গুলজার হোসেন উজ্জ্বল: যে পরিমাণ মানুষ টিএসসিতে বসে বিগস্ক্রিনে বিশ্বকাপ খেলা দেখে সেই পরিমাণ মানুষ কি এই সময়ে কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে জড়ো হবে? তরুণ ও ছাত্র সমাজের কোনো সংঘবদ্ধ মুভমেন্ট নেই। আন্দোলনের কোনো গ্রাউন্ড ওয়ার্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক কোনো আন্দোলন কার্যক্রম নেই। এর মধ্যে হঠাৎ দিন তারিখ দিয়ে সরকার পতনের উদ্দেশে সমাবেশের ডাক দিলে সেটা কতটা সফল হবে তা সত্যিই দেখার বিষয়। এর আগে একবার দিন তারিখ ঠিক করে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ফলাফল শূন্য। এক ইঞ্চি মার্চও করেনি কেউ। খোদ বিএনপি নেতাদের বাড়ির গলিতেও মার্চ হয়নি। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মন্তব্য করেছিলেন, এটা ছিল শফিক রেহমানের উর্বর বুদ্ধি। প্রস্তুতি ছাড়া এরকম আন্দোলনের ডাক দেওয়া সংশ্লিষ্ট দলের রাজনীতির জন্যই ক্ষতিকর। আমরা দেখেছি এরপর ‘বিএনপির আন্দোলন’, ‘ঈদের পর কঠোর আন্দোলন’ এই শব্দগুলো রীতিমতো কৌতুকে পরিণত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকও একবার দিন তারিখ দিয়ে ট্রামকার্ডের ঘোষণা দিয়ে কার্যত নিজের ক্রেডিবিলিটি নষ্ট করেছিলেন।
সমাবেশের ডাক পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু যারা অতি উৎসাহী হয়ে ১০ ডিসেম্বরে সরকার পতন ঘটিয়ে দেবার আহ্বান করছেন, ভবিষ্যৎবাণী করছেন, মকারি করছেন তারা আসলে কোন এজেন্ডা নিয়ে করছেন বুঝতে পারছি না। বাংলাদেশের সকল আন্দোলনের হোতা মূলত শিক্ষিত, প্রগতিশীল, মধ্যবিত্ত সমাজ। সমাজের এই অংশটুকুকে কতটা মোবিলাইজ করা সম্ভব। তারা কি সরকার পতন আন্দোলন নিয়ে আদৌ মোটিভেটেড। বাংলাদেশের কেউ কি এখন পলিটিক্সের জন্য আদৌ স্যাক্রিফাইস করতে প্রস্তুত? যদি তা না হয় তাহলে এই আন্দোলনের ডাক ওভার হাইপড হিসেবে গণ্য হবে। বিএনপি তথা সরকারবিরোধী রাজনীতি যে ক্ষতির মুখে পড়বে তা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। আপাতত দশ ডিসেম্বরের জন্য অপেক্ষা করছি। দেখা যাক কি হয়। লেখক: চিকিৎসক