শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি: কী পাচ্ছে বাংলাদেশ, কী হারাতে পারে? ◈ রাতেই সোহরাওয়ার্দীতে জড়ো হচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা (ভিডিও) ◈ চাপাতি হাতে ব্যাগ ছিনিয়ে পুলিশের সামনেই হেঁটে গেলো ছিনতাইকারী, ভিডিও ভাইরাল ◈ রাশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতের বৃহত্তম তেল শোধনাগার নায়ারা রিফাইনারির ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা ◈ রাতের আকাশে ভেসে উঠলো ‘নাটক কম করো পিও’ (ভিডিও) ◈ জটিল ভয়ানক যে রোগে আক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ◈ কুড়িগ্রামে চাঁদা দাবি করা জামায়াতের সেই নেতা সাময়িক বহিষ্কার ◈ বড়াইগ্রামে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে দুই পরীক্ষার্থী ফেল! ◈ টাঙ্গাইলে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি নেতার রহস্যজনক মৃত্যু ◈ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ তলিয়ে দেখা দরকার: শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:২২ রাত
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩, ০২:২২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রক্তের আখরে লেখা মৈত্রীর মর্মকথা

ড. আতিউর রহমান

ড. আতিউর রহমান: ৬ ডিসেম্বর। এদিন ভূটানের চেয়ে এক ঘণ্টা পরেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয় ভারত। তাই এদিনটি বাংলাদেশ ও ভারত মৈত্রী দিবস হিসেবে উদযাপন করে। তখনও মুক্তিযুদ্ধ চলছিল। বঙ্গোপসাগর অভিমুখে মার্কিন সপ্তম নৌবহরে ছিল অগ্রসরমান। একই সঙ্গে ঢাকার আকাশে উড়ছিল ভারতীয় যুদ্ধবিমান। মাটিতে হাতে হাত রেখে ঢাকার দিকে এগিয়ে আসছিল মুক্তিবাহিনী এবং যৌথবাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সর্বত্রই ছিল টান টান উত্তেজনা। এরই মধ্যে ভারত সরকারের এই স্বীকৃতির ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী বাঙালির মনে এক আনন্দের বন্যা বইয়ে দেয়। তাদের ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে। তদ্দিনে বাংলাদেশকে পুরোপুরি মুক্ত করার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আয়োজন সত্যি হতে শুরু হয়ে গেছে। এর পরেও অনেক প্রাণ হারিয়েছি আমরা। মিত্রবাহীনির অনেক সদস্যও প্রাণ দিয়েছেন বাংলার মাটিতে। বিজয়ের আগ মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক মেধাবী শিক্ষক ও দক্ষ অনেক বাঙালি চিকিৎসক, সাংবাদিক এবং সাংস্কৃতিকজনকে যুদ্ধপরাধী আলবদর, আলশামস বাহিনী বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। গণহত্যার নিকৃষ্টতম উদাহরণ তৈরি করে এই মানবতার শত্রুরা। আর তাই ১৬ ডিসেম্বর যৌথবাহিনীর কাছে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পন একদিকে ছিল যেমন আনন্দের, তেমনি ছিল বেদনাবিধূর। শরণার্থীদের থাকা-খাওয়া ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র সরবরাহ ছাড়াও বিজয়ী বাংলাদেশের বিধ্বস্ত অবকাঠামো, প্রতিষ্ঠান এবং নির্যাতীত নারী-পুরুষের পুনর্বাসনের কাজেও বন্ধুদেশ ভারতের সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাদের অবিরাম পরিশ্রমের কথা না বললেই নয়। 


বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনেও তাদের ভূমিকা ছিল অসীম। সংস্কৃতি অঙ্গনেও এই মৈত্রীর সুপ্রভাব পড়েছে মুক্ত বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুত্ব শুধু টিকে আছে বললে ভুল হবে। তার বড়ো ধরনের উত্তরণ ঘটেছে। সকল ক্রান্তিকাল পেরিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংযোগ যে হারে বেড়ে চলেছে তা এককথায় অসামান্য। বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালু হবার পর ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পর্যটন ক্ষেত্রে যে মাত্রায় কানেক্টিভিটি প্রতিনিয়তই বাড়ছে তা দুই  দেশের মানুষে-মানুষে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ করার নতুন নতুন সুযোগ করে দিচ্ছে। রেল সংযোগও বেড়েছে। তবে এই সংযোগ আরও জোরদার করে আমাদের অখণ্ড সাংস্কৃতিক সম্পদের ওপর ভরসা রেখে চলমান সহযোগিতা ও সহমর্মিতার পারদ আরও উঁচুতে তোলার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। আমাদের রয়েছে অখণ্ড সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস। আছে সমন্বিত অর্থনীতির প্রসারের ঐতিহ্যবাহী অখণ্ড রেল, সড়ক ও জলপথ। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর থেকে আমাদের যোগাযোগ অবকাঠামোই শুধু বিঘ্নিত হয়েছে তাই নয়, আমাদের দুই পড়শি দেশের পারিবারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগও প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। 

