আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সেনাবাহিনী কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে সহায়তা করে না এবং নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে এখনও কোনো সরকারি নির্দেশনা পায়নি। সম্মেলনে গোপালগঞ্জ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়েও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান:
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, "আমরা এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি।" নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা এলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
গোপালগঞ্জ ঘটনা ও রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা:
রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, "আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে কখনো সহায়তা করিনি এবং আমাদের কাছে সব দলই সমান।" গোপালগঞ্জের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের জীবননাশের হুমকি থাকায় জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যেই সেনাবাহিনী সহায়তা করেছিল। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, আত্মরক্ষার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলপ্রয়োগ করলেও কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি:
পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতার অভিযোগ অস্বীকার করে আইএসপিআর পরিচালক বলেন, "এই ধারণা সঠিক নয়। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে ভালোভাবে সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে।" তিনি জানান, মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৫,৫৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ক্যাম্প গুটিয়ে আনা হলেও অভিযানের প্রয়োজনে অস্থায়ী অপারেশনাল বেস (TOB) স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর অভিযানিক দক্ষতায় কোনো প্রভাব ফেলছে না।
আইন-শৃঙ্খলা ও অভিযানিক ক্ষমতা:
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অপরাধীকে গ্রেপ্তারের পর বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করা হয়। তিনি দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরও কার্যকর হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।