ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদ হুমায়ুন কবিরের উদ্যোগে বাবরি মসজিদ নির্মাণে দানের ঢল নেমেছে। বেলডাঙার জনসভাস্থলে রাখা ১১টি স্টিলের দানবাক্স মাত্র দুই দিনেই পূর্ণ হয়ে যায়।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিশেষ মেশিন দিয়ে দান গণনার কাজ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত চারটি বাক্স ও একটি বস্তা থেকে পাওয়া গেছে ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার রুপি। শুধু নগদ নয়, অনলাইনেও এসেছে বিপুল দান। কিউআর কোড স্ক্যান করে ইতোমধ্যে সংগ্রহ হয়েছে আরও ৯৩ লাখ রুপি।
ওই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপও তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ইতোমধ্যেই হুমায়ুন কবিরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। ৬ ডিসেম্বর তিনি বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিশাল সেই অনুষ্ঠানে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের জন্য ‘শাহী বিরিয়ানি’র আয়োজন করা হয়েছিল।
সেদিনই স্থাপন করা হয় ১১টি বড় দানবাক্স। হুমায়ুন তার অনুসারীদের মসজিদ নির্মাণে সহযোগিতার আহ্বান জানালে শুরু হয় দানের প্রবাহ। তার দাবি, ‘মানুষ মন খুলে দান করছেন’—এবং দানের পরিমাণ কয়েক কোটি রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
দাতাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক দিয়েছেন ১ কোটি রুপি। এক শিল্পপতি ৮০ কোটি রুপি দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তবে শর্ত হিসেবে জানিয়েছেন—তার নাম যেন প্রকাশ না করা হয়। অর্থাৎ তিনি গোপনভাবে দান করতে চান।
রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দানের এসব টাকা গোনা হয়। সোমবার বিকেল ৫টা থেকে বাকি সাতটি দানবাক্স খোলা হবে। আগের দিনের মতো একই ৩০ জন লোক টাকা গোনার কাজ করবেন। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পুরো প্রক্রিয়া সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দানের পরিমাণ তাদের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। বিদেশ থেকেও দান এসেছে। এত টাকা নিরাপদে রাখতে আলাদা ঘর করতে হবে।
সেখানে থাকবে সিসিটিভি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা। প্রয়োজনে আরও লোক নেওয়া হতে পারে টাকা গণনার জন্য। ব্যাংকের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। দানের টাকায় ব্যাংকের ৫টি অ্যাকাউন্টও লিমিট ক্রস করেছে। এখন নতুন করে অ্যাকাউন্ট করতে হবে।
হুমায়ুন ঘোষণা করেছিলেন, ৬ ডিসেম্বর তিনি মুর্শিদাবাদে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল তার সঙ্গে দূরত্ব রাখতে শুরু করে।
কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন নিয়ে সভা করেন। হুমায়ুন সেখানে গেলে সেদিনই জানানো হয় তিনি বরখাস্ত হয়েছেন।
ক্ষুব্ধ হুমায়ুন সভাস্থল ছাড়েন এবং জানান, ২২ ডিসেম্বর নতুন দল করবেন। তিনি বলেন, বেলডাঙায় মসজিদ তিনি বানিয়েই ছাড়বেন। তার নতুন দল রাজ্যের আসন্ন নির্বাচনে ১৩৫ আসনে লড়বে। তিনি আসাদউদ্দিন ওয়াইসির মিমের সঙ্গে জোট গড়তে পারেন।