কল্লোল মোস্তফা: তাজরীন ফ্যাশনসের অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১১৭ জন পোশাকশ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা ২০১২ সালের। মালিক পক্ষের চরম গাফিলতির কারণেই এতজন শ্রমিকের অকাল মৃত্যু হয়েছিলো। কারখানা ভবনের বাইরের দিকে কোনো সিড়ি বা ফায়ার এস্কেপ বলে কিছু ছিল না, তার উপর আগুন লাগার পরপরই কলাপসিবল গেটগুলোর তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও মালিকÑকর্তৃপক্ষের শ্রমিক নিরাপত্তা বিষয়ে সার্বিক অবহেলাকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয়। এইরকম একটি সুস্পষ্ট অপরাধের ঘটনার ১০ বছর পার হলেও বিচার শেষ হয়নি। বিচারের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা ছিল শুরু থেকেই। শতাধিক শ্রমিক হত্যার মামলার অভিযোগ গঠন করতেই পার করা হয় ৩ বছর। এরপর শুরু হয় স্বাক্ষগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা। এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য সর্বমোট ৪৬টি তারিখ ধার্য হয় যার মধ্যে মাত্র ৯ দিন রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে পেরেছে। অভিযোগপত্রে উল্লিখিত ১০৪ জনের মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে মাত্র ৯ জনের।
সর্বশেষ সাক্ষ গ্রহণের তারিখ ছিল ৪ অক্টোবর, সেদিনও সাক্ষ গ্রহণ করা হয়নি। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ দেওয়া হয়েছে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৩। এই গতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ চললে আগামী ১০০ বছরেও বিচার শেষ হবে না। অন্যদিকে মামলার মূল আসামি তাজরীনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে জামিনে আছেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর মৎস্যজীবী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়েছেন এবং গত মে মাসে তাকে সংগঠনটির সভাপতিও নির্বাচিত করা হয়েছে। শতাধিক শ্রমিক পুড়িয়ে কয়লা বানানোর এইরকম একটা মামলা নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা এবং মামলার মূল আসামীকে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা বানিয়ে পুরস্কৃত করার ঘটনা থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন সরকারের আগ্রহ কতোটুকু। ফেসবুক থেকে