শিরোনাম
◈ উত্তপ্ত পরিস্থিতি, ঘরবাড়ি ভাঙচুর, ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আহত ২ শতাধিক (ভিডিও) ◈ বাণিজ্য ঘিরে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে বাংলাদেশ-ভারত! ◈ যে কারণে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬ নেতাকর্মীর পদত্যাগ ◈ ব্লকেডে আটকা নগর ভবন, পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভে ইশরাক সমর্থকরা ◈ নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো আমাদের জন্য: মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ◈ পা‌কিস্তা‌নের স‌ঙ্গে খেলা এড়া‌তে এশিয়া কাপ থে‌কে স‌রে দাঁড়া‌লো ভারত ◈ নুসরাত ফারিয়া গ্রেপ্তারকৃত মামলায় রয়েছে যেসব তারকার নাম! (ভিডিও) ◈ রিয়াল মাদ্রিদের জয়, হে‌রে গে‌লো বা‌র্সেলোনা  ◈ অনেক দেশ কেন বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ করেছে? (ভিডিও) ◈ নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ, জামিন শুনানি ২২ মে

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট, ২০২৩, ০৩:০৭ দুপুর
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২৩, ১১:০১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সর্বজনীন পেনশন স্কিমের টাকা পাওয়া কি সহজ হবে?- কর্তৃপক্ষ কী বলছে

ইকবাল খান: [২] বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবার পর এনিয়ে মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ যেমন দেখা যাচ্ছে, একইসাথে এটা কতটা কার্যকর এবং ঝামেলামুক্ত হবে সেই প্রশ্নও করছেন অনেকে। পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববার পর্যন্ত এই স্কিমে অন্তর্ভূক্তির জন্য আবেদন পড়েছে ৪০ হাজার। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

[৩] নিয়মানুযায়ী কারও বয়স ১৮ বছর থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হলে অনলাইনে এই স্কিমে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। সুবিধাভোগীর বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি হওয়ার পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

[৪] ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সীরা ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দেয়া সাপেক্ষে এই সুবিধা পেতে পারেন।

[৫] তবে কোটি কোটি মানুষের নামে পৃথক হিসাব খোলা, সেটি স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করা হবে কিনা, ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কিস্তি দিয়ে কোন ঝামেলা ছাড়াই পেনশন পাওয়া যাবে কি না সেই সংশয়ে আছেন অনেক গ্রাহক।

[৬] নতুন পেনশন স্কিমে সেই দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তি হয় কিনা, সেই চিন্তায় আছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা জাহানারা বেগম। এ কারণে, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও এখনো নিজের নামে স্কিমটি চালু করার সাহস করছেন না তিনি। তিনি বলেন, “এক সময় দেখা যাবে কোটি কোটি লোক স্কিম খুলছে। আমি আজকে স্কিম খুললে মিনিমাম দশ বছর পরে পেনশন পাবো। বাংলাদেশের কোন সরকারি অফিসে গেলে তো ভোগান্তি হয়ই, টাকার পয়সার বিষয় হলে আরও হবে। তখন দেখা যাবে পেনশনের জন্য সরকারি অফিসে ছুটতে ছুটতে, টাকা দিতে দিতে আমার আসল টাকাটাই থাকছে না।”

[৭] তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ভোগান্তি যাতে না হয় সেই ব্যবস্থা তারা করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বিবিসি বাংলাকে বলেন, পেনশন পেতে দীর্ঘসূত্রিতা বা হয়রানির কোন সুযোগ নেই, কারণ সব গ্রাহকদের থেকে কিস্তি সংগ্রহ এবং পেনশন দেয়ার সম্পূর্ণ লেনদেন অনলাইনে সম্পন্ন হবে। সেটাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।

[৮] গোলাম মোস্তফা আরও জানান, “পেনশনের আর্থিক লেনদেন সব কিছুই হবে অনলাইনে। গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আমাদের কাছে আছে, তার অ্যাকাউন্টটি পেনশন দেয়ার উপযুক্ত হলে সেই অ্যাকাউন্টে পেনশনের টাকা অটোমেটিক চলে যাবে। কোন ব্যক্তির সাথে কথা বলা লাগবে না। ”

[৯] জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে গ্রাহক তার ইউনিক পেনশন আইডি দিয়ে প্রবেশ করে বছর শেষে মুনাফাসহ জমা হওয়া টাকার পরিমাণ জানতে পারবেন। এছাড়া পেনশন তহবিলে সুবিধাভোগীদের যে অর্থ জমা হবে, সেখান থেকে কোন অর্থ সরানো হবে না, এমনকি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের যাবতীয় পরিচালন ব্যয় সরকারের আলাদা বরাদ্দ থেকে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
 
[১০] অর্থ বিভাগের আওতায় জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ নামে আলাদা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এ সর্বজনীন পেনশন স্কিমটি পরিচালিত হচ্ছে।

[১১] এই স্কিমটি মূলত প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকুরীজীবী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং স্বল্প আয়ের বিশাল জনগোষ্ঠীকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে চালু করেছে সরকার।

[১২] আগ্রহীরা অনলাইনে নিবন্ধন করলেই পেনশন স্কিমে চালু করতে পারবেন, এজন্য কোন সরকারি অফিসে কাগজপত্র জমা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। শুধু অনলাইনে নিবন্ধন করে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মাসিক টাকা জমা দিলেই হবে।
 
[১৩] তবে সুবিধাভোগীরা কিস্তি বাবদ যে অর্থ দেবে সেটার তহবিল ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, কীভাবে এবং কোথায় পেনশন তহবিল বিনিয়োগ হবে, লভ্যাংশ কীভাবে বণ্টন করা হবে, সেগুলো নিয়ে অস্পষ্টতার মধ্যে থাকার কথা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

[১৪] এ বিষয়ে আলাদা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিধিমালা তৈরির কথা জানিয়েছেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে, এই তহবিল সরকারি বন্ড বা ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগের কথা রয়েছে। যেসব বিনিয়োগে ঝুঁকি কম সেদিকেই যাবো। যদি ফান্ড আরও বড় হয় তাহলে উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হতে পারে। এটা সময়ের পরিক্রমায় হবে। এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিমালা তৈরি হচ্ছে, সেই মোতাবেক সব হবে।”

[১৫] অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, বিনিয়োগগুলো এমন জায়গায় করতে হবে যেখানে ঝুঁকি কম কিন্তু ভালো রিটার্ন আসবে। এক্ষেত্রে পুঁজি-বাজারে কোন অবস্থাতেই বিনিয়োগ করা যাবে না। তারচেয়ে বন্ডে বিনিয়োগ অনেকটাই নিরাপদ। এতে নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্নের টাকা পাওয়া যাবে, যা দিয়ে মানুষের পেনশন পরিশোধ করা যাবে।

[১৬] জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সরকারই জমা টাকার গ্যারান্টর। সরকার নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় এখানে অর্থ বুঝে পেতে কোন সমস্যা হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

[১৭] আর্থিক লেনদেনে সরকারের এই নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রচারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরির ওপর জোর দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি জানান, সরকার আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে পেনশনটি কবে, কি পরিমাণে দেয়া হবে, অর্থাৎ ফিক্সড রেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের কোন ঝুঁকি নেই। এ নিয়ে আরও স্পষ্ট তথ্য প্রচার হওয়া প্রয়োজন।

[১৮] নতুন এই পেনশন স্কিমে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংককে লেনদেনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে গ্রাহকরা যেন নিজ নিজ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে অর্থনীতিবিদ খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়