শিরোনাম
◈ দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ সন্ত্রাসে জড়ালে, অসদাচরণ করলেই কঠোর ব্যবস্থা, কেউ রেহাই পাবে না : রিজভী ◈ শ্রমিক ভিসায় মালয়েশিয়ায় আইএস জঙ্গিদের তৎপরতা, অর্থ যেত বাংলাদেশ ও সিরিয়ায়: মালয়েশিয়ার আইজিপি ◈ কুমিল্লায় মা-দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি ◈ প্রশ্ন করেন খালেদ মুহিউদ্দীন ‘আপনি আফগানিস্তানের মতো বাংলাদেশ বানাতে চান?’ জবাবে ফয়জুল করীম বলেন, ‘হ্যাঁ, বানাতে চাই।’ ◈ ফিলিস্তিনের আরও এক ফুটবলার ইসরায়েলের হামলায় প্রাণ হারালেন, ২৬৪ ক্রীড়া স্থাপনা ধ্বংস ◈ রা‌তে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স ও সৌ‌দি আর‌বের আল হিলাল মু‌খোমু‌খি ◈ স্থিতিশীল বাজারে সবজি রপ্তানিতে রেকর্ড: এক বছরে প্রবৃদ্ধি ৩১৩%, শীর্ষে আলু ও বাঁধাকপি ◈ ঘরে বসেই অনলাইনে দেশ-বিদেশ থেকে পাগলা মসজিদে দান করা যাবে ◈ আলজাজিরার অনুসন্ধানে বাংলাদেশ-ভারত কিডনি পাচার চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ◈ রংপুর বিভাগে ৩৩ প্রার্থীর নাম ঘোষণা জামায়াতে ইসলামীর

প্রকাশিত : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৩ রাত
আপডেট : ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩, ০২:১৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সৃষ্টি এবং নির্মাণ

মঈন চৌধুরী

মঈন চৌধুরী: সৃষ্টি  প্রচলিত প্রথাবদ্ধ প্রতীকী শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। একজন মানুষ, যে প্রচলিত প্রথাবদ্ধ জাগতিক নিয়ম ও শৃঙ্খলার বন্দীত্ব স্বীকার করে বেঁচে আছে, সে নিঃসন্দেহে স্রষ্টা নয়। সে একটি নিরামিষ পতিত-সত্তা। কোন পতিত-সত্তার বিদ্রোহ হবে অমানবিক পারভারশন। সে ভেনাস কিংবা ম্যাডোনার ছবি দেখে মনে তুলে নেবে ধর্ষণের মোহ। তার ভাষা  হবে বাচাল নষ্ট সময়ের ধ্বনি। রামধনুতে সে কেবল দেখতে পাবে অস্ত্রের সংঘাত। স্রষ্টা হওয়া খুব একটা সহজ কিছু নয়।

সৃষ্টির রূপ ও স্ব্রুরূপ প্রকাশ করতে গেলে ভাষাকেন্দ্রিক প্রতীকী-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ মানুষের মনের জানালার কপাট খুলে দেখতে হবে প্রথমেই। এই সেই মানুষ, যে জাক লাকা কথিত ‘আয়না পর্ব’-র সময় থেকেই বন্দী  হয়েছে কতক সামাজিক, জৈবিক আর রাষ্ট্রিয় নিয়মের শৃঙ্খলে। কিন্তু সে মুক্তি চায়, অনিশ্চয়তাবদ্ধ ঠিকানাহীন বৈশ্বিক বস্তুবলয়ে অবস্থান করে সে চায় তার নিজস্ব অহংসত্তাকে নির্দিষ্ট সত্যমাত্রায় প্রকাশ করতে। যে নতুন ভাষায়, নতুন চিন্তায়, নতুন রঙে, নতুন ফর্মে সত্যকে তুলে ধরতে পারে, সেই হয় স্রষ্টা। 

কিন্তু মুশকিল হল, জাগতিক বাচাল ভাষায়, ক্লিশে রঙে, বহুল ব্যবহৃত ফর্মে কিংবা সাধারন গনিতে অহং-সত্যকে তুলে ধরা সম্ভব নয়। কেবলমাত্র  আপেক্ষিক মিথ্যা দিয়েই চরম সত্যকে উপস্থাপন  করা সম্ভব। এখানে বলা আবশ্যক  যে আপেক্ষিক মিথ্যা কিন্তু মিথ্যা নয়। জাগতিক বাচাল কিংবা অপরিচিত সত্যকে চরম সত্যরূপে প্রকাশ করার জন্যই আপেক্ষিক মিথ্যা ব্যাবহার  করা হয়। আপেক্ষিক মিথ্যা কিছু উদাহরণ  দিয়ে বোঝানো যাক। জীবনানন্দ দাশের ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার’, ‘পাখির নীড়ের মতো চোখ’, বিষ্ণু দের 'কাল রজনীতে ঝড় হয়ে গেছে রজনীগন্ধা বনে', আল মাহমুদের 'গাঙের ঢেউয়ের মত বল কন্যা কবুল কবুল', শামসুর রাহমানের 'দ্বিধাহীন আমি উড়ে গেলাম সূর্যের ঠোটে রক্ষাকবচহীন প্রার্থনার মতো', নিউটনের গঠ=গঠ,  আইনেস্টাইনের ঊ=গপ^২, দ্যালির আঁকাবাঁকা ঘড়ি, পিকাসোর ত্রিমাত্রিক  নারী, এইসব হল আপেক্ষিক মিথ্যার উদাহরণ।  একজন বোদ্ধা সত্তা যখন এই আপেক্ষিক মিথ্যা বোঝে, তখন তা নান্দনিক রস নিয়ে চরম সত্য হয়ে উপস্থিত  হয়।

সৃষ্টির সাথে নির্মানের সম্পর্ক সহজাত। সৃষ্টি করতে হলে ব্যাকরণ জানতে  হয়। এই ব্যাকরণই নির্মাণ, আর নির্মাণপর্বের কোন এক ধাপে সৃষ্টির  অবস্থান। ঐতিহ্য আর ব্যাকরণ জানা না থাকলেও নির্মাণের বৃথা চেস্টা করা যায়, কিন্তু ব্যাকরণ জানা না থাকলে  কিছুতেই নির্মাণকে সৃষ্টির পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। একজন স্রষ্টা নির্মাণের কৌশল  অবলম্বন  করে সৃষ্টি  করতে পারেন, আবার তার পক্ষে নতুন নির্মাণ কৌশল আবিষ্কার  করাও কঠিন কিছু নয়। আমাদের দেশে নির্মাণের কৌশল না জেনেই অনেকে স্রষ্টা হতে চান, আর তাদের তৈরি ‘বিষয় বা বস্তু’ সৃষ্টি  হিসেবে হাততালিও পায় প্রচুর। তাদের পুরস্কৃত  করার জন্য 'বটতলা' আছে, তাদের গুনগান করার জন্য আছে 'স্রষ্টা  সমিতি' আর প্রচারের জন্য আছে 'অন্ধকার কালো'। সৃষ্টির সঠিক মূল্যায়নের জন্য আমাদের প্রয়োজন সৃষ্টির তত্ত্ব জানা ভাল সমালোচকের। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়