তবে একটু আগেই যেমনটি ইঙ্গিত করেছি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের হিরন্ময় সময়ে যেভাবে দুই দেশের মানুষে-মানুষে সংযোগ ঘটে তা আসলেই অভাবনীয়। সেই সময়ের ভারতীয় সমাজ, সরকার, সেনাবাহিনী, সংসদ, সাংস্কতিক ব্যক্তি ও সংগঠন যেভাবে মুক্তিকামী বাঙালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল তা ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়। কোটিরও বেশি মানুষের থাকা-খাওয়া ব্যবস্থা করা ছাড়াও মহিয়সী নেত্রী প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী এবং তাঁর সরকার ও বিরোধী দল যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে লিপ্ত বাঙালির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তা সত্যি ভাষায় বর্ণনা করা মুশকিল। পাশাপাশি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রাণরক্ষা এবং শত্রুর জেল থেকে তাঁর মুক্তির জন্য যেসব উদ্যোগ ভারতের সরকার, বুদ্ধিবৃত্তিক তথা নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যম নিয়েছিল তার জন্য বাংলাদেশের মানুষ গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আর কৃতজ্ঞ ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেই সব বীর সেনানীদের প্রতি যারা বাংলাদেশের মাটিতে শহীদ হয়েছেন, যারা তাদের অঙ্গ হারিয়েছেন এবং অন্যান্য সবাই যারা জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছেন। তাদের রক্ত এবং আত্মত্যাগের ঋণ আমরা কোনোদিনই শোধ করতে পারবো না। পাশাপাশি আকাশবাণীসহ ভারতীয় গণমাধ্যমের আন্তরিক প্রচারে আমরা চিরদিনের ঋণে আবদ্ধ হয়ে আছি। 

মুক্তিযুদ্ধের এই মহিমান্বিত অভজ্ঞতাও আমাদের দুই দেশের  সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক সম্পদ। তাছাড়া বঙ্কিম, তারাশংকর, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনান্দ, ছবি বিশ্বাস, পাহাড়ি সন্যাল, সুচিত্রা, সাবিত্রী, মৃনাল সেন, সত্যজিৎ, অমর্ত্য সেন, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদসহ দুই বাংলার অগুনিত শিল্পী-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীরা আমাদের দুই দেশের অখণ্ড ঐতিহ্যিক সম্পদ। আর রবীন্দ্রনাথ তো দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পদের উজ্জ্বল এক প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যিক সম্পদে পরিণত হয়েছেন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ-সহ পুরো ভারতবর্ষের উজ্জ্বলতম বিপ্লবী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। এছাড়া ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তির পরিপ্রেক্ষিত তৈরির জন্য গান্ধীজী, নেহেরু, আবুল কালাম আজাদ, চিত্তরঞ্জন দাশ, শরদ চন্দ্র বসু, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, শেরে বাংলা ফজলুল হক, আবুল হাশিম, মওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দীসহ অন্যান্য রাজনীতিকদের অনন্য অবদানের কথা স্মরণীয়। তবে ভাষাগত, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, নৃতাত্ত্বিক, সংস্কৃতিসহ জীবনাচারের নানা ক্ষেত্রে অভিন্নতা থাকলেও স্বাধীনতার পর তিপ্পান্ন বছর পেরিয়ে চিরবন্ধুপ্রতীম ভারতের সঙ্গে জনগণের সৌভাতৃত্বের জায়গাটি মুক্তিযুদ্ধকালের মতো নিরঙ্কুশ সম্প্রীতির সহাবস্থানে  অটুট রাখতে পারিনি। তবে হালে এই সৌহার্দ অনেকটাই বেড়েছে। নিঃসন্দেহে, ঐতিহ্যিক এসব সম্পদ এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দুই দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠি মানসপটে। সেখান থেকে সম্ভাব্য মণি-মানিক্য সংগ্রহ করে নিশ্চয় আমরা আমাদের নিজ নিজ সমাজের ও দেশের আত্মশক্তির ক্ষেত্রকে প্রসারিত করতে পারি আগামী দিনের সমৃদ্ধ পথচলায়। 

মনে রাখা চাই যে পরাধীন মাতৃভূমির শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য দেশপ্রেমিক দামাল ছেলেমেয়েরা সব ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে লড়াই করেছিলেন ঔপনিবেশিক ও নব্য ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে। ক’মাস আগে আন্দামানে গিয়েছিলাম। সেখানে বিপ্লবীদের কারাবন্দী রাখা হতো যে জেলে তাকে এখন জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ওই জেলের বন্দী ও শহীদের তালিকায় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, পাবনা, ময়মনসিংহসহ অনেক জেলার বিপ্লবীদের নাম দেখতে পেলাম। ভাষা ও সংস্কৃতিগত অভিন্নতার বাইরে এই বিষয়টি দুই দেশকে এক নিবিড় বন্ধনে চিরকালের জন্য এক করেছে। রক্তের আখরে লেখা এই সম্পর্কের দৃঢ় বন্ধন এরই মধ্যে অমরত্ব লাভের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দুই দেশের জনগণের মাঝে এই সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে হলে অবশ্যি আমাদের মুক্তিসংগ্রামে লড়াইয়ের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ঐতিহ্যকে স্মরণ করতে হবে। সেইসঙ্গে অভিন্ন সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমগুলোকে উদযাপনের বড় উপলক্ষ্যে আড়ম্বরের সঙ্গে তুলে ধরতে হবে। 

