শিরোনাম
◈ গণভোট আগে না হলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না: তাহের ◈ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শেষ, রায়ের দিন ধার্য হবে কাল ◈ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরলে সংসদের ক্ষমতাকে খর্ব করবে কিনা, প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির ◈ সচল ১৬ স্থলবন্দরে ১ কোটি ৫২ লাখ টন পণ্য আমদানি, ৮ বন্দর নিষ্ক্রিয় ◈ ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট ◈ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে উৎসবমুখর, জার্মান রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ ১২ নির্দেশনা মানতে হবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে  ◈ সরকারের দলীয় উপদেষ্টা ও প্রশাসনের ব্যক্তিদের বদলাতে হবে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ◈ এএফ‌সি কা‌পের বাছাই‌য়ে ভারতের বিরু‌দ্ধে খেলার আ‌গে আফগানিস্তানের স‌ঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ◈ ট্রফির দরকার হ‌লে পু‌রো দল দুবাই এসে নিয়ে যাও, ভারতের মেইলের জবাবে এ‌সি‌সি প্রধান মহ‌সিন নাকভি

প্রকাশিত : ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ০১:১১ রাত
আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৫৯ বিকাল

প্রতিবেদক : মনিরুল ইসলাম

তিস্তা চুক্তি সই হয়নি, ভারতের সঙ্গে কিছু চুক্তি বাতিলের বিষয় নিশ্চিত করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন

মনিরুল ইসলাম: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০-২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির খসড়া হয়, কিন্তু এখনো প্রস্তাবিত চুক্তিটি সই করা সম্ভব হয়নি।

তিনি ভারতের সঙ্গে কিছু চুক্তি বাতিলের কথা স্বীকার করেন। 

মঙ্গলবার বিকালে  সেগুনবাগিচায় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা  বলেন, যে তালিকাটা এসেছে, এটা কোনো একজন দিয়েছেন, সার্কুলেট  করেছেন। সেটা একজন অ্যাডভাইজার রিটুইট করেছেন একটা কমেন্টসহ। সেই কমেন্টটা নিয়ে আমি কোনো কমেন্ট করতে চাই না। তবে উনি এটা না করলেও পারতেন। 

তিনি জানান, যে তালিকাটা এসেছে ওখানে, সেটা পুরোপুরি সঠিক নয়। এর অধিকাংশ (তালিকার চুক্তি) এক্সিস্ট করে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন- তালিকায় বর্ণিত অধিকাংশ চুক্তির বর্তমানে অস্তিত্ব নেই, এগুলো আগেই বাতিল হয়েছে। 

ক্যাটাগরিক্যালি তিনি কিছু চুক্তির কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানি জিআরএসই’র সঙ্গে টাগ বোট চুক্তি পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে। এটি অনেক আগেই বাতিল হয়েছে। তবে কয়েকটি চুক্তি বাতিল না হলেও বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। তবে ঠিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে শিরোনামে তা প্রচার করা হয়েছে সেভাবে নেই।

অন্যরকম ডেসক্রিপশনে (বিবরণ) আছে। সোমবার স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেন- অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পরই চুক্তিগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং যথাযথ পর্যালোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা তার ভেরিফায়েড পেজে একটি তালিকাও পোস্ট করেন। যার শিরোনামে লেখা হয়, ‘হাসিনা সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে করা ১০ চুক্তি বাতিল, বাকিগুলোও বিবেচনাধীন।’ 

যে সমঝোতা সই করে দেশ জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সেই সমঝোতা স্মারকটিও বাতিল করেনি! পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থগিত দেখানো হয়েছে। ঠিক এই নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে অভিন্ন কুশিয়ারা নদী থেকে পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০২২ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সমঝোতা স্মারকটি এখনো বহাল আছে। 

নিশ্চয়তা ব্যতিরেকে আচমকা ফেনী নদীর পানি ভারতকে দিয়ে দেয়ার ওই একতরফা সমঝোতা সই করে দেশ জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন শেখ হাসিনা। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সেই সমঝোতা স্মারকটিও বাতিল করেনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন প্রকল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থগিত দেখানো হয়েছে। ঠিক এই নামের কোনো প্রকল্প নেই। তবে অভিন্ন কুশিয়ারা নদী থেকে পানি প্রত্যাহার বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০২২ সালে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সমঝোতা স্মারকটি এখনো বহাল আছে। 

বন্দর ব্যবহারে সড়ক ও নৌ-পথের উন্নয়ন বিষয়ক একটি চুক্তি বাতিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারিত তালিকায়। হুবহু ওই নামের কোনো চুক্তি না থাকলেও  চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৮ সালে একটি চুক্তি সই হয়। যা বাতিল হয়নি বরং বলবৎ আছে বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন- ফারাক্কা বাঁধসংক্রান্ত প্রকল্পে বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাতিল দেখানো হয়েছে। এ রকম কোনো প্রস্তাবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় অবগত নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিলেট-শিলচর সংযোগ প্রকল্প বাতিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সত্যিকার অর্থে এ রকম কোনো প্রকল্প নেই।

পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন সমপ্রসারণ সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তিই হয়নি। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের আওতায় ভারতের নুমালীগড় থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত যে পাইপলাইন আছে, তা সম্প্রসারণের জন্য ভারতের সঙ্গে একবার প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন- কিন্তু না, সেই সময়ে এ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি বা সমঝোতা হয়নি। ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্প (মিরসরাই ও মোংলা) বাতিল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন- হ্যাঁ, ভারতীয় ঋণচুক্তির (এলওসি) আওতায় ওই প্রকল্পের অর্থায়নের বিষয়টি বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান।

আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুনর্বিবেচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চুক্তিটি পুনর্বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি (১৯৯৬) নবায়ন/পুনর্বিবেচনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারিত তালিকায়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন- ২০২৬ সালে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হবে। চুক্তি নবায়নের জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা হবে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি (খসড়া) (২০১১): বাস্তবায়নে আলোচনা চলমান বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে। বাস্তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১০-২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির খসড়া হয়, কিন্তু এখনো প্রস্তাবিত চুক্তিটি সই করা সম্ভব হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়