বাবুল খান, বান্দরবান : বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালের দিকে থেমে থেমে ভারি অস্ত্রের গুলির শব্দ শোনা যায়, দুপুর ১২টার দিকে বাড়তে থাকে মর্টারশেলের গোলা বিস্ফোরণের আওয়াজ। এদিকে প্রকট মর্টার শেলের আওয়াজে আতংকিত হলেও তুমব্রু সীমান্তের স্থানীয়রা গুলির শব্দের সাথে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে, আবার অনেকেরই কাটছে নির্ঘুম রাত।
বিস্ফোরণের আওয়াজে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশীদের আতঙ্ক যেন কিছুই কাটছে না। এদিকে স্থানীয় কৃষক জুমচাষীরাও আছে আতংকে তারা তাদের ক্ষেত খামারেও যেতে না পারায় জীবন হয়ে উঠছে কঠিন, থমকে যাচ্ছে তাদের নিত্য দিনের কাজকর্ম।
শুধু চাষীরা নয় এই প্রভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে স্থানীয়দের জীবন যাত্রায়ও। এতে সাধারণ মানুষ এক দিকে আতংকিত অন্যদিকে দিশেহারা পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, আমতলী, ফাত্রাঝিরি, চাকমা পাড়া সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ তৈরি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। সীমান্ত চৌকিগুলো থেকে আশপাশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে বাড়ানো হয়েছে বিজিবি টহলও।
স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হতে বলছে।
স্থানীয় সীমান্তে বসবাসরত যুবক বেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সীমান্তের উত্তেজনায় কাটছে নির্ঘুম রাত।
কোনদিন বাবা কোন দিন ভাই কোন সে নিজেই নির্ঘুম রাত কাটিয়ে বাড়ির অন্যদের নিরাপত্তার জন্য সতর্ক থাকেন বলে জানান। এভাবে সীমান্তের উত্তেজনায় অনেকেই আছে নিরাপত্তার জন্য অন্যত্রে আত্বীয় স্বজনের বাসা বাড়িতে চলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের এক নাম্বার ওয়ার্ডেও ইউপি সদস্য মেম্বার সফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত তুমব্রু সীমান্তে কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি। তবে সাড়ে ৯টা থেকে দফায় দফায় ভারি অস্ত্রের ফায়ারিং এবং মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে।
কিন্তু অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সরকারি বাহিনী এবং সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যকার হামলার ভয়াবহতা কমেনি।
তাই তুমব্রু সীমান্তের এপারে বিকট শব্দের মাত্রা বেড়ে চলেছে। কিন্তু এলাকাবাসীরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষন করছি। বুধবার গোলাগুলির শব্দ খুব কম শোনা গেলেও বৃহস্পতিবার তা বেড়ে গেছে।
তবে সীমান্তের যে কোনো পরিস্থিতির জন্য সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় তাৎক্ষনিক করণীয় বিকল্প চিন্তা ভাবনাও রয়েছে সরকারের।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদকে জানান। সম্পাদনায় : আল আমিন
আপনার মতামত লিখুন :