পাকিস্তানের করাচির চিড়িয়াখানায় প্রায় চার দশক ধরে প্রদর্শিত হচ্ছে এক অদ্ভুত চরিত্র—অর্ধেক মানুষ, অর্ধেক শেয়াল। দর্শকদের কাছে তিনি পরিচিত “মমতাজ বেগম” নামে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই চরিত্রটি করাচি চিড়িয়াখানার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত হলেও, সম্প্রতি জানা গেছে—এটি আসলে অভিনয়, বাস্তবে কোনো রহস্যময় প্রাণী নয়।
জানা গেছে, “মমতাজ বেগম” নামে যাকে সবাই চিনে, তাঁর আসল নাম মুরাদ আলি। পেশাগতভাবে তিনি একজন পারফর্মার। তাঁর আগে এই চরিত্রে অভিনয় করতেন তাঁর বাবা। বাবার মৃত্যুর পর গত ১৬ বছর ধরে মুরাদ প্রতিদিন টানা ১২ ঘণ্টা ধরে এই চরিত্রে অভিনয় করছেন।
চিড়িয়াখানার দর্শনার্থীদের চোখে মমতাজ বেগম এক রহস্যময় প্রাণী—শরীরের নিচের অংশ শেয়ালের, আর উপরের অংশ মানুষের। তাঁকে দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমে চিড়িয়াখানায়। দর্শকদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে একটি খাঁচা, যেখানে মাথায় ঘোমটা পরা “মমতাজ” শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক দর্শকদের সঙ্গে কথা বলেন। টিকিটের দাম রাখা হয়েছে মাত্র ১০ রুপি।
তবে আসল রহস্য ফাঁস হয়েছে সম্প্রতি। জানা গেছে, এটি আসলে একটি দক্ষ মঞ্চ কৌশল। কাঠের বেদির উপরে রাখা শেয়ালের দেহের মডেলটির সঙ্গে নিচে লুকানো কক্ষের মধ্যে শুয়ে থাকা মুরাদ আলির মাথা মিলিয়ে তৈরি করা হয় এই বিভ্রম। দর্শকদের চোখে যেন কোনো পার্থক্য ধরা না পড়ে, সে জন্য মাথার চারপাশে ঘোমটা দিয়ে ঢাকা থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে এই প্রদর্শনী করাচির অন্যতম জনপ্রিয় আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। তবে এখন অনেকেই জানতে পেরে বিস্মিত যে, ‘শেয়াল-মানুষ’ আসলে একজন নিবেদিতপ্রাণ শিল্পীর অভিনয়—আর কোনো অতিপ্রাকৃত রহস্য নয়।
সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