শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০২:৪৯ রাত
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০২:৪৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বইমেলায় রাশি রাশি বই দেখে আমার হাসি পায়, লেখকদের জন্য করুণাও জাগে

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: [১] আমার মনে হয়, প্রজাতি হিসেবে টিকে থাকার জন্য হোমো স্যাপিয়েন্সের যা প্রয়োজন তা সে অর্জন করে ফেলেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান এখন এমন এক স্তরে পৌঁছেছে যে এখন তার দরকার টিকে থাকার জন্য নয়, বরং নিজেদের ধ্বংস করার জন্য প্রযুক্তি দরকার। অবশ্য এ ধরনের প্রযুক্তি তৈরি হওয়ার শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। পৃথিবীর জলবায়ু যে মানব প্রজাতির টিকে থাকার জন্য ক্রমেই বিরূপ হয়ে উঠছে, এটি আর কিছুর জন্য নয়, বরং এটি তার ধ্বংসের জন্যই উদ্ভাবিত। উদ্ভব যে বিনাশের বীজ বপন করে, তার প্রমাণ মানুষের নানা কর্মকাণ্ড।

[২] মানুষের হাতে এখন বিনোদনের জন্য অজস্র উপাদান এবং সেগুলো পাওয়া খুব সহজ। সেসব একটা মাত্র যন্ত্রেই পাওয়া সম্ভব। আগে এসব পাওয়ার জন্য টাকা-পয়সার মালিক হওয়া লাগতো, এখন একজন তথাকথিত হতদরিদ্র মানুষও এসব কিনতে পারে এবং নিজের মতো করে বিনোদিত হতে পারে। এখন সিনেমা দেখার জন্য হলে যেতে হয় না, গান শোনার জন্য রেডিও শোনা কিংবা টিভি দেখতে হয় না। এবং আরো এমন অজস্র। তাহলে মানুষ বই পড়বে কেন? বই পড়তে সময়, স্থান, ইচ্ছা লাগে। কিন্তু আধুনিক যন্ত্র এসবের প্রয়োজন তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে। স্থান এবং সময় এখন একঘাটে জল খায়। ইচ্ছা তার অধীন, যখন তখন। এর মধ্য দিয়ে বিনোদনকে উপভোগ করার বৈষম্য কমে এসেছে। এখন প্রায় প্রতিটি মানুষ বিনোদিত হতে পারে। তবে পার্থক্য কিছু আছে আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া দেশের মানুষগুলোর জন্য। সেটা তেমন সমস্যা নয়। সেটা বুদ্ধিবৃত্তিক। এই বুদ্ধিবৃত্তিক পার্থক্যও কমে আসছে। যন্ত্র এক্ষেত্রে অসাধারণ ভূমিকা পালন করছে।

[৩] তাহলে প্রজাতি হিসেবে কেন সে বিলুপ্ত হবে? কারণ মানুষের আর কিছু করার থাকবে না, সব করবে যন্ত্র। যন্ত্রের মধ্যে এসব কনটেন্ট কিছু মানুষ যোগান দেবে, অবশ্য এখনি এই কন্টেন্টের যে পরিমাণ, তা দেখে যেতেই লাখ লাখ বছর কেটে যাবে। সুতরাং নতুন যে কন্টেন্ট যুক্ত হবে, তা মানুষকে আরো নিষ্ক্রিয়  করে দেবে। মানুষ তখন আলস্যের বেড়াজালে নিজেদের বন্দী করে ফেলবে এবং আত্মক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যাবে। খাদ্যের জন্য সামান্যও বেগ পেতে হবে না। খুব সহজে এবং অল্পেই তার সমাধান করে ফেলবে মানুষ। মানুষ সেদিকেই হাঁটছে।

[৪] বইমেলায় রাশি রাশি বই দেখে আমার হাসি পায়, লেখকদের জন্য করুণাও জাগে। বইগুলো বিক্রি হবে কিন্তু কেউ পড়বে না। কারণ বইয়ে নতুন কিছু যেমন নেই, তেমনি বিদ্যমান আনন্দের উপাদানের চেয়ে আকর্ষণীয়ও নয়। আর সহজে উপভোগ্য তো নয়, আগেই বললাম। আদর্শ, বিপ্লব, নৈতিকতা এসব বিষয় এখন সেকেলে। বরং প্রতিটি মানুষ এক একটি রাষ্ট্র, এক একটি পৃথিবী। তার আর আলাদা কোনো পৃথিবীর দরকার নেই। এখন তার একটাই কাজ- নিজেকে কতো দ্রুত ধ্বংস করা যায়। তবু বইমেলায় যাই, বই দেখি, কিনি। আড্ডা দিই, হাসি-তামাশা করি। এক একজনকে প্রশংসা করি। কিন্তু এক সময় সবাইকে ক্লাউন মনে হয়, এক একজন লেখককে ভিখিরি মনে হয়ে। কখনো কখনো লোলচর্ম বিশেষ প্রাণিও মনে হয়। জয় হোক মানুষের আত্মধ্বংসের কর্মযজ্ঞ। লেখক: ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়