পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা সংলগ্ন ব্যারাকপুর এলাকার বাসুদেবপুর থেকে গত সোমবার সন্দেহভাজন অবৈধ বাংলাদেশি সন্দেহে আটক দুই আওয়ামী লীগ নেতা ও এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনা বুধবার (৪ জুন) আচমকা সামনে আসে।
এ দিন সন্ধ্যায় পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটক তিনজনের মধ্যে একজন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম জুয়েল, দ্বিতীয়জন আওয়ামী লীগ নেতা ও মঠবাড়িয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান এবং তৃতীয়জন পলাতক পুলিশ সুপার হাসান আরাফাত আবিদ।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার সূত্রে জানা গেছে, ভাটপাড়া পৌরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের জগদ্দল থানার অন্তর্গত বাসুদেবপুর মোড় এলাকায় একটি বাড়ি থেকে ৩ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। গত পাঁচ মাস ধরে তিতাস মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ওই তিনজন অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে অভিযান চালায় জগদ্দল থানার পুলিশ। এরপর তাদের তিনজনকেই আটক করে জগদ্দল থানায় নিয়ে আসা হয়। এরপর দফায় দফায় চলে জিজ্ঞাসাবাদ। যদিও ওই তিন বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে ভারতে অবস্থানের প্রয়োজনীয় নথি (বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা) থাকায় বিকালে তাদের তিনজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তারা হলেন আশারফুর রহমান, জুয়েল ও আবিদ। এই ঘটনায় এলাকায় সাময়িক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে তিতাস মণ্ডলের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসাবে অবস্থান করা অনিরুদ্ধ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি জানান, যে তিনজনকে আটক করা হয় তারা তিতাস মণ্ডলের পূর্ব পরিচিত।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ আরো জানায়, ‘পুলিশ এসে তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাদের নথি যাচাই-বাছাই করার জন্য তাদের তিনজনকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার দাবি এই তিন বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ভিসা সহ বৈধ নথি নিয়ে ভারতে এসেছে। তারা কেউই পলায়ন করে এদেশে আসেনি। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণেই প্রাণ বাঁচাতে তারা ভারতে চলে আসে বলেও দাবি করেন ওই ব্যক্তি। শুধু তাই নয় ওই তিন বাংলাদেশি নাগরিক কলকাতায় এসে চিকিৎসা করিয়েছেন বলেও সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন অনিরুদ্ধ বিশ্বাস।
তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে অপরিচিত কিছু ব্যক্তি এসে তিতাস মণ্ডলের বাড়িতে এসে থাকতেন, আবার চলেও যেতেন। দুদিন আগে ওই বাড়িতে কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিকের আনাগোনার খবর পেয়ে সেখানে যান ভাটপাড়া পৌরসভার তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর অরুণ ব্রহ্ম।
এ ব্যাপারে স্থানীয় কাউন্সিলর জানান, কয়েকদিন আগেই এরকম একটি খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম, কিন্তু তাদের সকলের কাছেই বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা ছিল। কিন্তু নতুন করে যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে তাদের বিষয়টি আমার জানা নেই। পুলিশের সাথে আমার কথা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে তাদের কাছ থেকে পাওয়া পাসপোর্ট এবং ভিসা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
যদিও ওই বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করা প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস নামে এক মহিলা জানা, ‘গত ২৬ মে ওই বাড়িতে কাজে যোগ দেয়ার পর সেখানে চারজন ব্যক্তিকে দেখে আসছি। তারা মাঝে মধ্যে বাইরে যেত, বাজার ঘাটও করত। কিন্তু তারা কোথাকার বাসিন্দা সেটা আমার জানা নেই।’ উৎস: চ্যানেল২৪