খালিদ খলিল শিমুল : [১] সুলুর সঙ্গে মান অভিমান থেকে সৃষ্ট মান্না দে’র বিখ্যাত গানÑ ‘তুমি অনেক যত্ন করে আমায় দুঃখ দিতে চেয়েছো’। ২৪ অক্টোবর এই কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী মান্না দে’র মৃত্যুবার্ষিকী। আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
[২] সুলু কিংবদন্তি শিল্পী মান্না দে’র প্রিয়তমা স্ত্রী। বোঝাপড়াটা ভালোই ছিলো স্ত্রীর সঙ্গে মান্না দে’র। প্রচণ্ড ভালোবাসতেন স্ত্রীকে।
[৩] একবার সুলু মানে সুলোচনার সঙ্গে মান্না দে’র মান-অভিমান হলো। সুলু স্বামী মান্নার উপর রাগ করে দুই মেয়ে নিয়ে চলে গেলেন বাপের বাড়ি। প্রতিজ্ঞা করে গেলেন, কিছুতেই আর ফিরবে না স্বামীর ঘরে।
[৪] মান্না দে তাঁর আত্মজীবনী ‘জীবনের জলসা ঘরে’ বইয়ের ৪ অধ্যায়ের ১২৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘আমিও দারুণ অভিমানে অনড় হয়ে রইলাম। ফিরিয়ে আনতে গেলাম না ওদের। কিন্তু মনে মনে বারবার বলেছি, সুলু ফিরে এসো। আর পারছি না থাকতে এভাবে। প্লিজ ফিরে এসো। সব ভুলে যাও। আবার শুরু করি নতুন করে। কিন্তু কিছুতেই আমার মনের বার্তা ওর কাছে পৌঁছালো না। আমার সেই মনোব্যথা দেখে পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখে ফেললেন, ‘তুমি অনেক যত্ন করে আমায় দুঃখ দিতে চেয়েছো, দিতে পারোনি’। সেই গানে সুর দিয়ে রেকর্ড করতে গিয়ে সে কী বিপওি। যতবার গাইতে যাই, শুধু কান্না এসে যায়। গাইব কী, শুধু কাঁদছি। যাহোকÑ সেই গান তো রেকর্ড হলো। সেই রেকর্ড সুলুর হাতেও পোঁছালো যথাসময়ে। সেই গান শুনে সব অভিমান ভুলে সুলু আবার ফিরে এলো আমার জীবনে। আমি ফিরে পেলাম, আমার সেই পরিচিত আকাশ, বাতাস আর পৃথিবী। সেই ফিরে পাওয়ার আনন্দেই তারপর আমি গাইলাম, ‘ধন্য আমি ধন্য যে, পাগল তোমার জন্য যে।’
[৫] এমন অসংখ্য হাসি আনন্দ, মান অভিমান, দুঃখ, কষ্টসহ জীবনের নানা কথাগুলো দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর আস্টেপৃষ্ঠে লেগে থেকে, সেগুলো গবেষণার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন ‘জীবনের জলসাঘরে’ বইতে। তিনি ড. গৌতম রায়। যাকে মান্না ছেলের ভালোবাসা দিয়েছিলেন। ড. গৌতম রায় এর মতো একজন যদি কেউ না থাকতেন তাহলে হয়তো মান্না দে’র অনেক অজানা কথা, ব্যথা, ভালোলাগা, ভালোবাসা অজানাই থেকে যেতো। লেখক: গণমাধ্যমকর্মী ও হাওয়াইয়ান গিটার শিল্পী। বাংলাদেশ উপদেষ্টা, মান্না দে সঙ্গীত একাডেমী, কলকাতা