কামরুল হাসান মামুন: নেচার ইনডেক্স গবেষণায় দেশ ভিত্তিতে একটি রেঙ্কিং করেছে। সেই রেঙ্কিং-এ চীন ১ নম্বরে, আমেরিকা দ্বিতীয় স্থানে, জার্মানি তৃতীয় আর ইংল্যান্ড চতুর্থ। আমেরিকা, জার্মানি ও ইংল্যান্ড আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের ইতিহাসে সর্বদাই ১ থেকে ৩ নম্বরে ছিল। এইবার নতুন বিশ্বে চীন এসে ১ নম্বরে চলে আসে। চলে আসার প্রথম সূত্র হলো প্রথমে কিছু ওয়ার্ল্ড ক্লাস বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউট বানানো। তারপর শিক্ষকতা ও গবেষণায় সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং এরপর ট্যালেন্ট হান্ট। আজ তারা তার সুফল পাচ্ছে। এইদিকে এশিয়ার মধ্যে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াও খুব ভালো করছে।
আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কার কি অবস্থান জানতে চান? নেচার ইনডেক্সে ভারতের অবস্থান ১০ মানে দক্ষিণ এশিয়ায় ১ নম্বরে। নেচার ইনডেক্সে পাকিস্তানের অবস্থান ৩৯ মানে দক্ষিণ এশিয়ায় দুই নম্বরে। নেচার ইনডেক্সে নেপাল ৮১ নম্বরে আর দক্ষিণ এশিয়ায় ৩ নম্বরে। নেচার ইনডেক্সে শ্রীলংকার ৮৭ অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় এর অবস্থান ৪ নম্বরে। আর বাংলাদেশ ১০৩! মানে দক্ষিণ এশিয়ায় গবেষনায় বাংলাদেশ তলানিতে। এই লজ্জা কোথায় রাখি? আর ভিয়েতনামের অবস্থান শুনবেন? ভিয়েতনামের অবস্থান হলো ৪৫! আর আমাদের সরকার বলে পৃথিবী নাকি আমাদের উন্নয়ন দেখে অবাক! শিক্ষায় জিডিপির ২% দিয়ে শিক্ষা ও গবেষণায় এর চেয়ে ভালো করা সম্ভব না। তারপর এখন যেই নতুন শিক্ষাক্রম চালু করতে যাচ্ছে সেটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের অবস্থান আরো তলানিতে নামবে।
হবে না কেন? যেখানে ইউনেস্কো বলে একটি দেশকে অন্তত তার জিডিপির ৫.৫% শিক্ষায় বরাদ্দ দেওয়া উচিত সেখানে আমরা দেই ১.৮% থেকে ২.১% এর মত। এই টাকার বেশির ভাগই চলে যায় চুরি চামারি আর অবকাঠামোর উন্নয়নে। সত্যিকারের শিক্ষা ও গবেষণায় তেমন ব্যবহারই করা হয় না। আমাদের miserable শিক্ষাও গবেষণার কথা বিবেচনায় নিয়ে এই খাতে উন্নতি করতে হলে আমাদের উচিত জিডিপির ৭% বরাদ্দ দেওয়া। আমরা মেগা প্রকল্প নেই অবকাঠামো উন্নয়নে। এর চেয়ে বড় বলদামি কি আর হয়? আগে দালানকোঠার অবকাঠামো বানাবো নাকি মানুষের ব্রেইন, মেধা গঠন করব? যতদিন আমাদের সরকারেরা এইটা না বুঝবে ততদিন আমরা তলানিতেই নামতে থাকব।
কেএইচএম/এসএ