শিরোনাম
◈ গাজীপুরে আসন বাড়বে, কমবে বাগেরহাটে: ইসি ◈ জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেল সড়ক, দুর্ভোগে ২০ হাজার বাসিন্দা ◈ রামগতির সাথে বয়ারচরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, জোয়ারের তোড়ে ব্রিজের মাটিতে ধ্বস ◈ ৫ ডি‌সেম্বর ২০২৬ সা‌লের ফুটবল বিশ্বকা‌পের ড্র ◈ কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাকৃবিতে অনুষদীয় গেটে তালা দিলো শিক্ষার্থীরা ◈ উরুগু‌য়ে‌কে হা‌রি‌য়ে নারী কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল ◈ সাপ ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু ◈ ৫ আগস্ট ঘিরে নিরাপত্তা হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ নিউইয়র্ক বন্দুক হামলা: হামলাকারীর চিরকুটে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য ◈ ২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় ২ কেটি ৬৪ লাখ টাকা

প্রকাশিত : ০৮ জুলাই, ২০২৫, ০১:১৩ দুপুর
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হিমাচলে ভূমিধসের আগেই কুকুরের কান্না, প্রাণে বাঁচল ৬৭ জন গ্রামবাসী!

ভূমিধসের পর মান্ডির সিয়াথি গ্রামের অবস্থা। ছবি: এনডিটিভি

ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের হিমাচল প্রদেশে একের পর এক ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এরই মধ্যে প্রদেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে প্রদেশটির মান্ডি জেলায় একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটেছে। জেলার একটি গ্রামে কুকুর সময়মতো ডাকতে—বলা ভালো কান্না—শুরু করায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন ২০টি পরিবারের ৬৭ জন মানুষ।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গত ৩০ জুন মধ্যরাত থেকে রাত ১টার মধ্যে মান্ডির ধরমপুর এলাকার সিয়াথি গ্রাম পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের কারণে।

সিয়াথি গ্রামের বাসিন্দা নরেন্দ্র বলেন, ‘আমার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ঘুমিয়ে থাকা কুকুরটি হঠাৎ জোরে ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে শুরু করে, এরপর শুরু হয় কান্নার মতো শব্দ। বাইরে তখন প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। কুকুরের ডাকে ঘুম ভেঙে যায় আমার। কাছে যেতেই দেখি দেয়ালে বড় ফাটল ধরেছে, আর বাড়ির ভেতর পানি ঢুকছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে কুকুরটিকে নিয়ে নিচে নেমে আসি এবং আশপাশের সবাইকে জাগিয়ে তুলি।’

নরেন্দ্র এরপর দ্রুত গ্রামে ছুটে গিয়ে অন্যদের জাগিয়ে দেন এবং নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বলেন। এমন বৃষ্টি হচ্ছিল যে, কেউই কিছু সঙ্গে নিতে পারেনি, সরাসরি আশ্রয়ের জন্য দৌড় দেয় সবাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামটিতে ভূমিধস শুরু হয় এবং প্রায় এক ডজন বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। এখন পুরো গ্রামে মাত্র চার-পাঁচটি বাড়িই চোখে পড়ে, বাকি সবই চাপা পড়ে আছে ভূমিধসের নিচে।

বেঁচে যাওয়া মানুষজন গত সাত দিন ধরে ত্রিয়াম্বালা গ্রামের নৈনা দেবী মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে, এই ভয়াবহ ঘটনার কারণে অনেক গ্রামবাসী উচ্চ রক্তচাপ ও মানসিক চাপে ভুগছেন। দুর্যোগের পর আশপাশের গ্রামের মানুষজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিচ্ছে।

রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হিমাচল প্রদেশে এ বছরের বর্ষা শুরু হয়েছে ২০ জুন। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যে অন্তত ৭৮ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা ও মেঘভাঙা বৃষ্টির মতো বৃষ্টিজনিত ঘটনায় মারা গেছেন, আর ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায়।

অতিবৃষ্টিতে রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩টি আকস্মিক বন্যা, ১৯টি মেঘভাঙা বৃষ্টি (ক্লাউডবার্স্ট) এবং ১৬টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা মান্ডি, যেখানে মেঘভাঙা বৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে। মান্ডির ১৫৬টি সহ সব মিলিয়ে মোট ২৮০টি রাস্তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল সোমবার হিমাচলের ১০টি জেলায় আকস্মিক বন্যার সতর্কতা জারি করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়