শিরোনাম
◈ শহীদদের রক্তের অমর্যাদা হয় এমন নির্বাচন চায় না জামায়াত ◈ টিউলিপ সিদ্দিকের ড. ইউনূসকে চিঠি: বৈঠক করতে চান লন্ডনে ◈ ফিরতি ঈদ যাত্রায় মাস্ক পরার আহ্বান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ◈ চামড়া নিয়ে এবারও হতাশা, দাম ওঠেনি হাজারও ◈ বেনাপোলে বোমা হামলায় বিএনপি কর্মী হত্যা, আহত ৩ ◈ বেনাপোলে পলাতক থাকা আ,লীগ কর্মীদের বাড়ি ফেরা, কথাকাটাকাটিতে বিএনপি কর্মী খুন! ◈ অভিবাসী ধরতে আইসিই অভিযানে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, সংঘর্ষ-গ্রেপ্তার বাড়ছে; ট্রাম্প মোতায়েন করলেন ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড ◈ ইলন মাস্কের সাথে সম্পর্ক শেষ, বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ এক কেজি চিনি ৫০০০ টাকা, আলু ১৫০০ টাকা! গাজ়ায় আকাশছোঁয়া দামের নেপথ্যে ইসরায়েল না হামাস? ◈ মারা গে‌ছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী

প্রকাশিত : ০৮ জুন, ২০২৫, ০৭:৫৩ সকাল
আপডেট : ০৮ জুন, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গাজা শিশুদের অনাহারে রাখার পেছনে আমেরিকা জড়িত

মানবাধিকার সংস্থাগুলো আমেরিকান কোম্পানি কর্তৃক গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে মানবিক সাহায্য বিতরণের প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছে এবং এই অঞ্চলে সামাজিক অস্থিরতার জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলি সরকারের বিপজ্জনক প্রকল্পের দিকে ইঙ্গিত করেছে।

পার্সটুডে অনুসারে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা  আনরোয়া গাজার সব বাসিন্দাদের কাছে জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরাপদে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজও গাজার বাসিন্দাদের কাছে সাহায্য বিতরণের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইহুদিবাদী সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত "গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন"-এর তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন যে এই ফাউন্ডেশনটি অপমানজনকভাবে সাহায্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। আলবানিজ আরো বলেছেন,  "অল্প পরিমাণে সাহায্য গাজায় পৌঁছেছে মার্কিন সহায়তায় গাজা ফাউন্ডেশন শিশুদের ক্ষুধার্ত রাখার চেষ্টা করছে। আনরোয়া যে পরিষেবা প্রদান করে তা গাজার বাসিন্দাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে।"

একই সময়ে ইউরো-ভূমধ্যসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্র এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে যে গাজায় অপরাধী দলগুলোকে অস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে ইসরাইলি গণমাধ্যম যা প্রকাশ করেছে তা জোর দিয়ে বলে যে সশস্ত্র ব্যক্তিরা অনাহার চালাচ্ছে। এই অপরাধীরা সাহায্যের চালান লুট করে, এসব ত্রাণ বিতরণে নাশকতা সৃষ্টি করছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালাচ্ছে। ইসরাইল গাজাকে অনাহারে রেখে সন্তুষ্ট নয় বরং গাজার সামাজিক ও নাগরিক কাঠামো ভেঙে ফেলার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।

মানবাধিকার কেন্দ্র জোর দিয়ে বলেছে যে মানুষকে অনাহারে রাখা একটি যুদ্ধাপরাধ, এবং যদি এটি ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে হয় তবে এটি গণহত্যা হিসাবে বিবেচিত হবে। নেতানিয়াহুর দাবি যে এই অপরাধীদের অস্ত্র দেওয়া সৈন্যদের জীবন বাঁচায় তা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের সাথে সাংঘর্ষিক।

