এএনআই/দি প্রিন্ট প্রতিবেদন: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভারতীয় এই কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলে সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নিচ্ছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান তুলে ধরার জন্য প্রতিটি দলের একজন করে নেতা নিয়োগ করা হয়েছে। যেমন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর এমন একটি প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে আমেরিকা, সিউল ও কাতার সফর করবেন। এই তালিকায় ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যের নাম রয়েছে।
ভারতীয় মিডিয়া এএনআই ও দি প্রিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এধরনের অন্ততট সাতটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলের বিভিন্ন দেশে সফরের লক্ষ্য হচ্ছে সন্ত্রাসবাদের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ধরা। বিশ্ব মঞ্চে সন্ত্রাসবাদের প্রতি ভারতের শূন্য-সহনশীলতার নীতি তুলে ধরবেন তারা। প্রতিটি কূটনৈতিক প্রতিনিধি দলে রাখা হয়ে ৮ থেকে ৯ জন রাজনৈতিক নেতা। প্রতিটি দলের জন্য একজন নেতা নিয়োগ করা হয়েছে যারা বিশ্ব স্তরে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এ প্রতিনিধিদলগুলোর তালিকা প্রকাশ করে বলেন, তাদের কাজ হবে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া “এক মিশন। এক বার্তা। এক ভারত”। ভারতের রাজনৈতিকদলগুলো যে ঐক্যবদ্ধ তা তুলে ধরতে সব রাজনৈতিক দল থেকে নেতাদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিরেন বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সম্মিলিত সংকল্পের প্রতিফলন ঘটিয়ে অপারেশন সিন্দুরের অধীনে সাতটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো সফর শুরু করবে।
ভারতীয় জনতা পার্টির সংসদ সদস্য বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বে গ্রুপ -১ সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন এবং আলজেরিয়া সফর করবে। আরও তিনজন বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে, ফাংনন কোনিয়াক, রেখা শর্মা এই গ্রুপে থাকছেন। এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ, মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য সতনাম সিং সান্ধু এবং প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ শ্রিংলাও এই গ্রুপে রয়েছেন।
বিজেপির রবি শঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে গ্রুপ -২ যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ডেনমার্ক এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলিতে যাবে। বিজেপির দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী এবং শমীক ভট্টাচার্য, শিবসেনা (ইউবিটি) এর প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য গুলাম আলী খাতানা, কংগ্রেসের অমর সিং, প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর এই দলে থাকবেন।
গ্রুপ ৩-এর নেতৃত্বে রয়েছেন জনতা দল (ইউনাইটেড) এর জাতীয় কার্যকরী সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝা। নয় সদস্যের এই দলটি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, জাপান এবং সিঙ্গাপুর সফর করবে। বিজেপির অপরাজিতা সারঙ্গি, ব্রিজ লাল, প্রদত্ত বড়ুয়া, হেমাঙ্গ যোশী, তৃণমূল কংগ্রেসের ইউসুফ পাঠান, সিপিআই(এম) এর জন ব্রিটাস, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সালমান খুরশিদ এবং মোহন কুমার এই দলে থাকবেন।
গ্রুপ ৪-এর নেতৃত্বে থাকবেন শিবসেনা সাংসদ শ্রীকান্ত একনাথ শিন্ডে, যিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত, লাইবেরিয়া, কঙ্গো এবং সিয়েরা লিওন সফর করবেন। অন্যান্যের মধ্যে এ গ্রুপে রয়েছে বিজেপির বাঁশুরি স্বরাজ, অতুল গর্গ, মনন কুমার মিশ্র, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ বশির, বিজেডির সস্মিত পাত্র এবং সুজন চিনয় সহ বিরোধী দলের সদস্যরা।
গ্রুপ ৫-এর নেতৃত্বে রয়েছেন কংগ্রেসের শশী থারুর, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পানামা, গায়ানা, ব্রাজিল এবং কলম্বিয়া যাবেন। বিজেপির শশাঙ্ক মণি ত্রিপাঠী, ভুবনেশ্বর কলিতা এবং তেজস্বী সূর্য, এলজেপি (রাম বিলাস) এর শাম্ভবী চৌধুরী, টিডিপির জিএম হরিশ বালযোগী, শিবসেনার মিলিন্দ দেওরা, জেএমএমের সরফরাজ আহমেদ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত তারানজিৎ সিং সান্ধুও যাবেন।
ডিএমকে সংসদ সদস্য কানিমোঝি করুণানিধির নেতৃত্বে গ্রুপ- ৬, ইউরোপীয় দেশগুলির দ্বিতীয় গ্রুপে যাবেন, যেমন স্পেন, গ্রীস, স্লোভেনিয়া, লাটভিয়া এবং রাশিয়া। সমাজবাদী পার্টির রাজীব রাই, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মিয়াঁ আলতাফ আহমেদ, বিজেপির ব্রিজেশ চৌতা, আরজেডির প্রেম চাঁদ গুপ্তা, আপের অশোক কুমার মিত্তলের সাথে থাকবেন মঞ্জীব এস পুরি এবং জাভেদ আশরাফ।
এনসিপি (এসসিপি) সংসদ সদস্য সুপ্রিয়া সুলের নেতৃত্বে গ্রুপ-৭ মিশর, কাতার, ইথিওপিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করবেন। বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডি, অনুরাগ সিং ঠাকুর, ভি মুরলীধরন, কংগ্রেসের মনীশ তেওয়ারি, আনন্দ শর্মা, টিডিপির লাভু শ্রী কৃষ্ণ দেবরায়ালু, আপের বিক্রমজিৎ সিং সাহনি এবং জাতিসংঘে ভারতের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি সৈয়দ আকবরউদ্দিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শূন্য-সহনশীলতার নীতি তুলে ধরবেন।