শিরোনাম
◈ মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি ফজর আলীসহ আরও ৪জন গ্রেপ্তার (ভিডিও) ◈ কেএমপি কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল খুলনা, প্রেস সচিবকে ঘিরে আন্দোলনকারীদের অবস্থান ◈ বিষাক্ত কীটনাশক বন্ধে প্রয়োজনে রাস্তায় নামবো: উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ◈ টাঙ্গাইল যৌনপল্লীতে অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই ◈ কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা হরগবিন্দ বিশ্বাস গ্রেপ্তার ◈ শিগগিরই হতে পারে রোডম্যাপ ঘোষণা, প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি ◈ চট্টগ্রামে সরবরাহ বাড়লেও স্বস্তি মেলেনি সবজির বাজারে, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম ◈ মধুপুরের জঙ্গলে গভীর রাতে ঘোড়ার মাংস প্রক্রিয়াকরণ, একজন আটক ◈ শিক্ষা কর্মকর্তার অবহেলায় সুবর্ণচরে ৫৪টি বিদ্যালয়ের বরাদ্দ ফেরত ◈  শেরপুরে ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে নবজাতক কন্যা শিশু চুরির ঘটনায় তোলপাড় 

প্রকাশিত : ২৬ জুন, ২০২৫, ১১:৫০ দুপুর
আপডেট : ২৮ জুন, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে ৪ কারণে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ফের শুরু হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি ইসরায়েল-ইরানের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত আপাতত থামিয়েছে। তবে এই যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ফাটল দেখা দিতে শুরু করেছে। দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালায়। এতে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন বিজ্ঞানী ও জেনারেল নিহত হন। জবাবে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। পরে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়। এরপরই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে।

ইসরায়েল-ইরানের এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বড় ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে, যেখানে বিশ্বশক্তিরাও জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ধরনের নতুন সংঘাত পারস্য উপসাগর দিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে। এতে আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে লেবানন, সিরিয়ার মতো পার্শ্ববর্তী দেশগুলো। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেরও বড় ধরনের সামরিক ভূমিকার দিকে ঠেলে দিতে পারে এই পরিস্থিতি।

তবে এত কিছুর পর যখন যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েই গেছে, তখনো বিশ্লেষকেরা মনে করছেন ইরান-ইসরায়েল সংঘাত যেকোনো সময় আবার নতুন করে শুরু হতে পারে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজ উইকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোটা দাগে চারটি কারণে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন করে শুরু হতে পারে যেকোনো সময়।

১. ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো

ইসরায়েলি বিমান হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের বাংকার-ধ্বংসকারী বোমা হামলায় ইরানের সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গেলেও পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি।

অনেক সেন্ট্রিফিউজ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এখনো ভূগর্ভে সক্রিয়। এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান পরিদর্শকদের প্রবেশ আরও সীমিত করেছে এবং চুক্তির সীমা ছাড়িয়ে ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে বলে আশঙ্কা আছে। এতে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইসরায়েলের কাছে ইরানের চলমান পারমাণবিক হুমকি এবং আইএইএর সঙ্গে ইরানের সহযোগিতা কমে যাওয়াকে সামনে রেখে, পরবর্তী হামলার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচির গতি বাড়ায়, নতুন সংঘাত যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।

২. টানাপোড়েনে যুদ্ধবিরতি

উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ইসরায়েল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় পাল্টা বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ট্রাম্প। তিনি দুই পক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যে যুদ্ধবিরতির সময়ের কাছাকাছি ইরান একটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলের বীর শেবা শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে হামলা চালায়। এতে অন্তত চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। ইরান দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর আগেই তারা ওই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল। একই সময়ে ইরানের উত্তরাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ড্রোন শনাক্ত করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।

৩. বাড়ছে গোপন গোয়েন্দা অভিযান

ইরান দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার (মোসাদ) সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ইরান বলছে, এটি ইসরায়েলের বড় ধরনের গুপ্তচর নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলার ঘটনা। এর আগে ইসরায়েলকে দায়ী করে ইরানে ড্রোন হামলা, গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ও সামরিক ও পরমাণুবিজ্ঞানীদের হাইপ্রোফাইল হত্যা বাড়তে দেখা গেছে। ইরান ইতিমধ্যেই কয়েকজন গুপ্তচরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে এবং কড়া প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। দুই পক্ষের এই গোপন অভিযান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।

৪. কথার লড়াই

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাম্প্রতিক অভিযানকে ‘ঐতিহাসিক জয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘ইরান যদি আবার পারমাণবিক কর্মসূচি পুনরুজ্জীবিত করতে চায়, আমরা একইভাবে কঠোর ও শক্তিশালী জবাব দেব।’ অন্যদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানও এটিকে ‘বড় বিজয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জায়োনিস্ট আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে।’ এ ধরনের কঠোর বক্তব্য দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের কোনো আশার জায়গা তৈরি হচ্ছে না।

সব মিলিয়ে এই যুদ্ধবিরতি আপাতত স্বস্তি দিলেও এটি যে খুব বেশি স্থায়ী হবে, সে আশা খুবই কম। ইরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি এখনো সচল। একই সঙ্গে ইসরায়েলের গোপন অভিযান চলতে পারে। দুই দেশের নেতারাও বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি পারমাণবিক সীমা ও উসকানিমূলক পদক্ষেপ কমানোর মতো কার্যকর চুক্তি করাতে না পারে, তাহলে এই নড়বড়ে শান্তি যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। সূত্র: আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়