এল আর বাদল : রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরানোর জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ফের একবার প্রস্তাব গৃহীত হল রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায়। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার তৃতীয় কমিটিতে যৌথ ভাবে প্রস্তাবটি পেশ করে দুই আন্তর্জাতিক জোট— ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং অর্গানাইজ়েশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছরই রোহিঙ্গা সংক্রান্ত প্রস্তাব যৌথ ভাবে পেশ করে আসছে ইইউ এবং ওআইসি।
মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের পর থেকে রাখাইন প্রদেশে বসবাসকারী মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি ক্রমশ শোচনীয় হয়ে উঠেছে। প্রচুর রোহিঙ্গা প্রাণভয়ে মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশ এবং অন্য নিকটবর্তী দেশগুলিতে পালিয়ে যাচ্ছেন। রয়টার্স অনুসারে, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন।
তবে বাংলাদেশের ওই শরণার্থী শিবিরগুলি ক্রমশ বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠছে বলে দাবি করা হয়েছে রয়টার্সের ওই সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে।
এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের বাংলাদেশি প্রতিনিধদল। তবে একই সঙ্গে গত আট বছর ধরে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না-হওয়া নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছে তারা। ঢাকার প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপুঞ্জে জানিয়েছে, ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার বোঝা আর বইতে পারছে না বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের তাই মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য দ্রুত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে তারা।
প্রস্তাবটি রাষ্ট্রপুঞ্জে গৃহীত হওয়ার পরে ইতিমধ্যে একটি বিবৃতি দিয়েছে ইইউ। মায়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপীয় গোষ্ঠী। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই পরিস্থিতির মাঝেই সেখানে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্তে সামরিক বাহিনীর উদ্দেশ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। ইইউ বিবৃতিতে জানিয়েছে, মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায় সে দেশে ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা খুবই কম।
এ অবস্থায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মায়ানমারে নিরাপদে ফেরত পাঠানোর জন্য নতুন করে আন্তর্জাতিক স্তরে উদ্যোগ বৃদ্ধি করার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রস্তাবে। বুধবার গৃহীত হওয়া ওই প্রস্তাবটিতে ১০৫টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে।