স্পোর্টস ডেস্ক : ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মৌসুম পার করে পিএসজিকে এনে দিয়েছেন বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। হয়তো এই শিরোপা-ই ব্যালন ডি’অর জেতার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে ফরাসি উইঙ্গার উসমান ডেম্বেলেকে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে প্যারিসের ঐতিহাসিক থিয়েটার দু শাতেলে জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যালন ডি’অরের ৬৯তম আসর। ২৮ বছর বয়সী দেম্বেলের হাতে ট্রফি তুলে দেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনিয়ো।
অনেকে সন্দেহ করেছিলেন—আসলে কি সেই অদ্ভুত প্রতিভাধর ফরাসি ফুটবলার বার্সেলোনা তাকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিল, তার উচ্চতায় পৌঁছাতে পারবেন? ২০১৭ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ১৩৫.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে বার্সায় যোগ দেওয়ার সময় তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামী খেলোয়াড় হয়ে উঠেছিলেন। -- যমুনানিউজ
তবে চোট, অনিয়মিত পারফরম্যান্স ও মানসিকতার প্রশ্নে ভরা এক ঝড়ো যাত্রার পর, অবশেষে ২৮ বছর বয়সে সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলো। বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ করে দেম্বেলে জিতলেন ব্যালন ডি’অর।
প্যারিসে পুরস্কার হাতে নিয়ে পরিবারের ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দেম্বেলে—এ যেন তার ক্যারিয়ারের সব উত্থান-পতনের প্রতিচ্ছবি।
অসাধারণ ২০২৪-২৫ মৌসুমে দেম্বেলে প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে একসঙ্গে তিনটি শিরোপা জিততে সাহায্য করেন—লীগ ওয়ান, কুপ দে ফ্রান্স এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ। এরপর ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালেও পৌঁছে যায় দলটি।
সেই মৌসুমে তিনি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৫ গোল এবং ১৪টি অ্যাসিস্ট করেন। মৌসুমের শুরুর দিকে নীরব থাকলেও বছরের শুরু থেকে তিনি ইউরোপের সবচেয়ে ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ডে পরিণত হন।
তাঁর এই অর্জনকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি পেছনে ফেলেছেন লিভারপুলের মোহাম্মদ সালাহকে (যিনি গত মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল-অবদান রেখেছিলেন), রিয়াল মাদ্রিদের কিলিয়ান এমবাপ্পেকে (যিনি করেছিলেন আরও বেশি গোল) এবং বার্সেলোনার লামিন ইয়ামাল ও রাফিনহার ঝলমলে পারফরম্যান্সকেও।
ডেম্বেলের রূপান্তরের শুরু আসলে বার্সেলোনাতেই হয়েছিল, কয়েক বছর আগে, যখন তিনি নতুনভাবে বিষয়গুলো দেখা শুরু করেন। তবে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর তার তারকা হওয়ার স্বপ্ন আরও বড় আকার নেয়।
ফরাসি ক্লাব থেকে এমবাপ্পের বিদায় এবং রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়াই দেম্বেলের জন্য যেন পাজলের শেষ টুকরো হয়ে দাঁড়ায়। তখনই কোচ লুইস এনরিকে তাকে বলেন, ‘এখন আমরা তোমার কাছ থেকে গোল চাই, আমরা চাই তুমি কিছুটা স্বার্থপর হও।
কোচিং স্টাফও বারবার বলে যেতেন: ‘ব্যালন ডি’অর, ব্যালন ডি’অর, ব্যালন ডি’অর। সবার আস্থার যথার্থ প্রমাণ দিয়ে ব্যালন ডি’অর’এর রাত নিজের করে নিলেন উসমান!