মনিরুল ইসলাম : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গড়ে উঠা জাতীয় ঐক্য সমুন্নত রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম রাজনৈতিক দল গণফোরামের প্রয়াত সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যে গণফোরামের ইমিরেটারস সভাপতি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘ জুলাই-আগস্ট ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে।দেশ গড়ার কাছে তারুণ্যের এই শক্তিকে যেমন কাজে লাগাতে হবে তেমনি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা জাতীয় ঐক্য যাতে বিনষ্ট না হয় সেদিকে সকলকে সর্তক থাকতে হবে। জাতীয় ঐক্যকে সমুন্নত রাখতে হবে।”
সংস্কার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা প্রবীন এই আইনজ্ঞ বলেন, ‘‘ গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের যে আকাংখা জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তা উপেক্ষা করারও সুযোগ নেই। সেই লক্ষ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দক্ষতার সাথে বিষয়গুলো সমাধানের জন্য জরুরী পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।
গণতন্ত্রমনা মোস্তফা মোহসীন মন্টুর বৈষ্যমহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তার কর্মকান্ডের কথাও স্মরণ করেন ড. কামাল হোসেন। গণফোরামের উদ্যোগে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে এই শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১৫ জুন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোস্তফা মোহসীন মন্টু। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি চার মেয়ে, এক ছেলে রেখে গেছেন। মোস্তফা মোহসীন মন্টু মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা জেলা গেরিলা বাহিনীর প্রধান ছিলেন। তিনি ঢাকা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
‘মন্টু মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে ছিলেন আপোষহীন’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রয়াত মোস্তাফা মোহসীন মন্টুর ফ্যাসীবাদ বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘‘ তার দুইটি বিষয় আমার আজকে সবচেয়ে মনে পড়ে সেটা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপোষহীন।’’
‘‘ তার এভাবে চলে যাওয়া আমরা যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছি তাদের জন্য বেদনার। তবে মন্টু যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের জন্য অনেক কিছু শেথার আছে। মন্টুর আত্মা শান্তি পাবে যদি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসে।”
ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘনিষ্ট বন্ধু মোস্তফা মোহসীন মন্টুর গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে তার ভুমিকার কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
শোকসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি নুরুল শরীফ আম্বিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির(সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের(বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সভাপতি ডা. ফৌজিয়া মোসলেম, গণফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট এস.এম. আলতাফ হোসেন, সিনিয়র এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল দিদারুল আলম,ভাসানী জনশক্তি পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল কাদের আলমাস, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, সুরাইয়া বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।