ইউরো-ভূমধ্যসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্র জোর দিয়ে বলেছে: ইসরাইল সাহায্য পরিচালনার জন্য একটি ভুয়া কোম্পানি তৈরি করেছে এবং গণহত্যার হাতিয়ার হিসেবে অনাহার ব্যবহার করছে। দেশগুলোকে গাজার অবরোধ ভেঙে ফেলতে হবে, সশস্ত্র দলগুলোকে নিরস্ত্র করতে হবে এবং অবাধ সাহায্য চাইতে হবে। অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহার ব্যবহারের বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত।

দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় বিশেষ গোষ্ঠীগুলিকে সশস্ত্র করার ক্ষেত্রে নেতানিয়াহুর ভূমিকা

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিশ্চিত করেছেন যে তিনি গাজা উপত্যকায় যেসব গোষ্ঠীকে হামাসের বিরোধী বলে দাবি করেন তাদের তিনি অস্ত্র দিচ্ছেন।

সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরাইলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের পর এই নিশ্চিতকরণ এসেছে যে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সশস্ত্র করার অনুমোদন দিয়েছেন।

একই সময়ে,বেশ কয়েকজন ইসরাইলি রাজনীতিবিদ নেতানিয়াহুকে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিপন্ন করার অভিযোগ করেছেন।

নেসেটে (ইসরায়েলি সংসদ) ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইয়ার গোলান সামাজিক নেটওয়ার্ক "এক্স"-এ লিখেছেন: "নেতানিয়াহু ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কোনও চুক্তিতে পৌঁছানোর,জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার এবং ইসরাইলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিবর্তে তিনি একটি নতুন টাইম বোমা তৈরি করেছেন।"

ইহুদিবাদী সরকারের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধী গোষ্ঠীগুলিকে হামাস সতর্ক করেছে

ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস একটি সরকারী বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে: "গাজা উপত্যকায় নেতানিয়াহুর কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ইসরাইল বেইতেনু দলের নেতা আভিগদার লিবারম্যানের সাম্প্রতিক বক্তব্য একটি তিক্ত এবং বিপজ্জনক সত্য প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে। এটি এমন একটি সত্য যে দখলদার সরকারের সেনাবাহিনী সরাসরি গাজা উপত্যকায় অপরাধী গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিচ্ছে যার লক্ষ্য সামাজিক ও নিরাপত্তা অস্থিতিশীলতা তৈরি করা এবং মানবিক সাহায্য চুরি করার জন্য সরকারের পরিকল্পিত প্রকল্পগুলোর পথ প্রশস্ত করা।"

আল-আকসা টিভির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, হামাস আরও বলেছে,  "এই সরকারি স্বীকারোক্তি প্রমাণ করে যে  ত্রাণ লুটপাট এবং মানবিক সংকট তৈরিতে দখলদার সরকারের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধী গোষ্ঠী এবং শত্রু সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা রয়েছে যা আমাদের অবরুদ্ধ জনগণের দুর্ভোগ দ্বিগুণ করেছে।"

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, দখলদার সেনাবাহিনী বোমা হামলা এবং গণহত্যা চালিয়েই থেমে থাকে না বরং এই ভাড়াটে গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে সরাসরি চুরি ও অনাহার কর্মসূচি সংগঠিত করছে।

এই কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য জনগণের ইচ্ছা ভঙ্গ করা এবং প্রতিরোধের পরিবেশকে প্রভাবিত করা। হামাস এই গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে সতর্ক করে ঘোষণা করেছে যে এই বিশ্বাসঘাতক দলগুলো যাদের পেশা চুরি এবং শত্রুর সাথে সহযোগিতা তারা ইহুদিবাদী সরকারের সরাসরি নিরাপত্তা তত্ত্বাবধানে কাজ করে এবং তারা আমাদের জাতির প্রকৃত শত্রু হিসাবে বিবেচিত হয়। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ বাহিনী এবং দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলো  তাদের গতিবিধির প্রতি কঠোর নজর রাখছে এবং তাদেরকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়