শাকিব মুস্তাভী: দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইক্যুয়েডর। সেদিন ইক্যুয়েডরের একটা স্ট্রিট মার্কেটের ভিডিও দেখছিলাম। মার্কেটটা ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা এশিয়ার শিল্পোন্নত দেশগুলোর সুপার মার্কেটগুলোর মতো নয়, অনেকটা আমাদের দেশের হাটবাজারের মতো। দোকানিরা রাস্তার পাশে শাক-সবজি ফলমূল নিয়ে বসে আছে। মানুষজন সেগুলো কিনছে। হঠাৎ দুইটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে চোখে পড়ল। এক মানুষের পোশাক পরিচ্ছদ। দুই বাজারের পরিবেশ। মানুষগুলোকে দেখে ধনী মনে হল না, কিন্তু সবার পোশাক অনেক পরিপাটি। পায়ে কেডস। বাজারটা বাংলাদেশের টিপিক্যাল হাটবাজারের মতো নোংরা নয়, রাস্তাঘাট অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। ইক্যুয়েডরের অর্থনীতি খুব বেশি মজবুদ নয়। মানুষের মাথাপিছু আয় যে খুব বেশি তা কিন্তু নয়। কাগজে-কলমে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু ক্রয়ক্ষমতা বছরে সাড়ে ৭ হাজার ডলার। অন্যদিকে ইক্যুয়েডেরের মাথাপিছু ক্রয়ক্ষমতা সাড়ে ১২ হাজার। কিন্তু জীবনযাত্রার মানের যে পার্থক্য চোখে পড়ল, তাতে মাথাপিছু আয়ের এই ব্যবধানটা মনে হবে তিন-চার গুণ।
দামের কারণে মানুষ মাংস কিনতে না পারার অভিযোগ করলে শোনান হয় মাছ-ভাত, ডাল-ভাতের অভাব নাই বলে জনগণ মাংস খাওয়ার আবদার করছে। বাংলাদেশের মানুষকে প্রতিনিয়ত বোঝানো হয় তারা ভালো লাইফ ডিজার্ভ করেনা। কয়েকটা বড় ইমারত আর চাইনিজ স্মার্টফোন যদি উন্নয়নের মানদণ্ড হয় তাহলে বিশ বছর আগের বাংলাদেশের সাথে তুলনা এখনকার বাংলাদেশ উন্নত। কিন্তু বাকি দুনিয়া গত ২০ বছরে যেভাবে উন্নতি করেছে সেটা আমলে নিলে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান মোটেও সন্তোষজনক নয়। উন্নয়নের ফেরিওয়ালারা নানা রকম কুতর্ক জুড়ে দিবে। এই অনর্থক তর্কে না গিয়ে একটা সোজা কথা বলি। সরকারি চাকরি না পেলে একটু ভালো জীবন যাপনের আশায় তরুণরা যে দেশ ছেড়ে পালাতে চায়, এটাই উন্নয়নের ফাঁকাবুলির অন্তঃসারশূন্যতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ৫-৫-২৪। ফেসবুক থেকে