লেবাননের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন ভুলে সৌদি আরবকে, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লার সাথে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন গোষ্ঠীটির প্রধান নাইম কাসেম। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবকে অতীতের বিরোধ ভুলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন কাসেম। এ সময় রিয়াদের সাথে সম্পর্ক ভালো করার প্রস্তাবও দেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ২০১৬ সালে সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলো শিয়া হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিয়াদ, ওয়াশিংটন এবং লেবাননের অভ্যন্তরে হিজবুল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে যোগ দিয়ে লেবাননের সরকারকে চাপ দিচ্ছে এই গোষ্ঠীটিকে নিরস্ত্র করার জন্য।
শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে কাসেম বলেন, আঞ্চলিক শক্তিগুলোর উচিত হিজবুল্লাহ নয়, বরং ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে দেখা। এ সময় রিয়াদের সাথে সম্পর্ক সংস্কারের প্রস্তাব দেন তিনি।
কাসেম আরও বলেন, আমরা আপনাকে আশ্বস্ত করছি যে, হিজবুল্লাহ অস্ত্রগুলো লেবানন, সৌদি আরব বা বিশ্বের অন্য কোনো স্থান বা সত্তার দিকে নয়, বরং ইসরাইলি শত্রুর দিকে তাক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা যাতে ইসরাইলের মুখোমুখি হতে পারি এবং তাকে দমন করতে পারি। হিজবুল্লাহর উপর চাপ প্রয়োগ করলে তা ইসরাইলের জন্য লাভজনক হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধের পর সৌদি আরব একসময় লেবাননে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তহবিল জমা করেছিল এবং দক্ষিণাঞ্চল পুনর্গঠনে সহায়তা করেছিল - কিন্তু ইরানের সহায়তায় এই গোষ্ঠীটি লেবানন এবং অঞ্চলে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
২০২১ সালে সুন্নি সৌদি আরব লেবাননের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজস্ব রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়। লেবাননের আমদানিও নিষিদ্ধ করে। এরপর সম্পর্কে তীব্র অবনতি ঘটে। সেই সময় সৌদি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, হিজবুল্লাহ লেবাননের রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করত।
এদিকে, হিজবুল্লাহর তৎকালীন মহাসচিব হাসান নাসরুল্লাহ ইয়েমেনে সৌদি আরবের ভূমিকার বারবার সমালোচনা করেছিলেন।
কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অঞ্চলে ভয়াবহ রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখা গেছে, গত বছর ইসরাইল হিজবুল্লাহকে আক্রমণ করে নাসরুল্লাহকে হত্যা করে এবং ডিসেম্বরে বিদ্রোহীরা গ্রুপটির সিরিয়ান মিত্র বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করে।