারা কেমন হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও অনেকটা মুখোমুখি অবস্থানে দেখা গেছে বিএনপি এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের।

ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনাও। কিন্তু ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে দাবি উঠেছিলো তার বাস্তবায়ন কতদূর সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

আবার সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র রাজনীতি আবারও পুরনো চেহারা নিয়ে হাজির হবে কি না সে ভয়ও আছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আসে ছাত্রশিবির। তিন সদস্যের আংশিক কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে আসার পর গত ১৯শে নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি সর্বদলীয় মতবিনিময় সভায় অংশ নেয় সংগঠনটি।

সভাটি ডেকেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উদ্দেশ্য ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা। কিন্তু সভা শুরুর কিছুক্ষণ পরই ছাত্রশিবিরের উপস্থিতি নিয়ে হট্টগোল শুরু হয়। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্রথম আপত্তি তোলা হয়। পরে কয়েকটি বাম সংগঠনও এতে যোগ দেয়। আবার ছাত্রশিবিরের পক্ষেও বক্তব্য রাখে কয়েকটি সংগঠন।

শিবির-ছাত্রদল কি মুখোমুখি হচ্ছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির প্রকাশ্যে আসার পর এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো কয়েকটি বাম সংগঠন। পরে ছাত্রদলও নানা প্রশ্ন তুলেছে এটা নিয়ে। এই ইস্যুতে দুই দলের কর্মী-সমর্থকদেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে পাল্টা-পাল্টি পোস্ট দিতে দেখা যায়।

এরমধ্যেই গত ৭ই নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লব’ উপলক্ষে বিএনপির দলীয় পোস্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সাঁটিয়ে দেয় ছাত্রদল। তবে হলগুলোতে পোস্টার লাগানোর পর ছাত্রদের মধ্যে এর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তুলে রাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল হয় সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে। কার্যক্রমের শুরতেই এমন বিরোধিতা বেশ বেকায়দায় ফেলে ছাত্রদলকে।

ছাত্রদল এর পেছনে শিবিরকে দায়ী করলেও শিবির অবশ্য সেটা অস্বীকার করেছে। তবে এমন পরিস্থিতি শুধু ঢাকায় নয়, আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও দেখা যায়।

বিশেষ করে চট্টগ্রামে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির সংঘর্ষ কিংবা মুখোমুখি অবস্থানের খবর দিচ্ছে গণমাধ্যমগুলো। ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটা একটা বড় প্রশ্ন।

তবে ছাত্রদল-শিবির মুখোমুখি অবস্থানে আছে এমনটা মনে করছেন না শিবির কিংবা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা। তাহলে বিরোধিতা কেন তৈরি হচ্ছে এমন প্রশ্নে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির অবশ্য অভিযোগ করছেন, ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ‘নামে-বেনামে প্রোপাগান্ডা ছাড়াচ্ছে শিবির।

তিনি বলেন, পাঁচই অগাস্টের পরে তারা আত্মপ্রকাশ করেছে। আত্মপ্রকাশ করেই ছাত্রদলের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে প্রোপাগান্ডা তৈরি করছে। এর মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা আমাদের একটা বিভেদ তৈরি করতে চায়। কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ঠিক এ চেষ্টাই তারা করেছে। তারা সেখানে হল দখল করেছে। কিন্তু ছাত্রদলের ছেলেরা যখন হলে উঠতে গিয়েছে, তারা সেখানে বাধা দিয়েছে।

তবে শিবির অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করছে। পক্ষে-বিপক্ষে, পাল্টা-পাল্টি স্লোগানে একপর্যায়ে বৈঠক প- হয়ে যায়। এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রশিবির আত্মপ্রকাশ করার পর সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিলো ছাত্রদলকে।

শিবিরের বিরোধিতা কেন করছে ছাত্রদল?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেদিনের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আহ্বানে যোগ দিয়েছিলেন ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী রিফাত মাহমুদ। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম যে, শিবির এই ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত। বাইশটা ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন তাদেরকে নিষিদ্ধ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগও আছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা বলেছি যে তাদের সঙ্গে থাকবো না। তখন আমরা ওয়াকআউট করি, সেখান থেকে চলে আসি।

শিবিরকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হলে সবার আগে তাদের অবস্থান পরিস্কার করতে হবে বলে মনে করেন মি. মাহমুদ। আমরা বিশ্বাস করি তারা যে তিনজনের কমিটি দিয়েছে, সেটাই তাদের কমিটি না। এর বাইরেও তাদের হয়তো লোক আছে। এখন তারা গুপ্ত রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসুক আগে। তাদের অবস্থান, কর্মসূচি তাদেরকে আমাদের কাছে তুলে ধরতে হবে। তারপর ছাত্রসংগঠনগুলো, সাধারণ ছাত্র এবং প্রশাসন বিবেচনা করবে তাদের রাজনীতি এখানে চলবে কি চলবে না।

তবে শিবির ইস্যুতে সাময়িক উত্তেজনা থাকলেও জাহাঙ্গীরনগরে মোটাদাগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘুরে সেখানে শিবিরের নেতা-কর্মীদের অবস্থানও দেখা গেছে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনও দিতে পারেনি সংগঠনটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়