শিরোনাম
◈ সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ : ডিএমপি ◈ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত: রেমিট্যান্স ও রফতানিতে নজরকাড়া অগ্রগতি ◈ মানুষ রোজা রাখবে নাকি নির্বাচনের প্রচারণা করবে, প্রশ্ন রিজভীর (ভিডিও) ◈ তানিনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক! ◈ ফের ছড়িয়ে পড়েছে করোনা, মহামারির শঙ্কায় বিজ্ঞানীরা ◈ ‘তাণ্ডব’ দেখতে গিয়ে সিনেমা হলে দর্শকদের তাণ্ডব ◈ এভারেস্টের পাদদেশে কিং কোবরার হানা: জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ বার্তা দিচ্ছে নেপালের পার্বত্য অঞ্চল ◈ নেইমার করোনায় আক্রান্ত. আ‌ছেন আই‌সে‌ালেশ‌নে ◈ চার দিনের সরকারি সফরে কাল সোমবার যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা  ◈ টেস্ট ক্রিকেটের চে‌য়ে প‌রিবা‌রের পেট চালানো জরুরি: আ‌ন্দ্রে রাসেল

প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২৫, ০৭:০৫ বিকাল
আপডেট : ০৮ জুন, ২০২৫, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে সরকারের সামনে যত চ্যালেঞ্জ 

বিসিসি বাংলার প্রতিবেদন।। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছেন। তবে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো এই সময়সীমা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে।

যদিও শেষ পর্যন্ত সব দল এই সময়সীমা মেনে নেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে, তবে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সরকারকে আগামী দশ মাসে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

মূল চ্যালেঞ্জগুলো কী?: রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া এই অল্প সময়ে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণসহ বেশ কিছু জটিল প্রশাসনিক কাজ শেষ করা নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন ‘ইতিহাসের সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য সকল পক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি।’

যদিও প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচনের সময়সীমাই বিতর্কের মুখে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই সময় নির্ধারণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের মতামতকেই তিনি উপেক্ষা করেছেন।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে জুলাই সনদসহ সংস্কার পরিকল্পনা দ্রুত চূড়ান্ত করা সম্ভব।

যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে: বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে- এমন বিশ্বাস তৈরি করাই সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাবি অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, সরকারকে নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে হবে। ইতোমধ্যে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে, যা আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিএনপি সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছে। জামায়াতের পক্ষ থেকেও ‘ভোট ডাকাতি’র আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে।

ঢাবির আরেক বিশ্লেষক সাইফুল আলম চৌধুরী বলেন, সরকার এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে পারেনি। একদিকে জামায়াত ও এনসিপি প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে, অন্যদিকে বিএনপি বলছে, সরকার পক্ষপাতদুষ্ট। এর মাঝেই সরকারের ওপর নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব।

সংস্কার ও বিচার : বাস্তব অগ্রগতি কোথায়?: প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তারা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন- এই তিনটি ম্যান্ডেট নিয়েই দায়িত্ব নিয়েছেন। রোজার ঈদের আগেই এসব বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এগারো মাসে সংস্কার কার্যক্রমে বাস্তব অগ্রগতি কম এবং ‘সময়ক্ষেপণ’ই যেন বেশি হয়েছে। জুলাই সনদ অনুসারে সংস্কার শুরু হলে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য সময় আরও সংকুচিত হবে।

নির্বাচন কমিশন এখনো শুধু আংশিকভাবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছে, অন্য কাজগুলো পিছিয়ে আছে। তবে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশন প্রস্তুত।

আওয়ামী লীগ ও অন্তর্ভুক্তির চ্যালেঞ্জ: সম্প্রতি ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন’ বলতে তারা রাজনৈতিক দল নয়, সব ভোটারের অংশগ্রহণ বোঝেন। অর্থাৎ, দেশের প্রতিটি ভোটার যেন নির্বিঘ্নে ও স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেটাই মূল বিষয়।

তবে বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটপ্রাপ্তির হার ছিল ৩০-৪০ শতাংশ। এখন দলটি নিষিদ্ধ থাকায় তাদের ছাড়া নির্বাচন আয়োজন করলে সেটিকে কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক বলা যাবে- সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই গুরুতর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বিএনপিকে বাইরে রেখে নির্বাচন হয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেলেও দেশের জনগণের দৃষ্টিতে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ছিল না। তিনি মনে করেন, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হলে জনগণের আস্থার জায়গা আরও দুর্বল হতে পারে। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়