শিরোনাম
◈ শিক্ষক-কর্মচারীদের মাধ্যমিক স্তরে বদলি ও পদায়নের নতুন নির্দেশনা ◈ হাজিদের সোয়া ৮ কোটি টাকা ফেরত দেবে সরকার ◈ জরুরি অবস্থা ঘোষণায় বিরোধীদলের অংশগ্রহণ ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষার সুপারিশ ◈ গভীর রা‌তে ক্লাব বিশ্বকা‌পের ফাইনাল, এই আ‌য়োজ‌নে ফিফার আয় ২৪ হাজার কোটি টাকা ◈ সিরিজ বাঁচা‌তে রা‌তে শ্রীলঙ্কার মোকা‌বিলা কর‌বে বাংলা‌দেশ ◈ চীনের সুপার ড্যাম,: ভারত ও বাংলাদেশের উদ্বেগ ও বাস্তবতা ◈ ভেরিফিকেশন ছাড়া আর নয় শিক্ষক নিয়োগ: কার্যকর হলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন পরিপত্র ◈ সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন ◈ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হলেও জাতীয় নির্বাচন সম্ভব: বিবিসি বাংলাকে সিইসি ◈ সন্ত্রাসীদের ধরতে যে কোন সময় সারাদেশে চিরুনি অভিযান: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০১:২৩ রাত
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০১:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নাদির আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ছাত্রী উভয়েই সুবিচার পাক

মাসকাওয়াথ আহসান

মাসকাওয়াথ আহসান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাঈদের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ঘটনাটির কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্তের আগেই শুরু হয়ে গেছে মিডিয়া ট্রায়াল। নাদির জুনাঈদ বেশ ভালো ছাত্র ছিলেন। ছাত্রজীবনে আমাদের বিতর্ক সংগঠনের সদস্য ছিলেন। অনেকদিন যোগাযোগ নেই। বছর দশেক আগে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় দেখা হয়েছিলো। কয়েক বছর আগে ফেসবুকে আমি আমার মিডিয়া স্টাডিজ শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থেকে একবিংশের টিচিং মেথড সম্পর্কে দুটি কথা লিখলে একটি তিক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলো। এতে আমার একটু মন খারাপ হলেও সে অনুজপ্রতিম; তাই দূর থেকে শুভাকাক্সক্ষী হিসেবে রয়ে যাই।

নাদিরের বিরুদ্ধে যে ছাত্রীটি অভিযোগ করেছে তার বক্তব্য শুনেছি। সে এক্সসেপশনালি ইন্টেলিজেন্ট একটি মেয়ে। তার ভবিষ্যৎ সাফল্য খুব আশাপ্রদ। সাংবাদিকতা বিভাগের উচিত হবে; তার একাডেমিক ফলাফলে কোনো আন্ডারমার্কিং হয়ে থাকলে খাতা আবার দেখে ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তার যোগ্যতার মূল্যায়ন করা। নতুন প্রজন্মের মেধা লালন আমাদের কর্তব্য। নাদির পশ্চিমে পাঠ নিয়েছে। সেখানে শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেলামেশা করেন। এটা খুব প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। নাদিরের অক্সিডেন্টাল শিক্ষকতা মেথডের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের ওরিয়েন্টাল জানাশোনার একটি ক্ল্যাশ ঘটে থাকতে পারে। ব্যক্তিগত জীবনে আমি পশ্চিমাদের সঙ্গে যেভাবে মিশি প্রাচ্যের কারো সঙ্গে সেভাবে মিশিনা। তবে ক্লাসরুমে পশ্চিমা সমাজের সাবলীল ও সহজ সংস্কৃতি সম্পর্কে বলি।

আমি ইউরোপে পশ্চিমা নারী সহকর্মী ও আমার সঙ্গে যুক্ত ইন্টার্নদের সঙ্গে যেভাবে মিশেছি; দক্ষিণ এশীয় নারী সহকর্মী ও ইনটার্নদের সঙ্গে একটু সোনালি দূরত্ব রেখে মিশেছি। নাদির হয়তো পূর্ব-পশ্চিম সব জায়গার মানুষের সঙ্গে একভাবে মেশে। শিক্ষক হিসেবে নম্বর দেবার ক্ষেত্রে বেশ স্ট্রিক্ট। কিন্তু আজকালকার কিছু ছাত্রছাত্রী বিনা প্রস্তুতিতে ভালো গ্রেড আশা করে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মূল্যায়নে তারা কম নম্বর দেয় নিজের খারাপ গ্রেড আসার প্রতিশোধ হিসেবে। জেন্ডার স্পর্শকাতরতা খুব জরুরি বিষয়। কিন্তু যত্রতত্র জেন্ডার কার্ড প্লে করার একটি অপচর্চাও রয়েছে। আমাদের যেকোনো ঘটনায় জাত গেলো, জাত গেলো প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেকোনো ঘটনার নৈর্ব্যক্তিক তদন্ত করতে শিখতে হবে।

আমার নিজের জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে কালচারাল ডিফেরেন্সের ক্ল্যাশে আন্ডার মার্কিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। অতীতে ম্যাডামের ওপর ক্ষোভ ছিলো। কিন্তু এখন মনে হয় উনি অসহযোগিতা না করলে হয়তো আমার জীবন এমন বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হতো না। তাই জীবনের কোনো ঘটনাতেই ভাবতে নেই যে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলো। ছাত্রছাত্রীদের মনে রাখা দরকার, আজকাল গ্রেডের ওপর চাকরি নির্ভর করে না। এইচআর দেখে মানুষ হিসেবে প্রার্থী কেমন। মানুষ হতে গেলে আত্মজিজ্ঞাসার মাঝ দিয়ে যেতে হয়। ভেবে দেখতে হয়, কোন ঘটনায় আমি যৌক্তিক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি কিনা। শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক হতে হবে সত্য সুন্দর আর মঙ্গলের ওপর ভিত্তি করে। নাদির আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ছাত্রী উভয়েই সুবিচার পাক। নাদির কিংবা তার ছাত্রী এ দুজনেরই যেন মেধা হত্যা না হয়। বাংলাদেশের জন্য মেধা রক্ষাই এ-মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। লেখক: পাকিস্তান প্রবাসী সাংবাদিক। ফেসবুকে ১২-২-২৪ প্রকাশিত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়