এর পাশাপাশি দুই দেশের ক্রমবর্ধমান বনিজ্যিক সহযোগিতার পাশাপাশি চলমান ভূ-রাজনৈতিক সংকটে দুই দেশের নেতৃত্বের সমন্বিত কৌশলগত স্মার্ট কূটনৈতিক তৎপরতাকে সাধুবাদ জানাই। জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়ে দুই দেশের মৈত্রীর বিশেষ সম্পর্ককেই বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ‘পড়শিই প্রথম’ পররাষ্ট্র নীতির বাস্তব প্রতিফলন তিনি রেখেছেন। প্রসরমান নৌপথ, সমুদ্রপথ ও রেলওয়ে কানেক্টিভিটির পাশাপাশি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য খাতে উপযুক্ত দক্ষ জনশক্তি বৃদ্ধির জন্য সফট কানেক্টিভিটির ওপর আরও জোর দেবার প্রয়োজন রয়েছে। গ্লোবাল সাউথের সবচেয়ে সক্রিয় প্রতিনিধি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে শুধু বাংলাদেশের নয় পুরো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বিকাশমান দেশগুলোর টেকসই উন্নয়নের জন্য সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের জন্য নির্বিরোধ শান্তিময় ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু মানবিক নীতি-আকাক্সক্ষার কথা স্পষ্ট ভাষায় তুলে ধরেছেন। আর তাই হালে বাংলাদেশের জন্য সবুজ অর্থায়নসহ আট বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ। বাংলাদেশের এই সবুজ কূটনীতি নিশ্চয় অভিনন্দনযোগ্য।

আন্তর্জাতিক এমন আয়োজন ছাড়াও আমাদের দুই দেশের ভাষা, শিল্প, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে কী করে নিরঙ্কুশ ঐক্য ও সংহতির সর্বোচ্চ চূড়ায় নেওয়া যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের অখণ্ড গৌরবের এবং সাংস্কৃতিক সম্পদের পুনর্জাগরণ ঘটাতেই নানা মাত্রিক সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা সম্মেলনের আয়োজন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আর এসব আয়োজনে দু’দেশের যতো বেশি সংখ্যক জনগণকে সম্পৃক্ত করা যাবে ততোই বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বুনিয়াদ এক টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে সক্ষম হবে। দিনশেষে দুই দেশের জনগণের নৈকট্য বাড়লেই সরকারগুলোর নানামুখি প্রচেষ্টা কার্যকর হয়ে উঠবে। তাতে করে আমাদের ঐতিহ্যিক পরম্পরায় প্রাপ্ত, অসাম্প্রদায়িক, বিভেদমুক্ত, সমৃদ্ধ-মানবিক উপমহাদেশ নিশ্চিত হবে। সূচিত হবে প্রগতির সমাজ বিনির্মাণে বহুদিনের কাক্সিক্ষত জয়যাত্রা। 
উল্লেখ্য বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ এখন স্বাস্থ্য সেবা ও পর্যটনের জন্য ভারত ভ্রমণ করছেন। বাংলাদেশেও অনেক ভারতীয় ব্যবসা-বাণিজ্যে, চাকরি ও পর্যটনের জন্য আসছেন। বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার বাইরের ভিসা কেন্দ্রসমূহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের ভিসার ব্যবস্থা করছে। তাছাড়া সীমান্ত হাটগুলোতেও দু’দেশের মানষ শুধু পণ্যই বিনিময় করছেন না। তারা সম্প্রীতিও বিনিময় করছেন। একজন আরেকজনের সুখ-দুঃখও ভাগ করে নিচ্ছেন। এরই মধ্যে ভারতীয় মুদ্রা-রুপিতে বাংলাদেশ আমদানি করতে শুরু করেছে। আশা করি, মানুষে মানুষে এই যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক সংযোগ মিলে উভয় দেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের পরিসরে সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতে সাহায্য করবে। আর চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটকালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিচারে এই অঞ্চলের তথা বিশ্বের অন্যতম দুটো প্রবল গতিময় দেশ হাতে হাত ধরে এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির সোপানে সেই প্রত্যাশাই করছি। এই কথাগুলো বর্তমান সময়ে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। কেননা আমরা এখন এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক ও সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়