আনিস তপন: [২] সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ কেন্দ্র রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এমন আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার দুপুরের পর এ তথ্য জানিয়েছে তারা।
[৩.১] ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে জানিয়ে প্রািতমন্ত্রী বলেন, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎ সংকেত জারি করা হয়েছে।
[৩.২] প্রতিমন্ত্রী বলেন, পেছনের অভিজ্ঞতা দিয়ে অধিক সক্ষমতা নিয়ে রেমাল মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। সরকারি নির্দেশনা সবাই আন্তরিকতভাবে অনুসরণ করলে এই দুর্যোগও আগের মতো সক্ষমতার সঙ্গে মোকাবিলা করা যাবে।
[৪.১] এ সময় মহিববুর রহমান সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, সময় নষ্ট না করে অনতিবিলম্বে কালক্ষেপণ না করে যে সকল এলাকা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব এলাকার সবাই এক্ষুনি নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
[৪.২] রেমালের প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর জেলা সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।।
[৪.৩] সরকার ইতোমধ্যে আট থেকে নয় হাজার আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে প্রস্তুত রেখেছে। সব আশ্রয়কেন্দ্রে ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার বিস্কুট, পানি ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
[৪.৪] ইতোমধ্যে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আট লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তাছাড়া উপকূলীয় এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি এলাকার মানুষকে আশ্রয়ের জন্য সহযোগিতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
[৫] মধ্যরাতের মধ্যে ঝড়ের মূল অংশটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। উপকূল অতিক্রমের সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। ঝড়ের সময় উপকূলীয় এলাকায় ১০ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। জোয়ার থাকলে এটি আরও বেশি হবে। সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকায় ঝড়ের কারণে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
[৬] ঝড় শুরুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ব্যাপকভাবে ভূমিধস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। শহর-গ্রাম, সিটি করপোরেশন, পৌরসভায় জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যানজট হতে পারে, স্বাভাবিক যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। লঞ্চ-স্টিমার বন্ধ থাকবে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টানেলও বন্ধ থাকেবে।
[৭.১] ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী জানান,ঝড় পরবর্তী সময়ে কাজ করার জন্য মেডিকেল টিমসহ সেনাবাহিনী দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে তৈরি হয়ে আছে।
[৭.২] এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অধীন দফতর-সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এটি/এসসি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :