আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রথমবারের মতো সরাসরি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে এবিসি নিউজের আয়োজনে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। হোয়াইট হাউস জয়ের দৌড়ে কতটা প্রভাবিত করতে পারে এই বিতর্ক, সে তথ্য বিশ্লেষণ করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।
বিতর্কের শুরুতেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে করমর্দন করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এরপর পরবর্তী ৯০ মিনিট ট্রাম্পকে পরাস্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন কমলা। মামলায় ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়া, করোনা মহামারী মোকাবিলায় ব্যর্থতা, নারীদের গর্ভপাতের অধিকার খর্ব করার চেষ্টার মতো বিষয়গুলোর সমালোচনা করেন কমলা। এমনকি বিশ্বনেতারা ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না এবং সামরিক নেতারা ট্রম্পকে ‘অসম্মানজনক’ মনে করেন বলে মন্তব্য করেন কমলা।
অপরদিকে মিথ্যা দাবি, ভুল তথ্য এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে কমলা হ্যারিসের সমালোচনার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কে বারবার ট্রাম্প অভিবাসন ইস্যুতে কথা বলেছেন। কারণ এটি ডেমোক্র্যাট তথা কমলা হ্যারিসের জন্য দুর্বলতা। সীমান্ত সংকটের জন্য কমলার দলকে সরাসরি দায়ী করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম সম্মুখ বিতর্কে কমলার জন্য একটি সুযোগ ছিল ভোটারদের জন্য নিজেকে মেলে ধরা, নিজের নির্বাচনী নীতিমালা সম্পর্ক জানানো। এই সপ্তাহান্তে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের জরিপে দেখা গেছে, সম্ভাব্য ভোটারদের ২৮ শতাংশ মনে করেন কমলা হ্যারিস সম্পর্কে আরও জানা দরকার। কিন্তু সুযোগ পেয়েও কমলা জাতীয় টেলিভিশনের দর্শকদের কাছে খুব একটা বিশদ বিবরণ দিতে পারেননি।
বিতর্কে সবচেয়ে উত্তেজনার মুহূর্তের মধ্যে ছিল, গর্ভপাত ইস্যু। ট্রাম্পের সমালোচনা করে কমলা বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চয়ই একজন নারীর নিজের শরীরের সঙ্গে কী করতে হবে তা ঠিক করে দেবেন না।’ এ সময় উপস্থাপক গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান সুস্পষ্ট করার আহ্বান জানান। ট্রাম্প বলেন, ‘নারীদের গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি নিষ্পত্তির অধিকার অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবেন তিনি। যদিও কিছু কিছু অঙ্গরাজ্য জন্মের পর নবজাতককে মৃত্যুদণ্ডের অনুমতি দেয়।’ এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থাপক বলেন, ‘আমাদের দেশে এমন কোনো অঙ্গরাজ্য নেই, যেখানে জন্মের পর শিশুকে হত্যা করা বৈধ।’
এক কথায় বলতে গেলে বিতর্কে কমলা হ্যারিস বেশির ভাগ সময় স্পষ্ট বার্তা দিতে চেষ্টা করেছেন। তবে ট্রাম্প প্রতিক্রিয়া বা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় কমলার সঙ্গে চোখাচোখি সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে গেছেন। তাঁকে রাগান্বিত এবং আত্মরক্ষামূলক মনে হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অন্যতম ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্য। নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, তার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে পেনসিলভানিয়ার। আর সেখানেই ট্রাম্প–কমলার বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হলো, যা উভয় প্রার্থীর প্রচারের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে বিতর্ক শেষে সাংবাদিকদের ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন এটি তাঁর ‘সেরা বিতর্ক’ ছিল। আর কমলার প্রচার শিবিরের পক্ষ থেকে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলা হয়েছে, তিনি দ্বিতীয় বিতর্কের জন্য প্রস্তুত।
আপনার মতামত লিখুন :