শিরোনাম
◈ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হাজার কোটি ডলারের গোপন আঁতাত কারা টিকিয়ে রেখেছে ◈ তুরিন আফরোজের ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া: আপিল বিভাগে তথ্য-প্রমাণ দাখিল ◈ ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি করেনি: ড. খলিলুর রহমান ◈ ‌‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরিতে সবাইকে একটু ছাড় দিতে হবে’ ◈ জোবাইদা রহমান বিএনপির নেতৃত্বে আসবেন, নাকি ফিরবেন পুরনো চিকিৎসা পেশায়? ◈ গোপনে পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে, ভিসা লঙ্ঘনে চাকরি গেল ভারতীয় জওয়ানের! ◈ ৮০০ ডলারের নিচের পণ্যে শুল্ক বসাল ট্রাম্প, চাপে তেমু-শেয়েন, বিপাকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজার ◈ "নির্বাচনে ব্যবহার না হলেও দেড় লাখ ইভিএমের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, হস্তান্তর প্রক্রিয়াও ঝুলে আছে" ◈ এবার পা‌কিস্তা‌নে আই‌পিএল সম্প্রচার নি‌ষিদ্ধ ◈ ইং‌লিশ লি‌গে হে‌রেই গে‌লো আর্সেনাল

প্রকাশিত : ০৩ মে, ২০২৫, ০৯:২৯ রাত
আপডেট : ০৪ মে, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে একাট্টা হচ্ছে দলগুলো

মহসিন কবির: গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পালানোর পর দেশে ছাত্র লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার জোর দাবি উঠছে। 

এদিকে আওয়াম লীগ আবারও দেশের রাজনীতিতে ফের ফিরে আসার চেস্টা করে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়ে মিছিলও করছেন। এছাড়া ফেসবুকে রাজনীতিতে ফেরার বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে নিষিদ্ধের দাবি বেশি জোরালো হচ্ছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নামে কেউ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। সেই আওয়াজ আমরা ওঠাচ্ছি। আমরা তাদের এই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে সখিপুর থানা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে মিছিল ও পোস্টার লাগানো হয়েছে। সংগঠনটির ঝটিকা মিছিলের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরদিন ভেদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পাল্টা মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় অভিযানে নেমেছে পুলিশ। 

জুলাই অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে, সেজন্য দলটিকে শুধু নিষিদ্ধ নয়, নিশ্চিহ্ন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। 

জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ১৪শ’র বেশি মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।   ফলে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে অবস্থান করছেন। একইসঙ্গে গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে দলটির প্রথম সারির বেশিরভাগ নেতা দেশ-বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে পালাতে না পেরে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দী।  

আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কারের আগে এই দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে চলমান সমাবেশে এই ঘোষণা দিয়েছেন দলটির নেতারা।

এনসিপির নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টালবাহানা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হবে, এই সিদ্ধান্ত জনগণ গত বছরের ৫ আগস্টই দিয়েছে। এরপরও কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে জুলাই যোদ্ধারা তাদের প্রতিহত করবে।

ভিডিওবার্তায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও আওয়ামী লীগের ব্যানারে সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, যা দুঃখজনক।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা কিংবা তাদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। অথচ আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এবং দলটির আইনি জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি।’

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘আমার ভাই আবরার, আবু সাঈদের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ আসবে না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে সবচেয়ে বড় সংস্কার। এখানে যদি, কিন্তু, আচ্ছা, দেখি নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।'

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে থাকতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা বলতে আরও সময় লাগবে। এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। সময়ই বলে দেবে, সময়ই আমাদের গাইড করবে। সময়ই বলবে, আমরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ’

বিষয়টি নির্বাচন কমিশন সময়ের ওপর ছেড়ে দিলেও বিএনপি সিদ্ধান্তের ভার দিয়েছে জনগণের ওপর।  

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, দল নিষিদ্ধে সরকারের একটা ক্ষমতা আছে। সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। যেদিন নিষিদ্ধ ওদিন বলেছিলাম যে অভিযোগে নিষিদ্ধ করা যায় সেটা প্রমাণ করা খুব কঠিন। দল নিষিদ্ধ করতে হলে, রাষ্ট্র-সার্বভৌমত্ব বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সেটা প্রমাণ করতে হবে। এটা জামাতে ইসলামীকে করলো। কিনতু করার কয়েকদিনের মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে গেলো এবং সরকারের পতন হয়ে গেলো। এটা হলো একটা প্রেক্ষাপট।  

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম রাজনৈতিক দল নিয়ে বলেন,  রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হবে কি হবে না  এটা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে দলগত ভাবে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে সেই দল বা সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়ার সুযোগ আমাদের আইনে আছে। সে ক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করা বা অভিযোগ নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। সেটা ভবিষ্যতে করা হবে কিনা আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে অভিযোগ তথ্য প্রমাণাদি বিদ্যমান আছে। প্রয়োজন হলে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। বাট এটার পেছনে রাষ্ট্রের একটা সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যায় আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত এবং প্রধান উপদেষ্টার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেই এ বক্তব্য প্রত্যাখানের দাবিতে হল থেকে রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে একদল শিক্ষার্থী।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করাই প্রথম সংস্কার বলে জানিয়েছে ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, এনডিএম।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চায় না বিএনপি— এই কথাটা বলল কে? একটা সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার করে আওয়ামী লীগকে ১০-২০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করলেই তো হয়। এনটিভিকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক মন্ত্রী, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা আব্বাস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়