শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১৭ মে, ২০২৪, ০২:৫৩ রাত
আপডেট : ১৭ মে, ২০২৪, ০২:৫৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অল্পস্বল্প জীবনপাঠ : প্রগতি কী?

মঈন চৌধুরী

মঈন চৌধুরী: আমি আমার এক লেখায় লিখেছিলাম প্রগতির বিপরীতে প্রতিক্রিয়া থাকবেই। প্রতিক্রিয়াকে  প্রগতির পক্ষে আনাই হল প্রগতিশীলদের কাজ। আমার স্ট্যাটাস পড়ে একজন আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন প্রগতি বলতে আপনি কি বোঝেন? প্রশ্নটির উত্তর দেয়া কিছুটা কঠিন,কারণ আমাদের দেশের অনেক পণ্ডিত  শ্রেণীর  প্রগতিশীলরাও এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেননা। তারা হয়তো বলতে চাইবেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিশ্বাস করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থেকে সংস্কৃতিবান হওয়াটাই প্রগতিশীলতার লক্ষণ। কিন্তু আমরা বর্তমানে যে সমাজে আছি সেখানে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ আর ‘সংস্কৃতিবান’ শব্দযুগলের অর্থ বিনির্মিত হয়ে নতুন দ্যোতনা সহ উপস্থিত হয়েছে। এখানে এখন মুক্তিযুদ্ধেরপক্ষে থাকার অর্থ হল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে কিছু না জানা, আর সংস্কৃতিবান হবার পূর্বশর্ত হল বাঙালি জাতিয়তাবাদ বিশ্বাস না করে বিভিন্ন অপসাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেযোগ দেয়া। আমরা বাঙালি জাতীয়তাবাদ আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জনগনের মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোতে প্রগতিশীল চিন্তা সহ যুক্ত করতে ব্যার্থ হয়েছি। এখনো মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে এমন সহজ সরল জনগন মুক্তিযুদ্ধের সময়টাকে বলে ‘গণ্ডগোলের বছর’ আর জাতীয়তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় ভুগছে অস্তিত্তের সংকটে।

তারা নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে প্রাথমিক ভাবে বলছে ‘আমি চাটগাইয়া’, ‘আমি নোয়াখাইলা’,‘আমি ময়মনসিংগা’ কিংবা অন্য কোন অঞ্চলিক ভূগোল গ্রাহ্য  করে। তারা ভাল ভাবেই বুঝতে পারছে যে তারা বাংলাদেশী, কিন্তু তা জানার পরেও তাদের আরও কিছু প্রশ্ন থাকছে। তারা প্রশ্ন করছে আমি কি মুসলমান, নাকি বাঙালি মুসলমান, নাকি শুধুই  বাঙালি! আমাদের দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আর আদিবাসী সম্প্রদায়ও ধর্মীয় আর সাম্প্রদায়িক কারনে তাদের  জাতীয়তা নিয়ে সন্তুষ্ট হতে  পারছে না। তারা বাংলাদেশী হয়ে তাদের সমস্ত নাগরিক অধিকার নিয়ে নিজ নিজ জাতির নামে পরিচিত হতে চায়। আজ আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অন্তর্ভুক্ত ধর্মনিরপেক্ষতা হয়ে গেছে অর্থহীন। প্রগতিশীল দল কিংবা তাদের  পণ্ডিতরা জনগণকে বোঝাতে পারেনি যে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ আর ‘ধর্মমহীনতা’ এক জিনিষ নয়। সমাজ-সংস্কৃতি বলতে যে ধর্ম, সামাজিক নিয়ম কানুন,পুজাপার্বণ, সুখদুঃখ, আনন্দ উৎসব সবই বোঝায়, তা মানতে চায় না প্রগতিশীল গোষ্ঠী। 

বাংলাদেশের সমাজদর্শনে কোন কালেই যে নাস্তিকতাবাদ গ্রাহ্য করতো না, এ সত্যকে আমরা  হয়তো বুঝতে চাই না। অনেক প্রগতিবাদী ধর্মভীরু জনগণকে ভাবে প্রতিক্রিয়াশীল, আর এই ‘প্রগতি/প্রতিক্রিয়া’ যুগ্মবৈপরীত্যকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয় ধর্মবাদী শক্তি। হাটে, ঘাটে, গ্রাম, গঞ্জে তৈরি হয়  মাদ্রাসা, এতীমখানা, লিল্লাহ বোর্ডিং, আর প্রগতিবাদীর দল কেবলমাত্র শহর কেন্দ্রিক মিটিং, সেমিনার, সভা, মঞ্চ, মানব বন্ধন ইত্যাদি করে, গান শুনে আর কাঁচা মরিচ দিয়ে পান্তা ভাত খেয়ে নিজেদের ভাবে সমাজ পরিচালনার কল্পিত প্রগতিশক্তি। আমি আমার প্রগতিশীলবন্ধুদের বলবো, বাংলাদেশের জনগণকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে বুঝে তাদের অস্তিত্বের সংকট থেকে বাঁচান, তাদের বোঝান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি, তাদের বলুন জাতীয়তাবাদ কি ও কেন। প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে থামানো যাবে না, প্রগতিশীল চিন্তা  দিয়েই প্রতিক্রিয়াকে থামাতে হবে, এ সত্যটা আপনাদের বুঝতে হবে। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়