আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরিশ্রমনির্ভর করে সৃষ্টি করেছেন। তাই দিনের বেলায় নানা কাজ শেষে রাতে মানুষ বিশ্রাম নেয়। প্রশান্তিময় বিশ্রামের সর্বোত্তম উপায় হলো ঘুম। তবে শোয়ার আগে শরীর ও মনকে পবিত্র করে নেওয়া উচিত। আর তাই অজু করে ঘুমানো আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এই সুন্নত পালনে শুধু আত্মিক শান্তিই মেলে না, বরং আল্লাহর ফেরেশতারাও শয়নকারীর জন্য দোয়া করতে থাকেন।
মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অজু করে শয্যা গ্রহণ করে, তার শরীরের সঙ্গে থাকা কাপড়ের মধ্যে একজন ফেরেশতা রাত কাটান। যখনই সেই ব্যক্তি ঘুম থেকে জেগে ওঠে, তখন ফেরেশতা বলেন—হে আল্লাহ, আপনি অমুক বান্দাকে ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয়ই সে অজু করে শয়ন করেছে।’ (ইবন হিব্বান)। এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, যখন কোনো ফেরেশতা কোনো ব্যক্তির কল্যাণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, তখন তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অজু করে ঘুমানোর কারণে ফেরেশতা সেই ব্যক্তির জিম্মাদার হয়ে যান।
শুধু তাই নয়, অজু করে ঘুমানোর আরও একটি বড় ফজিলত রয়েছে। কোনো ব্যক্তি যদি শোয়ার আগে নির্দিষ্ট কিছু দোয়া পাঠ করে এবং এরপর অজু করে ঘুমায়, তাহলে রাতের বেলায় ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণকর কিছু চাইলে তিনি তাকে ফিরিয়ে দেন না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যেকোনো মুসলমান রাতে জিকির-আজকার তথা বিভিন্ন দোয়া পাঠ করে এবং অজু করে শোয়, সে যদি রাতে জেগে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করে, তাহলে তিনি তাকে তা দান করেন।’ (সুনানে আবু দাউদ)
অজু করার মাধ্যমে ব্যক্তির ছোট ছোট গুনাহগুলো ঝরে পড়ে। ফলে তার অন্তর পবিত্র ও শান্ত হয়। এমন পবিত্র অবস্থায় ঘুমাতে গেলে মন ও শরীর এক ভিন্ন ধরনের প্রশান্তি লাভ করে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য এই আমল আমাদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠতে পারে।