খালিদ আহমেদ: হিলারি ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে বিপুল অর্থ কীভাবে অনুদান দিয়েছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
জাতীয় সংসদে সম্প্রতি ড. ইউনূসের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন সরকারদলীয় এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, ‘একজন ডাক্তার আছে। নাম হইল ডক্টর ইউনূস। উনি পশুর ডাক্তার না মাছের ডাক্তার না গরুর ডাক্তার না বাংলাদেশের মানুষের সর্বনাশের ডক্টর? শেখ সেলিম বলেন, উনি শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। যত অশান্তি উনি বাংলাদেশে ঘটাবার জন্য এই পর্যন্ত যা করছে, বাংলাদেশের পায় পয়সাও উন্নতি করেও নাই, ভালো করে নাই; ক্ষতি করে গেছে।
অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক আরও বলেন, ‘আজকে আমি অর্থমন্ত্রীকে বলব, উনি (ড. ইউনূস) যে ছয় মিলিয়ন (৬০ লাখ) ডলার ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে দিয়েছে, ওই টাকা উনি কোত্থেকে দিল, এইটা আপনি তদন্ত করেন।’
ড. ইউনূস ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়েছেন বলে ২০১৬ সালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে, তবে তিনি কী পরিমাণ অর্থ ফাউন্ডেশনে দিয়েছিলেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানা যায়নি।
জাতীয় সংসদে শেখ সেলিম অনুদানের সে অর্থের উৎস অনুসন্ধানের যে দাবি করেছেন, তা নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান এক সাংবাদিক।জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা অনেক তদন্ত করেন। আপনারা একটু করেন না। আপনার এত কিছু লেখেন আপনার একটু করেন। একটা ব্যাংকের এমডি, আমাদের তো প্রায় ৫৪টা প্রাইভেট ব্যাংকের এমডি আছে। কার এত আর্থিক সংগতি আছে যে একজন এমডি একটা ফাউন্ডেশনে এত ডলার দিল একটা অনুদান দিল বা এত টাকা খরচ করল কীভাবে? তো সেটা আপনারা তদন্ত করলে ভালো না? আমি করতে গেলে বলবেন প্রতিহিংসা শিকার করার জন্য করছি, ইত্যাদি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা যদি খুঁজে বের করেন, সেটা ভালো হয়। আরও তথ্য আছে, কোন ব্যাংকে কত টাকা আছে, কোন চেকে কত টাকা সরাল, সব তথ্য আছে। বের করেন সব আমরা বলব কেন? আপনারা খুঁজে বের করেন। তারপর কিছু লাগলে জোগাল দেব।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আগে নিজেরা বের করেন বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে কত আছে। বিশাল বিশাল চেক, একটা ফাউন্ডেশন বা ট্রাস্ট করে ট্রাস্টের টাকা একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চলে যায় কীভাবে? এক চেকে ছয় কোটি টাকা তুলে নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে আমরাও একটা ট্রাস্ট চালাই, কিন্তু সেখান থেকে ব্যক্তিগতভাবে টাকা তোলার রাইট আমার নেই। আমি ট্রাস্টের চেয়ারপারসন, কিন্তু আমি তুলতে পারব? কিন্তু আমার কাছে এ তথ্যও আছে, ট্রাস্ট থেকে ছয় কোটি টাকা নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে নিয়ে, তারপর সেই টাকা ভ্যানিশ। শেখ হাসিনা, বেশিদিন আগের কথা না। ২০২০ সালের কথা। চান তো তারিখ, অ্যাকাউন্ট নম্বর সব আছে। সে কথা বলতে চাই না। আপনারা বের করেন। এত স্বনামধন্য বিখ্যাত ব্যক্তি, আমরা তো লেখাও জানি না, পড়াও জানি না, কিছুই জানি না। আমাদের তো এত বলা শোভা পায় না, তাই না? এত জ্ঞানী তো না। সাধারণ একটা মানুষ। নিরেট বাঙালি একটা মেয়ে। তাও আবার বাংলায় পড়ছি; বাংলায় পাস করছি।’