শিরোনাম
◈ কোরবানির মৌসুমে ঢাকামুখী দুই হাজার দিনাজপুরের কসাই, জনপ্রতি লক্ষাধিক টাকার আয় লক্ষ্যমাত্রা ◈ ন্যায়বিচার ও ভোটের সমতল মাঠ চায় জাতি: জামায়াত আমির ◈ জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে দেশের মঙ্গল কামনায় দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ◈ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বায়তুল মোকাররমে বিশেষ মোনাজাত ◈ ঈদের আগের দিন সড়কে প্রাণ গেল ২০ জনের ◈ প্রধান উপদেষ্টাকে নরেন্দ্র মোদির ঈদ শুভেচ্ছা ◈ আজ দেশে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা: প্রস্তুত ঈদগাহ ও মসজিদ, নিরাপত্তা জোরদার ◈ ঈদের দিন যেমন থাকবে আবহাওয়া ◈ ২০২৬ সালের এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচন: ড. ইউনূসের ঘোষণা ও ইইউর প্রতিক্রিয়া ◈ ঈদ উদযাপনে জাতীয় নির্বাচনের আমেজ, নেতারা ছুটছেন নিজ এলাকায়

প্রকাশিত : ০৫ জুন, ২০২৫, ০১:১২ রাত
আপডেট : ০৬ জুন, ২০২৫, ১১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সৌদি আরবে হজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন: ভাষার সীমা পেরিয়ে হৃদয়ের সংযোগে এআই প্রযুক্তি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাগম এবং এক অনন্য যোগাযোগের পরীক্ষাস্থল পবিত্র হজ। প্রতিবছর ১৮০টির বেশি দেশ থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ পুণ্যভূমি সৌদি আরবে একত্র হন ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ হজ পালন করতে। বিভিন্ন ভাষা, উপভাষা ও সংস্কৃতি থেকে আসা এসব মানুষের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ নিশ্চিত করা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ।

তবে এবার এই চিত্রে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশটি ‘হজে যোগাযোগের নিয়মই বদলে দিচ্ছে’। আর এর কেন্দ্রে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইভিত্তিক অনুবাদ প্রযুক্তি।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হজের সবচেয়ে আবেগঘন ও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত—আরাফার খুতবা এবার সরাসরি অনুবাদ করা হয়েছে ৩৫টি ভাষায়। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কোটি কোটি মানুষ এবং ময়দানে উপস্থিত প্রত্যেক হাজি নিজ নিজ মাতৃভাষায় শুনতে পেরেছেন ঐক্য, করুণা ও ইমানের বার্তা।

সাধারণত এত ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ অসম্ভবই মনে হয়। তবে এবার সৌদি সরকারের তত্ত্বাবধানে ‘দুই পবিত্র মসজিদের সার্বিক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ’র আওতায় পরিচালিত এআই প্রযুক্তি এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে। সৌদির ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, ‘অনুবাদ এখন কেবল প্রযুক্তিগত একটি ফিচার নয়, এটি আধ্যাত্মিক সেতুবন্ধন।’

‘স্মার্ট হজ’ ও ‘ইন দেয়ার ল্যাঙ্গুয়েজেস’ নামে চালু হওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় প্রতিটি ধাপে হাজিদের জন্য বহুভাষিক সহায়তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

নুসুক অ্যাপ: এআইভিত্তিক পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে এটি তাৎক্ষণিকভাবে কথোপকথনের অনুবাদ করে। ফলে হাজিরা সাহায্য চাইতে, নিয়মকানুন বুঝতে এবং সাহায্যকারী বা ভলান্টিয়ার দলের সঙ্গে যোগাযোগে সক্ষম হন।

মানারা রোবট: এটি ১১টি ভাষায় ধর্মীয় দিকনির্দেশনাসহ প্রাসঙ্গিক ও সংবেদনশীল উত্তর দেয়।

মাঠপর্যায়ে এআই ডিভাইস: মাঠে থাকা টিমগুলো এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা ভাষা ও ছবি—উভয়ই বুঝে হাজিদের নিজ ভাষায় নির্ভুল যোগাযোগ নিশ্চিত করে।

মসজিদুল হারামে হাজিদের জন্য বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত কোরআনের কপি বিতরণ করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা পবিত্র বাণী নিজেদের ভাষায় বুঝে নিতে পারেন। এ ছাড়া হজ মৌসুমে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা ও ভিড় ব্যবস্থাপনায়ও এআই অনুবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনেক ক্ষেত্রে এটি প্রাণ বাঁচানোর মাধ্যমও হয়ে উঠেছে।

সৌদি সরকার বলছে, বাস্তব সময়ে অনুবাদকে হজ অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে রেখে তারা একটি বৈশ্বিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, যেখানে প্রযুক্তি ইমানকে পরিপূরক করে তোলে, প্রতিস্থাপন নয়। যেখানে আগে যোগাযোগ ছিল একটি লজিস্টিক সমস্যা, এখন তা আত্মিক সংযোগের একটি সুযোগ। ভাষা পেরিয়ে আজ হৃদয়ও সংযুক্ত হচ্ছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়