কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে গিয়ে ওরা আজ পরিযায়ী। জীবন-জীবিকার সন্ধানে পশ্চিমবঙ্গে থেকে কেউ মহারাষ্ট্র, কেউ উত্তরপ্রদেশ, কেউ হরিয়ানায় কর্মরত। ভিন রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ীদের একাংশকে হেনস্তার অভিযোগ বারবার সামনে আসছে। বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাদেশে পুশব্যাকের অভিযোগও এসেছে। এই আবহে ফের পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের ভিন রাজ্যে আটক করা হয়।
বাংলাভাষী বনাম বাংলাদেশি বিতর্কের মধ্যেই এবার বাংলাদেশি সন্দেহে হরিয়ানায় আটক করা হয় নদিয়ার ৩০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে। পরিবারের অভিযোগ, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড, আধার কার্ড দেখানো সত্ত্বেও মেলেনি রেহাই। তেহট্ট, পলাশিপাড়া ও নাকাশিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখার মতো গুরুতর অভিযোগ আগেই উঠেছিল হরিয়ানা সরকারের বিরুদ্ধে। ওইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের নাগরিকত্বের নথি চেয়ে হরিয়ানা থেকে রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী পোস্ট করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর এমন ‘অত্যাচার’ বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। লাগাতার এনিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার সেই চাপের মুখেই এবার কার্যত নতি স্বীকার করল হরিয়ানা সরকার। সেখানকার ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে থাকা ৩০ জন, যাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়া হয়েছিল, তাদের এবার মুক্তি দেয়া হল। তারা গুরুগ্রাম থেকে শিগগিরই নিজেদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন বলে খবর।
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই লাগাতার বিরোধিতা নিয়ে কড়া জবাব দিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি। শনিবার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে তার পাল্টা বক্তব্য, হরিয়ানা কিংবা দেশের কোথাও অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই নেই। দেশের সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। অথচ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে ‘ভুল’ রাজনৈতিক প্রচার করছেন বলে অভিযোগ সাইনির। তবে সোশাল মিডিয়ায় যতই যুক্তি দেখান হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, বিষয়টি স্পষ্ট তার সরকারের পদক্ষেপে। ইতিমধ্যে ধাপে ধাপে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। গত দু’দিনে হরিয়ানা থেকে মালদহের চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরেছেন মোট ১৫ জন। এবার মুক্তি পাওয়া বাকি শ্রমিকরাও ফিরবেন শিগগিরই। উৎস: মানবজমিন।