যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্ট ইলন মাস্ক ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যখন চরমে, তখন এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যঙ্গাত্মক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাস্কের রূপান্তরিত কন্যা ভিভিয়ান উইলসন। এক ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে তিনি হেসে বলেন, ‘আমি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’ তবে ভিডিওর ক্যাপশনে যোগ করেন, ‘সত্য প্রমাণিত হতে দেখলে দারুণ লাগে!’
ভিভিয়ান উইলসনের এই প্রতিক্রিয়াকে অনেকেই সরাসরি ট্রাম্প-মাস্ক সংঘাতের প্রতি একটি কটাক্ষ হিসেবে দেখছেন। মাস্কপুত্রী অতীতে তার পিতার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি নাম পরিবর্তন করে জীববৈজ্ঞানিক পিতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন। ২০২০ সাল থেকেই তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই।
ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি ইলন মাস্ক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাজেট বিলকে ‘অতিরিক্ত ব্যয়বহুল’ ও ‘ঘৃণ্য বিকৃতি’ বলে আখ্যা দেন। তিনি দাবি করেন, ‘আমার সহায়তা ছাড়া ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে হেরে যেতেন।’ যদিও এই মন্তব্য পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুছে ফেলেন।
এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও কড়া জবাব দেন। মাস্ককে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সে পাগল হয়ে গেছে। অতিমাত্রায় ড্রাগ ব্যবহার করায় এমন প্রলাপ বকছে।’
এই পরিস্থিতিতে ভিভিয়ানের ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে আলোড়ন তোলে, যা দ্বন্দ্বের ব্যক্তিগত দিকটিকে সামনে নিয়ে আসে।
পারিবারিক টানাপড়েন ও রাজনৈতিক নাটক
ইলন মাস্ক নিজেকে বহুদিন ধরেই ‘স্বাধীনচেতা’ বললেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকান ঘরানার নীতির প্রতি তার ঝোঁক দেখা গেছে। অন্যদিকে, তার কন্যা ভিভিয়ান নিজেকে প্রগতিশীল মূল্যবোধের ধারক হিসেবে প্রকাশ করেছেন। ফলে, পারিবারিক মতপার্থক্য এখন রাজনৈতিক মতভেদেও রূপ নিচ্ছে।
ভিভিয়ানের ভিডিও প্রকাশের পর থেকেই এক পক্ষ তাকে ‘সাহসী’ হিসেবে প্রশংসা করছে, অন্যপক্ষ বলছে—এই মন্তব্য পারিবারিক সমস্যাকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে।
ট্রাম্প ও মাস্কের দ্বন্দ্ব এখন কেবল নীতিগত বা রাজনৈতিক নয়—এটি গড়িয়েছে পারিবারিক পরিসরে। ভিভিয়ানের প্রতিক্রিয়া তাতে যেন এক নতুন মাত্রা যোগ করল। প্রযুক্তি, রাজনীতি ও পরিবার—এই তিনটি স্তরে একসঙ্গে আলোড়ন সৃষ্টি করে চলছে এই বহুমাত্রিক সংঘাত। সূত্র: জিও নিউজ