কয়েক মাস ধরে দর কষাকষির পর অবশেষে ইউক্রেনের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদকে যৌথভাবে কাজে লাগাতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই চুক্তির আওতায় উভয় দেশ মিলে একটি পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠন করবে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্ট বলেন, এই চুক্তি প্রমাণ করে দুই দেশই ইউক্রেনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিয়েভের কাছে এই চুক্তি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পাওয়ার পথ সুগম করার মাধ্যম হিসেবেই গুরুত্বপূর্ণ।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রতিরক্ষা খাত ও ভারী শিল্প অবকাঠামোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গ্রাফাইট, টাইটানিয়াম ও লিথিয়ামের মতো বিরল খনিজ পদার্থের বিশাল মজুদ রয়েছে ইউক্রেনে। পুরো বিশ্বে যে পরিমাণ এসব পদার্থ আছে, তার একটি বড় অংশই ইউক্রেনে আছে।
এই চুক্তিটি এমন এক সময়ে হলো যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। এদিকে, বর্তমান বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ বিরল খনিজ পদার্থ রয়েছে চীনের দখলে।
গতকাল বুধবার বিকালে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ এক বিবৃতিতে জানায়, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সরঞ্জাম সহায়তা দিয়েছে, এই পুনর্গঠন বিনিয়োগ তহবিল গঠনের মাধ্যমে তা স্বীকৃতি পাচ্ছে।
এক ভিডিও বার্তায় স্কট বেস্যান্ট বলেন, এই চুক্তি ‘ইউক্রেনের প্রবৃদ্ধিতে সম্পদ উন্মোচনে’ সহায়তা করবে। ট্রাম্প প্রশাসনের সাধারণ ভাষার তুলনায় ঘোষণাপত্রের ভাষায় ইউক্রেনের প্রতি অনেক বেশি সংহতি প্রদর্শন করা হয়েছে। এতে ‘রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
পাশাপাশি, আরও বলা হয়েছে, ‘এই যুদ্ধে যেসব দেশ বা ব্যক্তি রাশিয়াকে অর্থায়ন বা অস্ত্র সরবরাহ করেছে, তারা ইউক্রেন পুনর্গঠনের কোনো সুবিধা পাবে না।’
ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কো গতকাল বুধবার চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ওয়াশিংটনে যান। চুক্তি স্বাক্ষরের পর তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের এক (পূর্বের টুইটার) পোস্টে লেখেন, এই তহবিল ‘আমাদের দেশে বৈশ্বিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করবে।’
চুক্তির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি জানান, চুক্তিতে খনিজ, তেল ও গ্যাস খাতের প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে সম্পদের মালিকানা ইউক্রেনেরই থাকবে।