আশিক নূরী : [১] সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকার। তিনি রবীন্দ্রযুগের খ্যাতনামা ‘ছন্দোরাজ’ কবি। তাঁর কবিতায় ছন্দের কারুকাজ, শব্দ ও ভাষা যথোপযুক্ত ব্যবহারের কৃতিত্বের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে ‘ছন্দের যাদুকর’ নামে আখ্যায়িত করেন। মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৌরাণিক প্রভৃতি বুদ্ধি-বৃত্তিবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্তের অধিকারী।
[২] সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১৮৮২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিকটবর্তী নিমতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং মাতা মহামায়া দেবী। সত্যেন্দ্রনাথ কলকাতার সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স (১৮৯৯) এবং জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন (বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে এফএ (১৯০১) পাস করেন। [৩] কাব্যচর্চায় আত্মনিয়োগ করার আগে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পিতার ব্যবসায় যোগ দিয়েছিলেন। তিনি আরবি-ফার্সি, চীনা, জাপানি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষার বহু কবিতা অনুবাদ করে বাংলাসাহিত্যের বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধি সাধন করেছেন। মেথরদের মতো অস্পৃশ্য ও অবহেলিত সাধারণ মানুষদের নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন। তিনি একাধিক ছদ্মনামে কবিতা চর্চা করতেন। ‘ছন্দের যাদুকর’ এই কবি মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ জুন প্রয়াত হন। [৪] সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে- কাব্যগ্রন্থ : ‘সবিতা (১৯০০)’, ‘সন্ধিক্ষণ (১৯০৫)’, ‘বেণু ও বীণা (১৯০৬)’, ‘হোমশিখা (১৯০৭)’, ‘ফুলের ফসল (১৯১১)’ ও ‘বিদায় আরতি (১৯২৪)’ ইত্যাদি।