পর্যটক বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারতসহ বিশ্বের ৪০টি দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করেছে। এর মধ্যদিয়ে এসব দেশের নাগরিকদের জন্য শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ আরও সহজ হবে মনে করা হচ্ছে।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধানের লক্ষ্যে সম্প্রতি পর্যটন উন্নয়নে বাড়তি নজর দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এর অংশ হিসেবে দেশের পর্যটন স্থানগুলো উন্নয়নের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটির সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বিশ্বের ৪০টি দেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করা হলো।
ট্রাভেল অ্যান্ড লেইজার এশিয়ার এক প্রতিবেদন মতে, গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার সরকার ভিসা ফি মওকুফ বিষয়ক সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ এই পদক্ষেপের কথা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের কিছু আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। তবে তিনি মনে করেন, বেশি পর্যটক এলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।
এর আগে ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও জাপান- এই সাত দেশের জন্য ভিসা ফি মওকুফ সুবিধা চালু ছিল। ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে এই সাত দেশের নাগরিকদের জন্য বিনামূল্যে ৩০ দিনের পর্যটন ভিসা প্রদান করছে।
প্রাথমিকভাবে ছয় মাসের পাইলট প্রোগ্রামটি পরে সম্প্রসারিত করা হয়। ওই কর্মসূচি আরও বাড়ানো হল। তালিকায় যুক্ত হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়া, ইরান ও পাকিস্তানসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ।
এখন যারা দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে থেকে শ্রীলঙ্কায় ভ্রমণে যায়, তাদের ৫০-৬০ ডলার পর্যন্ত ভিসা ফি দিতে হয়। নতুন নিয়ম চালু হলে এই খরচের আর প্রয়োজন হবে না।
শ্রীলঙ্কা সরকার চলতি বছর দেশটিতে ৩০ লাখ পর্যটকের আগমন নিশ্চিত করে ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের পরিকল্পনা করেছে। গত বছর দেশটিতে ভ্রমণ করেছিল প্রায় ২০ লাখ ৫০ হাজার পর্যটক এবং সেখান থেকে আয় হয়েছিল প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করা বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যায় ভারত প্রথম স্থানে রয়েছে। তালিকায় এর পরই রয়েছে যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া।
গত মার্চে বিদেশি পর্যটক আকৃষ্ট করতে শ্রীলঙ্কা নতুন প্রচারণা শুরু করে। সেই প্রচারে বিভিন্ন দেশের ১২ জন ভ্রমণ ভ্লগারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের দিয়ে শ্রীলঙ্কা নিজেদের বিভিন্ন ভ্রমণ স্থানের কথা বিশ্বের সামনে তুলে ধরে।
রিপোর্ট মতে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় ১৩ লাখ পর্যটক ভ্রমণ করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই সংখ্যা ৪ শতাংশ বেশি। তবে জুলাই মাসে ক্যানডির বিখ্যাত এসালা পেরাহেরা উৎসব থাকলেও পর্যটকের সংখ্যা আশানুরূপ হয়নি। দেশটি আশা করেছিল, এই উৎসব উপলক্ষে ২ লাখ ৭৭ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করবে। তবে পর্যটক এসেছিল মাত্র ১ লাখ ৪৫ হাজার।